
দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার তরুণ উদ্যোক্তা মাসুম বিল্লাহ এলাকায় প্রথমবারের মতো স্ট্রবেরি চাষ করে সফল হয়েছেন। এখন তার মাঠজুড়ে সবুজ পাতার ফাঁকে লাল স্ট্রবেরি যেমন দৃষ্টিনন্দন তেমনি লোভনীয়। এলাকায় প্রথমবারের মতো নতুন এই ফসলের আবাদ দেখতে চাষাবাদে আগ্রহী কৃষক ও স্থানীয়রা ক্ষেতে আসছেন। জেলার খানসামা উপজেলার কাচিনিয়া গ্রামের মাহমুদ আলী ও মাহফুজা বেগম দম্পতির পুত্র মাসুম বিল্লাহ (১৮) কাচানিয়া স্কুল এন্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র । দুই ভাইয়ের মধ্যে মাসুম বড়। ছোট ভাই মাহফুজ দশম শ্রেণির ছাত্র।
সরেজমিনে দিনাজপুর খানসামা উপজেলার ভাবকী ইউনিয়নের চককাঞ্চন গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, স্ট্রবেরি পরিচর্যা ও বিক্রির জন্য স্ট্রবেরি তুলছেন মাসুম বিল্লাহ। আলাপকালে তিনি বলেন, ইউটিউব ঘাটতে ঘাটতেই একদিন স্ট্রবেরি চাষের একটি ভিডিও দেখতে পাই। সেইসাথে স্ট্রবেরি চাষের জন্য প্রয়োজনীয় চারা ও উপকরণেরও খোঁজ পেয়ে যাই। সেখান থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে পৈতৃক জমিতেই স্ট্রবেরি চাষের সিদ্ধান্ত নেই।
তরুণ উদ্যোক্তা মাসুম বিল্লাহ বলেন, শখের বশেই স্ট্রবেরি চাষ করেছি। বাবা-মায়ের সাথে আলোচনা করে প্রথমে মাত্র ১০ শতক জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করার সিদ্ধান্ত নেই। এবছর জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে জয়পুরহাট জেলা থেকে স্ট্রবেরি চারা নিয়ে আসি। ১০ শতক জমিতে ৪০০ চারা রোপণ করা হয়েছে। প্রতিটি চারা ১২ টাকা করে ৪৮০০ টাকার চারা কিনেছি। বিদেশি ফল স্ট্রবেরি চাষ করছি শুনে প্রতিবেশিরা অনেকেই হাসাহাসি করেছে। কিন্তু সফল হওয়ায় এখন তাদের ভুল ভেঙেছে। এখন তারা স্ট্রবেরি কিনতে সরাসরি ক্ষেতে আসছেন। দেখতে আসছেন অনেকে। সমবয়সীরা উৎসাহিত হচ্ছেন স্ট্রবেরি চাষে।
পরীক্ষামূলক ভাবে উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে মাত্র ১০ শতক জমিতে স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেন মাসুম। এই জমিতে প্রায় ৪'শ গাছ রয়েছে। চারা ক্রয় ও পরিচর্যাসহ সব মিলিয়ে তার খরচ প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। প্রতি গাছ থেকে এক মৌসুমে ৪/৫ বার ফল আহরণ করা যায়। প্রত্যেক গাছ থেকে প্রায় ৮'শত গ্রাম স্ট্রবেরি তোলা হয়েছে। বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী প্রতি কেজি স্ট্রবেরির পাইকারী দাম প্রায় ৩৫০ টাকা থেকে ৪'শত টাকা। সে হিসেবে ১০ শতক জমিতে প্রায় ৯০ হাজার টাকার স্ট্রবেরি বিক্রি হবে বলে মাসুম বিল্লাহ আশা প্রকাশ করেন। অল্প পুঁজি ও কম শ্রমে অধিক লাভ হওয়ায় আগামীতে বাণিজ্যিক ভাবে বড় পরিসরে স্ট্রবেরি চাষের আশা আছে বলেও জানান তিনি। তিনি আরো জানান, এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ৪৫ হাজার টাকার স্ট্রবেরি বিক্রি করলেও আত্মীয়স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশিকেও প্রায় সমপরিমাণ স্ট্রবেরি বিলিয়ে দিয়েছেন। প্রথমবারের মতো নিজের হাতে বোনা স্ট্রবেরি আত্মীয়স্বজন ও পাড়াপ্রতিবেশিকে এমনিতেই খেতে দিয়েছেন।
