গর্ভকালীন মায়েদের সব সময় থাকতে হয় একটু আলাদা যত্নে, একটু সাবধানে। সব সময় খেয়াল রাখতে হয় যাতে মা বা সন্তানের কোনো রকমের সমস্যা না হয় এবং মা যাতে সুস্থ থাকতে পারেন।
১. সাধারণ রোগবালাই থেকে মুক্ত থাকা
শীতে সাধারণত মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায় এবং প্রসূতি মায়েরা একটি বিশেষ অবস্থায় থাকেন। তাই তাঁদের একটু বেশি সতর্ক থাকতে হয়।ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে, নিউমোনিয়া হতে পারে মায়ের। যাঁদের হাঁপানির সমস্যা আছে তাঁদের হাঁপানির টান আরো বেড়ে যেতে পারে। এ ছাড়া গর্ভবতী মায়ের ঠাণ্ডাজনিত নিউমোনিয়া হলে গর্ভের বাচ্চা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
২. নিয়মিত সুষম খাবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
গর্ভকালীন মায়েদের পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার একটু বেশিই খেতে হয়।এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে গর্ভের সন্তানের ওপর। অর্থাৎ এমন সময় মা যদি নিজের শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হন, তবে নিজে যেমন সুস্থ থাকবেন, তেমনি সুস্থ-সবল সন্তান জন্ম দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে শতকরা প্রায় ৯৫ ভাগ।শীতের শাক-সবজি ও ফলমূল গর্ভবতী মায়ের ত্বক, চুল ইত্যাদির জন্যও উপকারী। শীতকালে বাজারে লাউ, শিম, মুলা, গাজর, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, লালশাক, পালংশাক ইত্যাদি কমবেশি কিনতে পাওয়া যায়। গর্ভবতী মায়েদের প্রতিদিনই এসব সবজি কমবেশি খাওয়া উচিত। ভাত কম খেয়ে এসব বেশি খাওয়া জরুরি। এসব খাবারে গর্ভবতী মায়ের নিয়মিত বাথরুম হয়, যা গর্ভের বাচ্চার জন্য ভালো। তবে যাঁদের রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রা বেশি তাঁদের পালংশাক ও লালশাক কম খাওয়া উচিত।
৩. আরামদায়ক পোশাক পরুন
শীতের সোয়েটার কিংবা গরম কাপড় বাছাইয়ের দিকে মন দিন। এমন কিছু কেনা বা পরা যাবে না, যাতে পেটের ওপর চাপ পড়ে এবং চলাফেরা করতে সমস্যা হয়। লম্বা এবং সামনের দিকে বোতাম আছে এমন সোয়েটারগুলো এ সময় গর্ভবতী মায়েদের আরাম দিতে পারে। শীতের কাপড় পরিধানের পাশাপাশি জুতার দিকে নজর দিতে ভুলবেন না। পা থেকে ঠাণ্ডা লেগে আপনার এবং আপনার সন্তানের সমস্যা হতে পারে। তাই যাতে পা ভালোভাবে ঢাকা থাকে এমন জুতা পরবেন এবং ঘরে মোজা পরে থাকতে পারেন। জুতার ক্ষেত্রে কেডস বা হিলবিহীন সমান তলাবিশিষ্ট জুতা কোমরে ব্যথা ও হাঁটু ব্যথা নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৪. শীতের শুষ্কতা থেকে রক্ষার উপায়
শীতকালে যেহেতু আমাদের ঘাম কম হয় এবং তৃষ্ণা কম লাগে, তাই স্বভাবতই আমরা এ সময় পানি কম খাই। কিন্তু গর্ভাবস্থায় এমনটা করা উচিত নয়। গর্ভাবস্থায় এমনিতেই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পানি পান করা উচিত। শীতকালেও এর ব্যতিক্রম করা যাবে না। যদি আপনি পানি খাওয়ার কথা ভুলে যান, তবে আজকাল মোবাইলে অনেক অ্যাপস আছে, যা আপনাকে সময়মতো জলপান করার রিমাইন্ডার দেবে। এ ছাড়া আপনি হাতের কাছে সব সময় পানিভর্তি বোতল রাখতে পারেন, যাতে যখনই বোতলটি দেখবেন, তখনই আপনার পানি খাওয়ার কথা মনে পড়ে যায়। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করলে ত্বকের শুষ্ক হয়ে যাওয়া, এমনকি ফ্লুইড কমে যাওয়া, মাথা ব্যথা ও প্রি-টার্ম লেবারের মতো জটিলতার ঝুঁকি কমায়।
৫. শীতে ত্বকের যত্নে ভুল করবেন না
হাত, পা, মুখ এবং পুরো শরীরে ময়েশ্চারাইজার মাখুন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় ময়েশ্চারাইজার মেখে ঘুমাতে যেতে পারেন। মনে রাখতে হবে, ত্বক একেবারে শুকিয়ে নিয়ে তারপর ময়েশ্চারাইজার মাখলে কাজ হবে না। ত্বকে ভেজাভাব থাকতেই ময়েশ্চারাইজার মাখতে হবে।শীতে গোসলের সময় সাবান কম ব্যবহার করাই ভালো। কারণ সাবান ত্বকে শুষ্কতা সৃষ্টি করে। সুতরাং স্নানে কিংবা হাত-মুখ ধুতে সাবান যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করবেন।
