সংযোজনের উদ্যোগ নিয়েছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। বিদ্যুৎ খাতে সাড়ে চার কোটির বেশি গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটার দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। তবে মিটার কেনায় প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এই প্রি-পেইড মিটার আমদানির মাধ্যমে কয়েক হাজার কোটি টাকা বাণিজ্যের সুযোগ তৈরি হয়।এই বাণিজ্যের পুরোটাই নিয়ন্ত্রণে নেয় সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের ‘ভাই-বন্ধু’ চক্র।
জানা গেছে, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী আরপিসিএলের তৎকালীন এমডি সবুর খান এবং ওজোপাডিকোর তৎকালীন এমডি সেলিম আবেদের নেতৃত্বে ডিপিএম বাণিজ্যের কার্যক্রম পরিচালিত হতো। বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার থাকা সত্ত্বেও একই চক্র আবার সক্রিয় হয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ ও ওজোপাডিকোর কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সহায়তায় বিপুর ভাই-বন্ধু চক্রকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চলছে।দেশে প্রি-পেইড মিটার নিয়ে চলমান অব্যবস্থাপনার পরিপ্রেক্ষিতে জনগণের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার কার্যকর সমাধান হতে পারে। স্মার্ট মিটারের সঙ্গে এমডিএমএস (মিটার ডাটা ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার), এইচইএস (হেড অ্যান্ড সিস্টেম সফটওয়্যার), আরএফ (রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি) এবং পিএলসি কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক রয়েছে।বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলোর ‘অ্যাডভান্সড মিটারিং ইনফ্রাস্ট্রাকচার (এএমআই)’ প্রকল্পের আওতায় বিল আদায়ে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ‘স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার’ সংস্থাপনের কাজ শুরু হয়।
এই প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে কেন্দ্রীয় ডাটা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বিদ্যুৎ চুরি রোধ সম্ভব হবে। তবে এর সূচনালগ্নেই একশ্রেণির অসাধু ও স্বার্থান্বেষী মহলের অশুভ আঁতাতের কারণে এটি ব্যর্থ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার এই প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ রাখার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও স্মার্ট মিটার বাস্তবায়নে বেশ কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলোতে স্মার্ট মিটার ক্রয়ের ডিপিএম বাণিজ্যের সঙ্গে অসাধু কর্মকাণ্ড সরাসরি সম্পৃক্ত। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের প্রি-পেইড মিটার এবং স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার ক্রয়ের ক্ষেত্রে ডিপিএম বাণিজ্যের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির চিত্র উঠে আসে। বিদ্যুৎ বিতরণ প্রতিষ্ঠান ওজোপাডিকোতে চীনের প্রতিষ্ঠান হেক্সিং ইলেকট্রিক্যালের মাধ্যমে কোটি টাকার জালিয়াতি দুদকের তদন্তে প্রকাশিত হলেও পরবর্তী সময়ে তৎকালীন প্রতিমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে অভিযুক্তরা বেকসুর খালাস পান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ডিপিএম প্রক্রিয়ায় টেন্ডার দেওয়ার জন্য ফের জোর তদবির চালানো হচ্ছে। মিটার সংযোজন প্রক্রিয়া সহজ করার নামে কোনো দরপত্র ছাড়া সরাসরি সরবরাহের জন্য দুটি সরকারি কম্পানি তৈরি করা হয়। এর মধ্যে ‘বাংলাদেশ স্মার্ট ইলেকট্রিক্যাল কম্পানি লিমিটেড’ (বেসিকো) ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নিবন্ধিত হয়। বেসিকোতে ওজোপাডিকোর ৫১ শতাংশ এবং চীনের হেক্সিং ইলেকট্রিক্যাল কম্পানির ৪৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