স্ট্রবেরি চাষের আগে এগুলো বাজারজাত করার কোন পরিকল্পনা না থাকলেও শুরুতেই বাজারও পেয়ে গেছেন মাসুম। এলাকায় স্ট্রবেরি চাষ নতুন হওয়ায় নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলায় এর ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সৈয়দপুর পৌর এলাকায় তার উৎপাদিত স্ট্রবেরি বাজারজাত করছেন। জেলার খানসামা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসমিন আক্তার বলেন, স্ট্রবেরি পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি বিদেশী ফল। অল্প বিনিয়োগে বেশি মুনাফা হওয়ায় এটি চাষে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। তেমনই একজন তরুণ উদ্যোক্তা মাসুম বিল্লাহ স্ট্রবেরি চাষ করে সফল হয়েছেন। তাই খানসামা উপজেলার উর্বর জমিতে উচ্চ ফলনশীল স্ট্রবেরি বাণিজ্যিক ভাবে চাষাবাদে কেউ আগ্রহী হলে কৃষি বিভাগ তাদের সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা করবে।
দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ নুরুজ্জামান মিয়া বলেন, তিনি সম্প্রতি জেলার খানসামা উপজেলার কাচিনিয়া গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা মাসুম বিল্লাহর বিদেশি ফল স্ট্রবেরি ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন। তার স্বল্প পরিসরে চাষ করা স্ট্রবেরি চাষ সফল হয়েছে। তার ক্ষেতে ফলনও অনেক ভালো হয়েছে। তিনি বলেন, তার এই ধরনের বিদেশি ফল চাষ করা দেখে এলাকার অনেক তরুণরাই স্ট্রবেরি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। ওই এলাকার কলেজের শিক্ষার্থী মইনুল ইসলাম ও নজির হোসেন স্ট্রবেরি চাষে স্থায়ীয় কৃষি বিভাগ থেকে পরামর্শ নিয়েছেন। তাদের এই ফল চাষে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন/এসকে
সরেজমিনে দিনাজপুর খানসামা উপজেলার ভাবকী ইউনিয়নের চককাঞ্চন গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, স্ট্রবেরি পরিচর্যা ও বিক্রির জন্য স্ট্রবেরি তুলছেন মাসুম বিল্লাহ। আলাপকালে তিনি বলেন, ইউটিউব ঘাটতে ঘাটতেই একদিন স্ট্রবেরি চাষের একটি ভিডিও দেখতে পাই। সেইসাথে স্ট্রবেরি চাষের জন্য প্রয়োজনীয় চারা ও উপকরণেরও খোঁজ পেয়ে যাই। সেখান থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে পৈতৃক জমিতেই স্ট্রবেরি চাষের সিদ্ধান্ত নেই।
তরুণ উদ্যোক্তা মাসুম বিল্লাহ বলেন, শখের বশেই স্ট্রবেরি চাষ করেছি। বাবা-মায়ের সাথে আলোচনা করে প্রথমে মাত্র ১০ শতক জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করার সিদ্ধান্ত নেই। এবছর জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে জয়পুরহাট জেলা থেকে স্ট্রবেরি চারা নিয়ে আসি। ১০ শতক জমিতে ৪০০ চারা রোপণ করা হয়েছে। প্রতিটি চারা ১২ টাকা করে ৪৮০০ টাকার চারা কিনেছি। বিদেশি ফল স্ট্রবেরি চাষ করছি শুনে প্রতিবেশিরা অনেকেই হাসাহাসি করেছে। কিন্তু সফল হওয়ায় এখন তাদের ভুল ভেঙেছে। এখন তারা স্ট্রবেরি কিনতে সরাসরি ক্ষেতে আসছেন। দেখতে আসছেন অনেকে। সমবয়সীরা উৎসাহিত হচ্ছেন স্ট্রবেরি চাষে।