৬. সুস্থ থাকতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন
শীতকালে আলসেমি ভর করে বলে অনেকে ব্যায়াম করতে চান না, এমনকি অনেকেই শুয়ে-বসে দিন কাটিয়ে দেন। এটি একেবারেই উচিত নয়। সকালে বা বিকেলে নিয়মিত ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করুন। ব্রিদিং টেকনিক ফলো করুন। চার সেকেন্ড ধরে শ্বাস নিন, চার সেকেন্ড ধরে রাখুন, চার সেকেন্ড ধরে শ্বাস ছাড়ুন। এরপর চার সেকেন্ড বিরতি নিয়ে পুরো ব্যাপারটি পাঁচ মিনিট ধরে করুন। এটি প্রসবের সময় কাজে দেবে। এ ছাড়া মন শান্ত রাখার জন্য মেডিটেশন করতে পারেন।
৭. ঠাণ্ডা বা সর্দিকাশি হলে সতর্ক থাকুন
অনেক গর্ভবতী মা-ই গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হবে ভেবে সর্দিকাশিতে ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকেন। তবে যদি আপনার সর্দিকাশি দু-তিন দিনের বেশি থাকে, তবে অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে এবং চিকিৎসা করাতে হবে। এসব সর্দিকাশি ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জারও লক্ষণ হতে পারে। প্রয়োজনে ডাক্তারের কাছ থেকে ফ্লু শট সম্পর্কে জেনে নিয়ে তা নিতে পারেন। ডাক্তার আপনাকে গর্ভকালীন অবস্থায় নিরাপদ ওষুধই দেবেন। যদি মায়ের ঠাণ্ডার সমস্যা আগে থেকেই থাকে, তবে ঠাণ্ডা পানি ব্যবহারে এবং কোনো কিছু ঠাণ্ডা খেতে সাবধানতা অবলম্বন করাই শ্রেয়। কারণ মায়ের কিছু হলে তা থেকে গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনোভাবেই কোনো ওষুধ সেবন করা ঠিক হবে না।শীত কিংবা গরম গর্ভবতী মায়ের ও তাঁর গর্ভের সন্তানের সুস্থতার জন্য নিয়মিত চেকআপ অবশ্যই করাতে ভুলবেন না।
বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এনআইএন
১. সাধারণ রোগবালাই থেকে মুক্ত থাকা
শীতে সাধারণত মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায় এবং প্রসূতি মায়েরা একটি বিশেষ অবস্থায় থাকেন। তাই তাঁদের একটু বেশি সতর্ক থাকতে হয়।ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে, নিউমোনিয়া হতে পারে মায়ের। যাঁদের হাঁপানির সমস্যা আছে তাঁদের হাঁপানির টান আরো বেড়ে যেতে পারে। এ ছাড়া গর্ভবতী মায়ের ঠাণ্ডাজনিত নিউমোনিয়া হলে গর্ভের বাচ্চা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
২. নিয়মিত সুষম খাবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
গর্ভকালীন মায়েদের পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার একটু বেশিই খেতে হয়।এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে গর্ভের সন্তানের ওপর। অর্থাৎ এমন সময় মা যদি নিজের শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হন, তবে নিজে যেমন সুস্থ থাকবেন, তেমনি সুস্থ-সবল সন্তান জন্ম দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে শতকরা প্রায় ৯৫ ভাগ।শীতের শাক-সবজি ও ফলমূল গর্ভবতী মায়ের ত্বক, চুল ইত্যাদির জন্যও উপকারী। শীতকালে বাজারে লাউ, শিম, মুলা, গাজর, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, লালশাক, পালংশাক ইত্যাদি কমবেশি কিনতে পাওয়া যায়। গর্ভবতী মায়েদের প্রতিদিনই এসব সবজি কমবেশি খাওয়া উচিত। ভাত কম খেয়ে এসব বেশি খাওয়া জরুরি। এসব খাবারে গর্ভবতী মায়ের নিয়মিত বাথরুম হয়, যা গর্ভের বাচ্চার জন্য ভালো। তবে যাঁদের রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রা বেশি তাঁদের পালংশাক ও লালশাক কম খাওয়া উচিত।
৩. আরামদায়ক পোশাক পরুন
