রাজধানীতে সঞ্চালন লাইনে কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিহত ও আহত বিদ্যুৎকর্মীদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) ওই ঘটনায় আহত এক বিদ্যুৎকর্মীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে দেখতে গিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান এই ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি বলেন, মানুষের মৃত্যুর কোনো ক্ষতিপূরণ হয় না। কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিহত ও আহতদের পরিবার ও তাদের ওপর নির্ভরশীলদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।
বৃহস্পতিবার বাংলা স্কুপ-এ
'বিদ্যুৎকর্মীর মৃত্যুর দায় কার?' শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশের পরদিনই এই ঘোষণা দিলেন বিদ্যুৎ উপদেষ্টা। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে নিহতের পরিবারকে ৫ লাখ, গুরুতর আহতকে ২ লাখ ও আহতকে এক লাখ টাকা অর্থসহায়তার নির্দেশনা দেন। আহতদের চিকিৎসার সকল খরচ সরকার বহন করবে বলে তিনি জানান।
এদিকে, ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নির্দেশে বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রাতেই ডিপিডিসির এইচআর দপ্তরের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার নূর কামরুন নাহার স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি অফিস আদেশে দায়িত্ব অবহেলার দায়ে অভিযুক্ত দুইজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
মানিকনগর ডিভিশনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সেলিম সিরাজকে (স্মারক নং ২৭.৮৭.০০০০.৪০৫.২৭.০২৩.২০.৫৭২) নির্বাহী পরিচালক (প্রশাসন) দপ্তরে আর ডিপিডিসির মানিকনগর কন্ট্রোলরুমের দায়িত্বে থাকা কমপ্লেইন সুপারভাইজার (সিএস) মো. আলী আজম খানকে (স্মারক নং ২৭.৮৭.০০০০.৪০৫.২৭.০২৩.২০.৫৭১) জিএম (এইচ আর) দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ফাওজুল কবির খান বলেন, দুর্ঘটনা নয়, এটি সম্পূর্ণ অবহেলা ও দায়িত্বহীনতা। বিদ্যুৎ উপদেষ্টা বলেন, লাইনে কাজ করা অবস্থায় কেন লাইন চালু করা হলো, এ ব্যাপারে দায়িত্বশীল প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর দায় ডিপিডিসি ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এড়াতে পারে না। এই অবহেলার জন্য একজন মানুষ মারা গেছেন এবং দুজন মানুষ গুরুতর আহত হয়েছেন।
উপদেষ্টা আহতদের সুচিকিৎসার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টার নির্দেশ দেন। আহতদের জন্য কেবিন দেওয়ার নির্দেশনাও দেন তিনি। এছাড়াও ডিপিডিসির পক্ষ থেকে হাসপাতালে সার্বক্ষণিক লোক নিয়োগের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
বিদ্যুৎ উপদেষ্টা নিহত এবং আহতদের স্বজনদের সাথে কথা বলেন এবং তাদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান। এ সময় তাদেরকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এর আগে বিদ্যুৎ উপদেষ্টা মানিকনগরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং কেন এ দুর্ঘটনা ঘটলো তার কারণ দ্রুত উদঘাটনের জন্য নির্দেশ দেন।
এ সময় উপদেষ্টার সঙ্গে বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফারজানা মমতাজ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং ডিপিডিসির বোর্ড চেয়ারম্যান মো. এহছানুল হক, ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী আবদুল্লাহ নোমানসহ সংস্থাটির উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা ছিলেন।
উল্লেখ্য, রাজধানীতে সঞ্চালনলাইনে কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক বিদ্যুৎকর্মী নিহত ও দুইজন আহত হন। সোমবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মানিকনগর এলাকায় উচ্চচাপ (এইচটি ক্যাবল) বিদ্যুৎলাইনের তার পরিবর্তনের কাজ করতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নবীর হোসেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান 'মেসার্স মুন পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং' কোম্পানির বিদ্যুৎকর্মী ছিলেন। আহতরা হলেন, মাসুম মিয়া ও রবিউল ইসলাম। তাঁরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বাংলা স্কুপ/প্রতিবেদক/এসকে