বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প গোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকদের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি ছাড়াই অর্থ সরানোসহ বিভিন্ন অভিযোগ সম্পর্কে বহুমুখী অনুসন্ধান করছে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। এসব অনুসন্ধান শেষ হলে তার ভিত্তিতে গ্রুপটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
আন্দোলনের মুখে গত পাঁচই অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পাঁচই সেপ্টেম্বরে পুলিশের সিআইডি বসুন্ধরা চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের ঘোষণা দেয়।
সিআইডির ওই বিজ্ঞপ্তিতে তখন সায়েম সোবহান আনভীরকে 'দেশের সোনা চোরাচালান সিন্ডিকেটের অন্যতম নিয়ন্ত্রক' বলে উল্লেখ করা হয়েছিলো।
গত বাইশে জুলাই সরকার বিরোধী তীব্র গণআন্দোলনের সময় তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি সংহতি প্রকাশ করে যেসব ব্যবসায়ী আলোচনায় এসেছিলেন তাদের মধ্যে এই গ্রুপের মালিক আহমেদ আকবর সোবহানও ছিলেন।
শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের সভায় আন্দোলনকারীদের ইঙ্গিত করে তখন তিনি বলেছিলেন, “আমাদের এই সন্ত্রাসী ও জঙ্গি বাহিনী ধ্বংস করতে হবে। এ জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে”।
ঢাকায় দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম বিবিসি বাংলাকে বলেছেন দুদক মি. সোবহান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিদেশে থাকা সম্পত্তির বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে।
দুদকের আবেদনের প্রেক্ষাপটে আদালত ইতোমধ্যেই বসুন্ধরার মালিকদের বিদেশে থাকা সম্পদ জব্দ কিংবা অবরুদ্ধের নির্দেশ দিয়েছে।
এছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল বা সিআইসিও বসুন্ধরাসহ কয়েকটি শিল্প গোষ্ঠীর বিষয়ে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও কর ফাঁকির বিষয়ে আলাদা করে অনুসন্ধান শুরু করছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
"আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে যা হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন, কাল্পনিক ও সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। এটা সম্পূর্ণ প্রতিহিংসাও হতে পারে। আমরা এর সবই আইনি ভাবে মোকাবিলা করবো," বিবিসি বাংলাকে বলেছেন তিনি।
বসুন্ধরা গ্রুপকে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প গোষ্ঠী হিসেবে মনে করা হয়। এর ওয়েবসাইটে থাকা তথ্য অনুযায়ী ১৯৮৭ সালে আবাসন ব্যবসার মাধ্যমে এর গোড়াপত্তন হয়েছিলো। পরে সিমেন্ট, শিপিং, মিডিয়া, টিস্যু পেপার, নিত্য পণ্য ও ক্রীড়াসহ বিভিন্ন খাতে তারা তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছে।
সিআইডি, সিআইসি ও দুদক অনুসন্ধান শুরুর পর অক্টোবরের শুরুর দিকে বসুন্ধরা গ্রুপের প্রধান আহমেদ আকবর সোবহান প্রধান উপদেষ্টার কাছে চিঠি দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ‘মানহানিকর বিবৃতি ও প্রোপাগান্ডা’ বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়ার অনুরোধ করেছেন বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে।
বাংলাদেশে ব্যবসায়ীদের মধ্যে বসুন্ধরা গ্রুপের মালিক আহমেদ আকবর সোবহান ও তার সন্তানদের প্রভাবশালী হিসেবে মনে করা হয়। গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে তাদের সখ্যতার বিষয়টিও সামনে এসেছে। বিভিন্ন সময় নানা ঘটনায় আলোচনায় এসেছেন এ পরিবারের সদস্যরা।
বিদেশে সম্পদ জব্দের আদেশ আদালতের
মীর আহমেদ আলী সালাম বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত মি. সোবহান ও তার পরিবারের আট জনের বিদেশে যেসব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ আছে সেগুলো জব্দ ও অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছে।