এ ছাড়া স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার তৈরির জন্য ‘বাংলাদেশ পাওয়ার ইক্যুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং কম্পানি লিমিটেড’ (বিপিইএমসি) নামে আরেকটি কম্পানি তৈরি করা হয়। রুরাল পাওয়ার কম্পানি লিমিটেডের (আরপিসিএল) ৫১ শতাংশ এবং চীনের সেনজেন স্টার ইনস্ট্রুমেন্ট কম্পানি লিমিটেডের ৪৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে এই কম্পানিতে। সেনজেন স্টারের নেপথ্যে রয়েছেন নসরুল হামিদের স্ত্রীর ভাই মাহবুব রহমান। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে স্মার্ট মিটার প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিশ্চিত হওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বর্তমান সরকারের উচিত দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে জনগণের স্বার্থ রক্ষা করা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরো জানা গেছে, এই দুটি প্রতিষ্ঠানের মিটার উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কোনো মেশিনারিজ নেই। তারা শুধু সংযোজনের জন্য কিছু টেস্ট মেশিন ব্যবহার করে। প্রকৃতপক্ষে উৎপাদন না করে নামমাত্র সংযোজনের মাধ্যমে মিটার সরবরাহ করছে। এর পাশাপাশি বাজারদরের তুলনায় অনেক বেশি আমদানি মূল্য দেখিয়ে তারা বিদেশে অর্থ পাচার করেছে। দরপত্র ছাড়াই বিভিন্ন সংস্থায় সরাসরি মিটার সরবরাহের সুযোগ পেয়েছে। কার্যাদেশের মূল্যের প্রায় ৯০ শতাংশ আমদানি খরচ হিসেবে দেখিয়ে তারা চীনা অংশীদারি প্রতিষ্ঠানকে অর্থ দিয়েছে, আর নিজেরা মাত্র ৬-৭ শতাংশ মুনাফা দেখিয়েছে।
প্রি-পেইড মিটার সরবরাহের ব্যবসায় জড়িত স্বার্থান্বেষী একটি প্রভাবশালী ভাই-বন্ধু চক্র সরকারের কিছু প্রতিষ্ঠানের ছত্রছায়ায় থেকে ‘সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়া’র আওতায় বিইএসসিও এবং বিপিইএমসি থেকে পুনরায় এক লাখ স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার ক্রয়ের পরিকল্পনা করছে। বিআরইবি এই মিটার ক্রয়ের জন্য মোটা অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে ডিপিএম দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া এরই মধ্যে চূড়ান্ত করেছে। অথচ ডব্লিউজেডপিডিসিএর সম্প্রতি আহ্বান করা দুটি ওটিএম পদ্ধতির দরপত্রে চীনা প্রতিষ্ঠান দুটি তাদের ডিপিএম ব্যবসা নিশ্চিত করতে দেশীয় অংশীদার বিইএসসিও বা বিপিইএমসিকে অংশগ্রহণ করায়নি। বরং এই দুটি দরপত্রে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছে তাদের চীনা অংশীদার হেক্সিং ও সেনজিন স্টার।
এভাবে হেক্সিং ও সেনজিন স্টার সরকারি বৈদ্যুতিক সংস্থা থেকে ডিপিএম পদ্ধতিতে কাজ নেওয়ার জন্য তাদের দেশীয় অংশীদারি প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে এবং অন্যদিকে ওটিএম পদ্ধতির দরপত্রে নিজেরা সরাসরি অংশগ্রহণ করে। ফলে লাভের পুরো অংশই চীনা এই প্রতিষ্ঠানগুলো নিচ্ছে। যেখানে দেশীয় অংশীদার প্রতিষ্ঠান বিদ্যমান, সেখানে তাদের উপেক্ষা করে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর সরাসরি দরপত্রে অংশগ্রহণ স্পষ্টতই অনৈতিক এবং জাতীয় স্বার্থবিরোধী। তাই অবিলম্বে চীনা প্রতিষ্ঠান দুটিকে সরাসরি দরপত্রে অংশগ্রহণ বন্ধ করতে এবং দেশীয় অংশীদারদের মাধ্যমে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া প্রয়োজন বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন।