শীতের সোয়েটার কিংবা গরম কাপড় বাছাইয়ের দিকে মন দিন। এমন কিছু কেনা বা পরা যাবে না, যাতে পেটের ওপর চাপ পড়ে এবং চলাফেরা করতে সমস্যা হয়। লম্বা এবং সামনের দিকে বোতাম আছে এমন সোয়েটারগুলো এ সময় গর্ভবতী মায়েদের আরাম দিতে পারে। শীতের কাপড় পরিধানের পাশাপাশি জুতার দিকে নজর দিতে ভুলবেন না। পা থেকে ঠাণ্ডা লেগে আপনার এবং আপনার সন্তানের সমস্যা হতে পারে। তাই যাতে পা ভালোভাবে ঢাকা থাকে এমন জুতা পরবেন এবং ঘরে মোজা পরে থাকতে পারেন। জুতার ক্ষেত্রে কেডস বা হিলবিহীন সমান তলাবিশিষ্ট জুতা কোমরে ব্যথা ও হাঁটু ব্যথা নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৪. শীতের শুষ্কতা থেকে রক্ষার উপায়
শীতকালে যেহেতু আমাদের ঘাম কম হয় এবং তৃষ্ণা কম লাগে, তাই স্বভাবতই আমরা এ সময় পানি কম খাই। কিন্তু গর্ভাবস্থায় এমনটা করা উচিত নয়। গর্ভাবস্থায় এমনিতেই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পানি পান করা উচিত। শীতকালেও এর ব্যতিক্রম করা যাবে না। যদি আপনি পানি খাওয়ার কথা ভুলে যান, তবে আজকাল মোবাইলে অনেক অ্যাপস আছে, যা আপনাকে সময়মতো জলপান করার রিমাইন্ডার দেবে। এ ছাড়া আপনি হাতের কাছে সব সময় পানিভর্তি বোতল রাখতে পারেন, যাতে যখনই বোতলটি দেখবেন, তখনই আপনার পানি খাওয়ার কথা মনে পড়ে যায়। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করলে ত্বকের শুষ্ক হয়ে যাওয়া, এমনকি ফ্লুইড কমে যাওয়া, মাথা ব্যথা ও প্রি-টার্ম লেবারের মতো জটিলতার ঝুঁকি কমায়।
৫. শীতে ত্বকের যত্নে ভুল করবেন না
হাত, পা, মুখ এবং পুরো শরীরে ময়েশ্চারাইজার মাখুন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় ময়েশ্চারাইজার মেখে ঘুমাতে যেতে পারেন। মনে রাখতে হবে, ত্বক একেবারে শুকিয়ে নিয়ে তারপর ময়েশ্চারাইজার মাখলে কাজ হবে না। ত্বকে ভেজাভাব থাকতেই ময়েশ্চারাইজার মাখতে হবে।শীতে গোসলের সময় সাবান কম ব্যবহার করাই ভালো। কারণ সাবান ত্বকে শুষ্কতা সৃষ্টি করে। সুতরাং স্নানে কিংবা হাত-মুখ ধুতে সাবান যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করবেন।
৬. সুস্থ থাকতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন
শীতকালে আলসেমি ভর করে বলে অনেকে ব্যায়াম করতে চান না, এমনকি অনেকেই শুয়ে-বসে দিন কাটিয়ে দেন। এটি একেবারেই উচিত নয়। সকালে বা বিকেলে নিয়মিত ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করুন। ব্রিদিং টেকনিক ফলো করুন। চার সেকেন্ড ধরে শ্বাস নিন, চার সেকেন্ড ধরে রাখুন, চার সেকেন্ড ধরে শ্বাস ছাড়ুন। এরপর চার সেকেন্ড বিরতি নিয়ে পুরো ব্যাপারটি পাঁচ মিনিট ধরে করুন। এটি প্রসবের সময় কাজে দেবে। এ ছাড়া মন শান্ত রাখার জন্য মেডিটেশন করতে পারেন।
৭. ঠাণ্ডা বা সর্দিকাশি হলে সতর্ক থাকুন
অনেক গর্ভবতী মা-ই গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হবে ভেবে সর্দিকাশিতে ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকেন। তবে যদি আপনার সর্দিকাশি দু-তিন দিনের বেশি থাকে, তবে অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে এবং চিকিৎসা করাতে হবে। এসব সর্দিকাশি ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জারও লক্ষণ হতে পারে। প্রয়োজনে ডাক্তারের কাছ থেকে ফ্লু শট সম্পর্কে জেনে নিয়ে তা নিতে পারেন। ডাক্তার আপনাকে গর্ভকালীন অবস্থায় নিরাপদ ওষুধই দেবেন। যদি মায়ের ঠাণ্ডার সমস্যা আগে থেকেই থাকে, তবে ঠাণ্ডা পানি ব্যবহারে এবং কোনো কিছু ঠাণ্ডা খেতে সাবধানতা অবলম্বন করাই শ্রেয়। কারণ মায়ের কিছু হলে তা থেকে গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনোভাবেই কোনো ওষুধ সেবন করা ঠিক হবে না।শীত কিংবা গরম গর্ভবতী মায়ের ও তাঁর গর্ভের সন্তানের সুস্থতার জন্য নিয়মিত চেকআপ অবশ্যই করাতে ভুলবেন না।
বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এনআইএন