গত একুশে নভেম্বর আদালত এ নির্দেশ দিলেও এটি প্রকাশ্যে এসেছে সম্প্রতি। এর আগে ২০শে নভেম্বর দুদক আদালতে আবেদন করেছিলো।
দুদক আদালতকে এই আটজনের ব্যাংক লেনদেনের তথ্য, সম্পত্তি ক্রয় এবং ১৪৩ কোটি টাকা বিনিয়োগ সম্পর্কিত তথ্য দিয়ে বলেছেন মি. সোবহানের পরিবারের সদস্যরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি ছাড়াই বিদেশে টাকা পাঠিয়েছেন।
“তাদের ব্যাংক হিসেব থেকে টাকা ট্রান্সফার হয়েছে। তবে এটি হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়াই। আদালতের আদেশ পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হবে,” বিবিসি বাংলাকে বলেছেন মি. সালাম।
তিনি বলেন কোম্পানির নামে ঋণ নিয়ে সেই ঋণের একটি অংশ বিদেশে পাচার করে সেখানে সম্পদ ক্রয় ও বিনিয়োগ করা হয়েছে।
আদালত সম্পদ জব্দের আদেশের কপি দ্রুত সুইজারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, সাইপ্রাসসহ কয়েকটি দেশে এবং ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কাছে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে।
আদালতে দুদক যে আবেদন করেছে তাতে বলা হয়েছে সায়েম সোবহান আনভীর ও তার স্ত্রী স্লোভাকিয়ার নাগরিকত্ব নিয়েছেন এবং এ জন্য তারা সেখানে মোট ৫০ লাখ ইউরো বিনিয়োগ করেছেন।
অন্যদিকে মি. আনভীরের পিতা আহমেদ আকবর সোবহান ও মাতা আফরোজা বেগম অন্তত তিন কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ক্যারিবীয় দ্বীপরাষ্ট্র সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিসের নাগরিকত্ব নিয়েছেন বলে উল্লেখ করেছে দুদক।
দুদকের আবেদনে আরও বলা হয়, মি. সোবহানের পরিবারের আট সদস্য বিভিন্ন দেশের ১৯টি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছেন। তার আরেক সন্তান সাফওয়ান সোবহান ও তার স্ত্রী সোনিয়া ফেরদৌসী সোবহান সংযুক্ত আরব আমিরাতের হাবিব ব্যাংক ও সাইপ্রাসে ব্যাংকে হিসাব খুলে অবৈধ অর্থ লেনদেন করেন।
এর আগে ৬ই অক্টোবর মি. সোবহান ও পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
পরে একুশে অক্টোবর মি. সোবহানসহ পরিবারের আট সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত। যদিও তার আগেই সায়েম সোবহান আনভীরসহ কয়েকজন বিদেশে চলে গেছেন বলে খবর এসেছে সংবাদ মাধ্যমে।
ব্রিটেনে সম্পত্তি নিয়ে আলোচনা
বসুন্ধরা গ্রুপ এবার নতুন করে আলোচনায় এসেছে ব্রিটিশ পত্রিকা গার্ডিয়ানের একটি রিপোর্টের কারণে। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে মি. সোবহান ও তার সন্তানরা অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে ব্রিটেনে তের মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের সম্পদের মালিক। এছাড়া ফরাসী স্টাইলে আরেকটি ম্যানশন তারা সেখানে তৈরি করেছেন।
ওই রিপোর্টে অবজারভার ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের একটি অনুসন্ধানকে উদ্ধৃত করে বলা হয় যে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রীরাই শুধু ব্রিটেনে প্রোপার্টি কিনেন নি, বরং কিছু প্রভাবশালী ব্যবসায়ীও একই কাজ করেছেন ।
এর মধ্যে সারে এলাকায় মূল্যবান একটি এস্টেট কিনেছেন মি. সোবহানের পরিবার। ওই এস্টেটের সামনে একই নাম একটি গলফ কোর্সও আছে। অবশ্য সেটিও মি. সোবহানের পরিবারের কি-না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
গার্ডিয়ান বলছে ওই এলাকায় দুটি বড় সম্পদের মালিক তারা। এর মূল্য তের মিলিয়ন পাউন্ড। ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডস এর নিবন্ধিত কোম্পানির মাধ্যমে এগুলো কেনা হয়েছে। এছাড়া ফ্রেঞ্চ স্টাইলের আরেকটি ম্যানশন এখন নির্মাণাধীন রয়েছে। অবজারভার ওই এলাকাটি ঘুরে এসেছে।
এছাড়া সিঙ্গাপুরের ঠিকানা ব্যবহার করে অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে সাড়ে পাঁচ মিলিয়ন পাউন্ডের চেলসি ওয়াটারফ্রন্ট প্রোপার্টি কিনেছেন মি. সোবহানের এক ছেলে।
মি. সোবহানের ছেলে সাফওয়ান সোবহান তার নিজের ও পরিবারের পক্ষ থেকে গার্ডিয়ানকে বলেছেন ‘যে কোন অনিয়মের অভিযোগ তারা শক্তভাবে প্রত্যাখ্যান করছে এবং এসব অভিযোগের বিরুদ্ধে তারা দৃঢ়ভাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করবে’।