এই ক্রয়প্রক্রিয়া দ্রুততর করার জন্য ‘সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়া’র বাণিজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি সরবরাহকারীরা মন্ত্রণালয়ে জোর তদবির ও প্রভাব বিস্তারে তৎপর রয়েছে। তাদের এই অশুভ ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ফলে বিআরইবির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এই প্রক্রিয়াটি দ্রুততর করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এনআইএন
সূত্র : কালের কন্ঠ
জানা গেছে, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী আরপিসিএলের তৎকালীন এমডি সবুর খান এবং ওজোপাডিকোর তৎকালীন এমডি সেলিম আবেদের নেতৃত্বে ডিপিএম বাণিজ্যের কার্যক্রম পরিচালিত হতো। বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার থাকা সত্ত্বেও একই চক্র আবার সক্রিয় হয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ ও ওজোপাডিকোর কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সহায়তায় বিপুর ভাই-বন্ধু চক্রকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চলছে।দেশে প্রি-পেইড মিটার নিয়ে চলমান অব্যবস্থাপনার পরিপ্রেক্ষিতে জনগণের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার কার্যকর সমাধান হতে পারে। স্মার্ট মিটারের সঙ্গে এমডিএমএস (মিটার ডাটা ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার), এইচইএস (হেড অ্যান্ড সিস্টেম সফটওয়্যার), আরএফ (রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি) এবং পিএলসি কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক রয়েছে।বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলোর ‘অ্যাডভান্সড মিটারিং ইনফ্রাস্ট্রাকচার (এএমআই)’ প্রকল্পের আওতায় বিল আদায়ে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ‘স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার’ সংস্থাপনের কাজ শুরু হয়।
এই প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে কেন্দ্রীয় ডাটা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বিদ্যুৎ চুরি রোধ সম্ভব হবে। তবে এর সূচনালগ্নেই একশ্রেণির অসাধু ও স্বার্থান্বেষী মহলের অশুভ আঁতাতের কারণে এটি ব্যর্থ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার এই প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ রাখার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও স্মার্ট মিটার বাস্তবায়নে বেশ কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলোতে স্মার্ট মিটার ক্রয়ের ডিপিএম বাণিজ্যের সঙ্গে অসাধু কর্মকাণ্ড সরাসরি সম্পৃক্ত। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের প্রি-পেইড মিটার এবং স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার ক্রয়ের ক্ষেত্রে ডিপিএম বাণিজ্যের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির চিত্র উঠে আসে। বিদ্যুৎ বিতরণ প্রতিষ্ঠান ওজোপাডিকোতে চীনের প্রতিষ্ঠান হেক্সিং ইলেকট্রিক্যালের মাধ্যমে কোটি টাকার জালিয়াতি দুদকের তদন্তে প্রকাশিত হলেও পরবর্তী সময়ে তৎকালীন প্রতিমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে অভিযুক্তরা বেকসুর খালাস পান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ডিপিএম প্রক্রিয়ায় টেন্ডার দেওয়ার জন্য ফের জোর তদবির চালানো হচ্ছে। মিটার সংযোজন প্রক্রিয়া সহজ করার নামে কোনো দরপত্র ছাড়া সরাসরি সরবরাহের জন্য দুটি সরকারি কম্পানি তৈরি করা হয়। এর মধ্যে ‘বাংলাদেশ স্মার্ট ইলেকট্রিক্যাল কম্পানি লিমিটেড’ (বেসিকো) ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নিবন্ধিত হয়। বেসিকোতে ওজোপাডিকোর ৫১ শতাংশ এবং চীনের হেক্সিং ইলেকট্রিক্যাল কম্পানির ৪৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
