যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, পতন থেকে উদ্ধার করে আমেরিকাকে আবার মহান করে তুলতে সৃষ্টিকর্তা তার জীবন বাঁচিয়েছেন। গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনের রোটুন্ডায় শপথ নেওয়ার পর অভিষেক ভাষণে এ কথা বলেন তিনি। দেশটির সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস ট্রাম্পকে শপথবাক্য পাঠ করান। শপথ নেওয়ার সময় তার সঙ্গে ছিলেন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প। ট্রাম্পের আগে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে জেডি ভ্যান্স শপথ নেন। তাকে শপথবাক্য পাঠ করান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ব্রেট কাভানা। শপথ নেওয়ার সময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ঊষা ভ্যান্স।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, আমেরিকায় এখন থেকে সুবর্ণ যুগের সূচনা হয়েছে। আজ থেকে যুক্তরাষ্ট্র আরও উন্নতি করবে। সারা বিশ্বে আবার সম্মান অর্জন করবে। যুক্তরাষ্ট্রকে দেখে ঈর্ষা করবে সব দেশ। কাউকে আর মার্কিনদের ব্যবহার করে সুবিধা নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না।
ট্রাম্প বলেন, সাম্প্রতিক নির্বাচনে জনগণ আমাকে ম্যান্ডেট দিয়েছে এখানে সংঘটিত হওয়া ভয়াবহ প্রতারণার ঘটনাগুলোকে সম্পূর্ণরূপে বদলে দেওয়ার জন্য। একই সঙ্গে জনগণকে তাদের আস্থা, তাদের সম্পদ, তাদের গণতন্ত্র এবং বস্তুত তাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়ার রায় দিয়েছে। এই মুহূর্ত থেকে আমেরিকার পতনের শেষ হয়েছে।নিজের অভিষেকের দিনকে ‘স্বাধীনতা দিবস’ হিসেবে উল্লেখ করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা ও আমাদের জাতির মহান লক্ষ্যকে আর অস্বীকার করা হবে না। আমরা অবিলম্বে ন্যায়পরায়ণ, দক্ষতা ও আমেরিকার সরকারের প্রতি আনুগত্য ফিরিয়ে আনব।’
গত আট বছরে তিনি যেসব পরীক্ষা ও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন, তা আমেরিকার ২৫০ বছরের ইতিহাসে অন্য যেকোনো প্রেসিডেন্টের চেয়ে বেশি বলে উল্লেখ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম সাবেক কোনো প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন বিদায়ী বাইডেন প্রশাসনের আমলে।আজকের এই বিজয় সহজ ছিল না বলে অভিষেক ভাষণে উল্লেখ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘যারা আমাদের থামাতে চেয়েছিলেন, তারা আমাদের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। এমনকি আমার জীবনও কেড়ে নিতে চেয়েছিলেন। মাত্র কয়েক মাস আগে, পেনসিলভানিয়ার একটি সুন্দর মাঠে একজন আততায়ীর বুলেট আমার কান বিদ্ধ করে চলে যায়। কিন্তু তখন আমি অনুভব করি এবং এখন সেই বিশ্বাস আরও দৃঢ় হয়েছে যে, একটি কারণে জীবনরক্ষা করা হয়েছিল। আমেরিকাকে আবার মহান করার জন্য ঈশ্বর আমার জীবন বাঁচিয়েছিলেন।’
নির্বাচনে জয়ের পরই ট্রাম্প বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ব্যবস্থাসহ বেশ কিছু নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করবেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছিল, প্রথম দিনই দুই শতাধিক নির্বাহী আদেশ জারি করবেন তিনি। এর মধ্যে থাকবে আইনত বাধ্যতামূলক আদেশ এবং প্রেসিডেন্টের অন্যান্য নির্দেশাবলি। আবার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের গৃহীত নীতি অনেকগুলো আদেশ বাতিল করবেন তিনি। যার মধ্যে রয়েছে বারাক ওবামার সময় চালু হওয়া ওবামা কেয়ার।বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পাঠানো বিমানবাহিনীর একটি বিমানে করে ট্রাম্প ফ্লোরিডার পাম বিচে অবস্থিত রিপাবলিকান ঘাঁটিতে যান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী মেলানিয়া, মেয়ে ইভানকা এবং তার স্বামী জ্যারেড কুশনার। সেখান থেকে ট্রাম্প তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভার্জিনিয়ায় তার গলফ ক্লাবে যান। পরে সেখান থেকে আসেন ওয়াশিংটনে।
দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউজে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন বৈশ্বিক রাজনীতি ও অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, দ্বিতীয় দফায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে নিজের ঘোষিত আমেরিকা ফার্স্ট মূলনীতি বাস্তবায়ন শুরু করবেন ট্রাম্প। তার এ এজেন্ডা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনবে। পাশাপাশি এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সীমানার বাইরে বসবাস করা কোটি মানুষের জীবনও ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হবে। ইউক্রেন যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের কড়া সমালোচক ট্রাম্প। ফলে ইউক্রেন যুদ্ধে যে ট্রাম্প প্রভাব ফেলবেন, সেটি নিশ্চিতই। নির্বাচনী প্রচারণার সময় বিভিন্ন বক্তব্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার বলেছেন, তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ‘এক দিনের মধ্যে’ শেষ করতে পারবেন। যদিও সেটি ঠিক কীভাবে করবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত কখনোই খোলাসা করেননি। এরই মধ্যে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির কৃতিত্বের দাবি করেছেন ট্রাম্প। এ ছাড়া ন্যাটো, মধ্যপ্রাচ্য, চীন, জলবায়ুসহ অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বাইডেন প্রশাসনের নেওয়া অবস্থান থেকে ট্রাম্পের সরে আসার সম্ভাবনা প্রবল। দায়িত্ব নিয়ে যেসব সিদ্ধান্ত নিতে পারেন ট্রাম্প তা দেখে নেওয়া যাক।
গণহারে অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো : দায়িত্ব নিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অভিবাসীসংক্রান্ত সবচেয়ে বড় অভিযান চালাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প আগেই। এর অংশ হিসেবে ১ কোটি ১০ লাখ অবৈধ অভিবাসী ও অভিবাসনপ্রত্যাশীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠাবেন তিনি। এ ছাড়া অপরাধ সংঘটিত করা আরও পাঁচ লাখ অভিবাসীকেও যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য যে আইনি সুরক্ষা আছে সেটি তিনি খুব শিগগিরই বাতিল করে দেবেন।
জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল : দায়িত্ব নিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্যগত জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব প্রথা বাতিল করে নির্বাহী আদেশ জারি করতে পারেন ট্রাম্প। এতে করে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নয় এমন বাবা-মার ঘরে যেসব সন্তান জন্ম নেবে তারা আর স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব পাবে না। তবে এমন সিদ্ধান্ত নিলে দেশটির সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।
সীমান্ত জরুরি অবস্থা ঘোষণা : অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার পাশাপাশি ট্রাম্প সীমান্তে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণার পরিকল্পনা করছেন। গত অক্টোবরে এক জনসভায় তিনি জানান সীমান্তে ‘টাইটেল ৪২’ কার্যকর করবেন তিনি, যা জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা শুরু করবে। এর মাধ্যমে করোনার সময় যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে সব ধরনের চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তবে এমন ঘোষণা শুধু রোগ নিয়ন্ত্রণ দপ্তর দিতে পারবে। ট্রাম্প এটি ব্যবহার করেন কি না, সেটি দেখার বিষয়।
শুল্ক বৃদ্ধি : ট্রাম্প দায়িত্ব নিয়ে প্রথম দিনই বিশ্বকাঁপানো যে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন সেটি হলো শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন উত্তর আমেরিকার দুই দেশ কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। এমনটি করলে ওই অঞ্চলের বাণিজ্যে নাটকীয় পরিবর্তন দেখা যেতে পারে। তবে ট্রাম্প সাম্প্রতিক সময়ে বলেছেন, এ বিষয়টি নিয়ে তিনি আলোচনা করতে প্রস্তুত। কানাডা এবং মেক্সিকো উভয়ই জানিয়েছে, ট্রাম্প যদি এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে তারা পাল্টা ব্যবস্থা নেবে।