‘আমরা মনে করি এই তদন্ত আইনি দিক থেকে দুর্বল বলে প্রতীয়মান হবে এবং এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত,” বলেছেন তিনি। তবে তিনি দুবাই ও সিঙ্গাপুরকে ব্যবহার করে যুক্তরাজ্যে সম্পদ ক্রয়ের বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি।
গার্ডিয়ানের এই রিপোর্ট বিবিসিসহ বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর গত কয়েকদিন এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছিলো।
এর মধ্যেই চলতি মাসের শুরুতে সোবহান পরিবারের সদস্যদের বিদেশে থাকা সম্পদ জব্দ করতে দেয়া আদালতের আদেশ সামনে এলো।
সিআইডি যা বলেছিলো
সিআইডি গত পাঁচই সেপ্টেম্বর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায় যে আহমেদ আকবর সোবহান ও সায়েম সোবহান আনভীরসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অর্থপাচার, জালিয়াতি, প্রতারণা, শুল্ক ফাঁকিসহ বিভিন্ন অভিযোগ তারা অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বসুন্ধরা গ্রুপ পর্যাপ্ত জামানত না রেখে প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে বিঘাপ্রতি ২০-২৫ লাখ টাকায় কেনা জমি কাঠাপ্রতি তিন কোটি টাকা দাম দেখিয়ে ৪২ হাজার কোটি টাকারও বেশি ঋণ নিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় সিআইডির ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
“এর বেশিরভাগ অর্থ পাচার করা হয়েছে দুবাই, সিঙ্গাপুর, সাইপ্রাস, লন্ডন, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে। বসুন্ধরা গ্রুপের সিঙ্গাপুর অফিস দেখাশোনা করছেন শাহ আলমের বড় ছেলে সাদাত সোবহান তানভীর। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে একের পর এক প্রকল্প দেখিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিলেও সেসব ঋণ পরিশোধ না করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে,” সিআইডি তার বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করে।
এতে আরো বলা হয়, “রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই ক্ষমতা ও অর্থের বলে জনসাধারণের ও সরকারি সম্পত্তি যেমন খাল, বিল, নদী, খাসজমি, পতিত ভূমি, কবরস্থান, বধ্যভূমি ইত্যাদি ভরাট করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে”।
এছাড়া বসুন্ধরা গ্রুপের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি, শুল্ক ফাঁকি, ভ্যাট ফাঁকি, আন্ডার ইনভয়েসিং/ওভার ইনভয়েসিং করে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার সংক্রান্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিআইডি মানিলন্ডারিং অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানানো হয়েছিলো সেই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
অনুসন্ধানের অগ্রগতি কতটা হলো জানতে চাইলে সংস্থাটির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকদের বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম চলমান আছে।
দুদক যা করছে
দুর্নীতি দমন কমিশনের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম জানিয়েছেন মি. সোবহান ও তার পরিবারের সদস্যদের দেশের বাইরে থাকা সম্পত্তির বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।
“বসুন্ধরা গ্রুপের মালিক ও তার পরিবারের সদস্যরা বিদেশে টাকা পাঠানোর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি নেননি। কিন্তু তাদের টাকা স্থানান্তর হয়েছে এবং তারা কোম্পানি থেকে ঋণ নিয়ে সেই টাকার একাংশ বিদেশে বিনিয়োগ করেছেন। এসব বিষয় নিয়ে অনুসন্ধান দল কাজ করছে,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
মি. আলী জানিয়েছেন অনুসন্ধান রিপোর্ট দুদকে আসার পর সিদ্ধান্ত হবে বসুন্ধরা গ্রুপের মালিক ও তার পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে কোন ধরনের মামলা হবে বা অর্থ পাচারের মামলা আলাদা করে করা হবে কি-না।