এ ছাড়া স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার তৈরির জন্য ‘বাংলাদেশ পাওয়ার ইক্যুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং কম্পানি লিমিটেড’ (বিপিইএমসি) নামে আরেকটি কম্পানি তৈরি করা হয়। রুরাল পাওয়ার কম্পানি লিমিটেডের (আরপিসিএল) ৫১ শতাংশ এবং চীনের সেনজেন স্টার ইনস্ট্রুমেন্ট কম্পানি লিমিটেডের ৪৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে এই কম্পানিতে। সেনজেন স্টারের নেপথ্যে রয়েছেন নসরুল হামিদের স্ত্রীর ভাই মাহবুব রহমান। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে স্মার্ট মিটার প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিশ্চিত হওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বর্তমান সরকারের উচিত দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে জনগণের স্বার্থ রক্ষা করা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরো জানা গেছে, এই দুটি প্রতিষ্ঠানের মিটার উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কোনো মেশিনারিজ নেই। তারা শুধু সংযোজনের জন্য কিছু টেস্ট মেশিন ব্যবহার করে। প্রকৃতপক্ষে উৎপাদন না করে নামমাত্র সংযোজনের মাধ্যমে মিটার সরবরাহ করছে। এর পাশাপাশি বাজারদরের তুলনায় অনেক বেশি আমদানি মূল্য দেখিয়ে তারা বিদেশে অর্থ পাচার করেছে। দরপত্র ছাড়াই বিভিন্ন সংস্থায় সরাসরি মিটার সরবরাহের সুযোগ পেয়েছে। কার্যাদেশের মূল্যের প্রায় ৯০ শতাংশ আমদানি খরচ হিসেবে দেখিয়ে তারা চীনা অংশীদারি প্রতিষ্ঠানকে অর্থ দিয়েছে, আর নিজেরা মাত্র ৬-৭ শতাংশ মুনাফা দেখিয়েছে।
প্রি-পেইড মিটার সরবরাহের ব্যবসায় জড়িত স্বার্থান্বেষী একটি প্রভাবশালী ভাই-বন্ধু চক্র সরকারের কিছু প্রতিষ্ঠানের ছত্রছায়ায় থেকে ‘সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়া’র আওতায় বিইএসসিও এবং বিপিইএমসি থেকে পুনরায় এক লাখ স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার ক্রয়ের পরিকল্পনা করছে। বিআরইবি এই মিটার ক্রয়ের জন্য মোটা অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে ডিপিএম দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া এরই মধ্যে চূড়ান্ত করেছে। অথচ ডব্লিউজেডপিডিসিএর সম্প্রতি আহ্বান করা দুটি ওটিএম পদ্ধতির দরপত্রে চীনা প্রতিষ্ঠান দুটি তাদের ডিপিএম ব্যবসা নিশ্চিত করতে দেশীয় অংশীদার বিইএসসিও বা বিপিইএমসিকে অংশগ্রহণ করায়নি। বরং এই দুটি দরপত্রে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছে তাদের চীনা অংশীদার হেক্সিং ও সেনজিন স্টার।
এভাবে হেক্সিং ও সেনজিন স্টার সরকারি বৈদ্যুতিক সংস্থা থেকে ডিপিএম পদ্ধতিতে কাজ নেওয়ার জন্য তাদের দেশীয় অংশীদারি প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে এবং অন্যদিকে ওটিএম পদ্ধতির দরপত্রে নিজেরা সরাসরি অংশগ্রহণ করে। ফলে লাভের পুরো অংশই চীনা এই প্রতিষ্ঠানগুলো নিচ্ছে। যেখানে দেশীয় অংশীদার প্রতিষ্ঠান বিদ্যমান, সেখানে তাদের উপেক্ষা করে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর সরাসরি দরপত্রে অংশগ্রহণ স্পষ্টতই অনৈতিক এবং জাতীয় স্বার্থবিরোধী। তাই অবিলম্বে চীনা প্রতিষ্ঠান দুটিকে সরাসরি দরপত্রে অংশগ্রহণ বন্ধ করতে এবং দেশীয় অংশীদারদের মাধ্যমে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া প্রয়োজন বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন।
এই ক্রয়প্রক্রিয়া দ্রুততর করার জন্য ‘সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়া’র বাণিজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি সরবরাহকারীরা মন্ত্রণালয়ে জোর তদবির ও প্রভাব বিস্তারে তৎপর রয়েছে। তাদের এই অশুভ ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ফলে বিআরইবির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এই প্রক্রিয়াটি দ্রুততর করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এনআইএন
সূত্র : কালের কন্ঠ