ক্যাপিটল হিলের দাঙ্গাকারীদের ক্ষমা : ২০১৯ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পান জো বাইডেন। তবে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২০ সালের ৬ জানুয়ারি ট্রাম্পের প্রত্যক্ষ উসকানিতে বাইডেনের জয় ঘোষণা ঠেকাতে ক্যাপিটল হিলে হামলা চালায় তার সমর্থকরা। ওইদিন যারা দাঙ্গায় অংশ নিয়েছিলেন। তাদের ক্ষমার নির্বাহী আদেশ জারি করতে পারেন ট্রাম্প।
বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এনআইএন
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, আমেরিকায় এখন থেকে সুবর্ণ যুগের সূচনা হয়েছে। আজ থেকে যুক্তরাষ্ট্র আরও উন্নতি করবে। সারা বিশ্বে আবার সম্মান অর্জন করবে। যুক্তরাষ্ট্রকে দেখে ঈর্ষা করবে সব দেশ। কাউকে আর মার্কিনদের ব্যবহার করে সুবিধা নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না।
ট্রাম্প বলেন, সাম্প্রতিক নির্বাচনে জনগণ আমাকে ম্যান্ডেট দিয়েছে এখানে সংঘটিত হওয়া ভয়াবহ প্রতারণার ঘটনাগুলোকে সম্পূর্ণরূপে বদলে দেওয়ার জন্য। একই সঙ্গে জনগণকে তাদের আস্থা, তাদের সম্পদ, তাদের গণতন্ত্র এবং বস্তুত তাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়ার রায় দিয়েছে। এই মুহূর্ত থেকে আমেরিকার পতনের শেষ হয়েছে।নিজের অভিষেকের দিনকে ‘স্বাধীনতা দিবস’ হিসেবে উল্লেখ করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা ও আমাদের জাতির মহান লক্ষ্যকে আর অস্বীকার করা হবে না। আমরা অবিলম্বে ন্যায়পরায়ণ, দক্ষতা ও আমেরিকার সরকারের প্রতি আনুগত্য ফিরিয়ে আনব।’
গত আট বছরে তিনি যেসব পরীক্ষা ও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন, তা আমেরিকার ২৫০ বছরের ইতিহাসে অন্য যেকোনো প্রেসিডেন্টের চেয়ে বেশি বলে উল্লেখ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম সাবেক কোনো প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন বিদায়ী বাইডেন প্রশাসনের আমলে।আজকের এই বিজয় সহজ ছিল না বলে অভিষেক ভাষণে উল্লেখ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘যারা আমাদের থামাতে চেয়েছিলেন, তারা আমাদের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। এমনকি আমার জীবনও কেড়ে নিতে চেয়েছিলেন। মাত্র কয়েক মাস আগে, পেনসিলভানিয়ার একটি সুন্দর মাঠে একজন আততায়ীর বুলেট আমার কান বিদ্ধ করে চলে যায়। কিন্তু তখন আমি অনুভব করি এবং এখন সেই বিশ্বাস আরও দৃঢ় হয়েছে যে, একটি কারণে জীবনরক্ষা করা হয়েছিল। আমেরিকাকে আবার মহান করার জন্য ঈশ্বর আমার জীবন বাঁচিয়েছিলেন।’
নির্বাচনে জয়ের পরই ট্রাম্প বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ব্যবস্থাসহ বেশ কিছু নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করবেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছিল, প্রথম দিনই দুই শতাধিক নির্বাহী আদেশ জারি করবেন তিনি। এর মধ্যে থাকবে আইনত বাধ্যতামূলক আদেশ এবং প্রেসিডেন্টের অন্যান্য নির্দেশাবলি। আবার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের গৃহীত নীতি অনেকগুলো আদেশ বাতিল করবেন তিনি। যার মধ্যে রয়েছে বারাক ওবামার সময় চালু হওয়া ওবামা কেয়ার।বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পাঠানো বিমানবাহিনীর একটি বিমানে করে ট্রাম্প ফ্লোরিডার পাম বিচে অবস্থিত রিপাবলিকান ঘাঁটিতে যান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী মেলানিয়া, মেয়ে ইভানকা এবং তার স্বামী জ্যারেড কুশনার। সেখান থেকে ট্রাম্প তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভার্জিনিয়ায় তার গলফ ক্লাবে যান। পরে সেখান থেকে আসেন ওয়াশিংটনে।
দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউজে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন বৈশ্বিক রাজনীতি ও অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, দ্বিতীয় দফায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে নিজের ঘোষিত আমেরিকা ফার্স্ট মূলনীতি বাস্তবায়ন শুরু করবেন ট্রাম্প। তার এ এজেন্ডা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনবে। পাশাপাশি এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সীমানার বাইরে বসবাস করা কোটি মানুষের জীবনও ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হবে। ইউক্রেন যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের কড়া সমালোচক ট্রাম্প। ফলে ইউক্রেন যুদ্ধে যে ট্রাম্প প্রভাব ফেলবেন, সেটি নিশ্চিতই। নির্বাচনী প্রচারণার সময় বিভিন্ন বক্তব্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার বলেছেন, তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ‘এক দিনের মধ্যে’ শেষ করতে পারবেন। যদিও সেটি ঠিক কীভাবে করবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত কখনোই খোলাসা করেননি। এরই মধ্যে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির কৃতিত্বের দাবি করেছেন ট্রাম্প। এ ছাড়া ন্যাটো, মধ্যপ্রাচ্য, চীন, জলবায়ুসহ অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বাইডেন প্রশাসনের নেওয়া অবস্থান থেকে ট্রাম্পের সরে আসার সম্ভাবনা প্রবল। দায়িত্ব নিয়ে যেসব সিদ্ধান্ত নিতে পারেন ট্রাম্প তা দেখে নেওয়া যাক।
গণহারে অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো : দায়িত্ব নিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অভিবাসীসংক্রান্ত সবচেয়ে বড় অভিযান চালাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প আগেই। এর অংশ হিসেবে ১ কোটি ১০ লাখ অবৈধ অভিবাসী ও অভিবাসনপ্রত্যাশীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠাবেন তিনি। এ ছাড়া অপরাধ সংঘটিত করা আরও পাঁচ লাখ অভিবাসীকেও যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য যে আইনি সুরক্ষা আছে সেটি তিনি খুব শিগগিরই বাতিল করে দেবেন।
জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল : দায়িত্ব নিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্যগত জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব প্রথা বাতিল করে নির্বাহী আদেশ জারি করতে পারেন ট্রাম্প। এতে করে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নয় এমন বাবা-মার ঘরে যেসব সন্তান জন্ম নেবে তারা আর স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব পাবে না। তবে এমন সিদ্ধান্ত নিলে দেশটির সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।
সীমান্ত জরুরি অবস্থা ঘোষণা : অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার পাশাপাশি ট্রাম্প সীমান্তে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণার পরিকল্পনা করছেন। গত অক্টোবরে এক জনসভায় তিনি জানান সীমান্তে ‘টাইটেল ৪২’ কার্যকর করবেন তিনি, যা জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা শুরু করবে। এর মাধ্যমে করোনার সময় যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে সব ধরনের চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তবে এমন ঘোষণা শুধু রোগ নিয়ন্ত্রণ দপ্তর দিতে পারবে। ট্রাম্প এটি ব্যবহার করেন কি না, সেটি দেখার বিষয়।
শুল্ক বৃদ্ধি : ট্রাম্প দায়িত্ব নিয়ে প্রথম দিনই বিশ্বকাঁপানো যে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন সেটি হলো শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন উত্তর আমেরিকার দুই দেশ কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। এমনটি করলে ওই অঞ্চলের বাণিজ্যে নাটকীয় পরিবর্তন দেখা যেতে পারে। তবে ট্রাম্প সাম্প্রতিক সময়ে বলেছেন, এ বিষয়টি নিয়ে তিনি আলোচনা করতে প্রস্তুত। কানাডা এবং মেক্সিকো উভয়ই জানিয়েছে, ট্রাম্প যদি এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে তারা পাল্টা ব্যবস্থা নেবে।
ক্যাপিটল হিলের দাঙ্গাকারীদের ক্ষমা : ২০১৯ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পান জো বাইডেন। তবে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২০ সালের ৬ জানুয়ারি ট্রাম্পের প্রত্যক্ষ উসকানিতে বাইডেনের জয় ঘোষণা ঠেকাতে ক্যাপিটল হিলে হামলা চালায় তার সমর্থকরা। ওইদিন যারা দাঙ্গায় অংশ নিয়েছিলেন। তাদের ক্ষমার নির্বাহী আদেশ জারি করতে পারেন ট্রাম্প।
বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এনআইএন