বসুন্ধরা গ্রুপ আরও যা বলছে
সরকারের বিভিন্ন সংস্থার নেয়া পদক্ষেপের বিষয়ে বসুন্ধরা গ্রুপ এক বিবৃতিতে বলছে বিদেশে সম্পদ জব্দ নিয়ে যেসব খবর প্রকাশিত হয়েছে তা ভুল এবং এতে সঠিক তথ্যের ঘাটতি আছে।
" বসুন্ধরা গ্রুপ এর চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যাংক ঋণ যথাযথ ব্যবহার না করে সম্পদ অর্জন এবং ঋণের টাকা বিদেশে পাঠানোর মতো ভিত্তিহীন দাবিগুলো প্রত্যাখ্যান করছে," ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
এতে বলা হয় "বসুন্ধরা গ্রুপ সরকারি অবকাঠামো প্রকল্প, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, শেয়ার বাজার জালিয়াতি, ব্যাংকের ব্যবহার করে সরকারি অর্থের অপব্যবহার কিংবা অর্থ পাচারের মতো কর্মকাণ্ডে কখনোই নিজেকে জড়িত করেনি। গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের সদস্যরা কখনো রাজনীতির সাথেও জড়িত হননি। বরং দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে এই গ্রুপ উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে আসছে"।
বাংলা স্কুপ/ডেস্ক/এসকে
আন্দোলনের মুখে গত পাঁচই অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পাঁচই সেপ্টেম্বরে পুলিশের সিআইডি বসুন্ধরা চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের ঘোষণা দেয়।
সিআইডির ওই বিজ্ঞপ্তিতে তখন সায়েম সোবহান আনভীরকে 'দেশের সোনা চোরাচালান সিন্ডিকেটের অন্যতম নিয়ন্ত্রক' বলে উল্লেখ করা হয়েছিলো।
গত বাইশে জুলাই সরকার বিরোধী তীব্র গণআন্দোলনের সময় তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি সংহতি প্রকাশ করে যেসব ব্যবসায়ী আলোচনায় এসেছিলেন তাদের মধ্যে এই গ্রুপের মালিক আহমেদ আকবর সোবহানও ছিলেন।
শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের সভায় আন্দোলনকারীদের ইঙ্গিত করে তখন তিনি বলেছিলেন, “আমাদের এই সন্ত্রাসী ও জঙ্গি বাহিনী ধ্বংস করতে হবে। এ জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে”।
ঢাকায় দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম বিবিসি বাংলাকে বলেছেন দুদক মি. সোবহান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিদেশে থাকা সম্পত্তির বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে।
দুদকের আবেদনের প্রেক্ষাপটে আদালত ইতোমধ্যেই বসুন্ধরার মালিকদের বিদেশে থাকা সম্পদ জব্দ কিংবা অবরুদ্ধের নির্দেশ দিয়েছে।
এছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল বা সিআইসিও বসুন্ধরাসহ কয়েকটি শিল্প গোষ্ঠীর বিষয়ে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও কর ফাঁকির বিষয়ে আলাদা করে অনুসন্ধান শুরু করছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
"আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে যা হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন, কাল্পনিক ও সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। এটা সম্পূর্ণ প্রতিহিংসাও হতে পারে। আমরা এর সবই আইনি ভাবে মোকাবিলা করবো," বিবিসি বাংলাকে বলেছেন তিনি।
বসুন্ধরা গ্রুপকে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প গোষ্ঠী হিসেবে মনে করা হয়। এর ওয়েবসাইটে থাকা তথ্য অনুযায়ী ১৯৮৭ সালে আবাসন ব্যবসার মাধ্যমে এর গোড়াপত্তন হয়েছিলো। পরে সিমেন্ট, শিপিং, মিডিয়া, টিস্যু পেপার, নিত্য পণ্য ও ক্রীড়াসহ বিভিন্ন খাতে তারা তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছে।
সিআইডি, সিআইসি ও দুদক অনুসন্ধান শুরুর পর অক্টোবরের শুরুর দিকে বসুন্ধরা গ্রুপের প্রধান আহমেদ আকবর সোবহান প্রধান উপদেষ্টার কাছে চিঠি দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ‘মানহানিকর বিবৃতি ও প্রোপাগান্ডা’ বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়ার অনুরোধ করেছেন বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে।