পরীক্ষামূলক ভাবে উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে মাত্র ১০ শতক জমিতে স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেন মাসুম। এই জমিতে প্রায় ৪'শ গাছ রয়েছে। চারা ক্রয় ও পরিচর্যাসহ সব মিলিয়ে তার খরচ প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। প্রতি গাছ থেকে এক মৌসুমে ৪/৫ বার ফল আহরণ করা যায়। প্রত্যেক গাছ থেকে প্রায় ৮'শত গ্রাম স্ট্রবেরি তোলা হয়েছে। বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী প্রতি কেজি স্ট্রবেরির পাইকারী দাম প্রায় ৩৫০ টাকা থেকে ৪'শত টাকা। সে হিসেবে ১০ শতক জমিতে প্রায় ৯০ হাজার টাকার স্ট্রবেরি বিক্রি হবে বলে মাসুম বিল্লাহ আশা প্রকাশ করেন। অল্প পুঁজি ও কম শ্রমে অধিক লাভ হওয়ায় আগামীতে বাণিজ্যিক ভাবে বড় পরিসরে স্ট্রবেরি চাষের আশা আছে বলেও জানান তিনি। তিনি আরো জানান, এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ৪৫ হাজার টাকার স্ট্রবেরি বিক্রি করলেও আত্মীয়স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশিকেও প্রায় সমপরিমাণ স্ট্রবেরি বিলিয়ে দিয়েছেন। প্রথমবারের মতো নিজের হাতে বোনা স্ট্রবেরি আত্মীয়স্বজন ও পাড়াপ্রতিবেশিকে এমনিতেই খেতে দিয়েছেন।
স্ট্রবেরি চাষের আগে এগুলো বাজারজাত করার কোন পরিকল্পনা না থাকলেও শুরুতেই বাজারও পেয়ে গেছেন মাসুম। এলাকায় স্ট্রবেরি চাষ নতুন হওয়ায় নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলায় এর ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সৈয়দপুর পৌর এলাকায় তার উৎপাদিত স্ট্রবেরি বাজারজাত করছেন। জেলার খানসামা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসমিন আক্তার বলেন, স্ট্রবেরি পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি বিদেশী ফল। অল্প বিনিয়োগে বেশি মুনাফা হওয়ায় এটি চাষে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। তেমনই একজন তরুণ উদ্যোক্তা মাসুম বিল্লাহ স্ট্রবেরি চাষ করে সফল হয়েছেন। তাই খানসামা উপজেলার উর্বর জমিতে উচ্চ ফলনশীল স্ট্রবেরি বাণিজ্যিক ভাবে চাষাবাদে কেউ আগ্রহী হলে কৃষি বিভাগ তাদের সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা করবে।
দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ নুরুজ্জামান মিয়া বলেন, তিনি সম্প্রতি জেলার খানসামা উপজেলার কাচিনিয়া গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা মাসুম বিল্লাহর বিদেশি ফল স্ট্রবেরি ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন। তার স্বল্প পরিসরে চাষ করা স্ট্রবেরি চাষ সফল হয়েছে। তার ক্ষেতে ফলনও অনেক ভালো হয়েছে। তিনি বলেন, তার এই ধরনের বিদেশি ফল চাষ করা দেখে এলাকার অনেক তরুণরাই স্ট্রবেরি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। ওই এলাকার কলেজের শিক্ষার্থী মইনুল ইসলাম ও নজির হোসেন স্ট্রবেরি চাষে স্থায়ীয় কৃষি বিভাগ থেকে পরামর্শ নিয়েছেন। তাদের এই ফল চাষে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন/এসকে