বাংলাদেশে ব্যবসায়ীদের মধ্যে বসুন্ধরা গ্রুপের মালিক আহমেদ আকবর সোবহান ও তার সন্তানদের প্রভাবশালী হিসেবে মনে করা হয়। গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে তাদের সখ্যতার বিষয়টিও সামনে এসেছে। বিভিন্ন সময় নানা ঘটনায় আলোচনায় এসেছেন এ পরিবারের সদস্যরা।
বিদেশে সম্পদ জব্দের আদেশ আদালতের
মীর আহমেদ আলী সালাম বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত মি. সোবহান ও তার পরিবারের আট জনের বিদেশে যেসব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ আছে সেগুলো জব্দ ও অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছে।
গত একুশে নভেম্বর আদালত এ নির্দেশ দিলেও এটি প্রকাশ্যে এসেছে সম্প্রতি। এর আগে ২০শে নভেম্বর দুদক আদালতে আবেদন করেছিলো।
দুদক আদালতকে এই আটজনের ব্যাংক লেনদেনের তথ্য, সম্পত্তি ক্রয় এবং ১৪৩ কোটি টাকা বিনিয়োগ সম্পর্কিত তথ্য দিয়ে বলেছেন মি. সোবহানের পরিবারের সদস্যরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি ছাড়াই বিদেশে টাকা পাঠিয়েছেন।
“তাদের ব্যাংক হিসেব থেকে টাকা ট্রান্সফার হয়েছে। তবে এটি হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়াই। আদালতের আদেশ পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হবে,” বিবিসি বাংলাকে বলেছেন মি. সালাম।
তিনি বলেন কোম্পানির নামে ঋণ নিয়ে সেই ঋণের একটি অংশ বিদেশে পাচার করে সেখানে সম্পদ ক্রয় ও বিনিয়োগ করা হয়েছে।
আদালত সম্পদ জব্দের আদেশের কপি দ্রুত সুইজারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, সাইপ্রাসসহ কয়েকটি দেশে এবং ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কাছে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে।
আদালতে দুদক যে আবেদন করেছে তাতে বলা হয়েছে সায়েম সোবহান আনভীর ও তার স্ত্রী স্লোভাকিয়ার নাগরিকত্ব নিয়েছেন এবং এ জন্য তারা সেখানে মোট ৫০ লাখ ইউরো বিনিয়োগ করেছেন।
অন্যদিকে মি. আনভীরের পিতা আহমেদ আকবর সোবহান ও মাতা আফরোজা বেগম অন্তত তিন কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ক্যারিবীয় দ্বীপরাষ্ট্র সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিসের নাগরিকত্ব নিয়েছেন বলে উল্লেখ করেছে দুদক।
দুদকের আবেদনে আরও বলা হয়, মি. সোবহানের পরিবারের আট সদস্য বিভিন্ন দেশের ১৯টি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছেন। তার আরেক সন্তান সাফওয়ান সোবহান ও তার স্ত্রী সোনিয়া ফেরদৌসী সোবহান সংযুক্ত আরব আমিরাতের হাবিব ব্যাংক ও সাইপ্রাসে ব্যাংকে হিসাব খুলে অবৈধ অর্থ লেনদেন করেন।
এর আগে ৬ই অক্টোবর মি. সোবহান ও পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
পরে একুশে অক্টোবর মি. সোবহানসহ পরিবারের আট সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত। যদিও তার আগেই সায়েম সোবহান আনভীরসহ কয়েকজন বিদেশে চলে গেছেন বলে খবর এসেছে সংবাদ মাধ্যমে।
ব্রিটেনে সম্পত্তি নিয়ে আলোচনা
বসুন্ধরা গ্রুপ এবার নতুন করে আলোচনায় এসেছে ব্রিটিশ পত্রিকা গার্ডিয়ানের একটি রিপোর্টের কারণে। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে মি. সোবহান ও তার সন্তানরা অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে ব্রিটেনে তের মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের সম্পদের মালিক। এছাড়া ফরাসী স্টাইলে আরেকটি ম্যানশন তারা সেখানে তৈরি করেছেন।
ওই রিপোর্টে অবজারভার ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের একটি অনুসন্ধানকে উদ্ধৃত করে বলা হয় যে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রীরাই শুধু ব্রিটেনে প্রোপার্টি কিনেন নি, বরং কিছু প্রভাবশালী ব্যবসায়ীও একই কাজ করেছেন ।
এর মধ্যে সারে এলাকায় মূল্যবান একটি এস্টেট কিনেছেন মি. সোবহানের পরিবার। ওই এস্টেটের সামনে একই নাম একটি গলফ কোর্সও আছে। অবশ্য সেটিও মি. সোবহানের পরিবারের কি-না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
গার্ডিয়ান বলছে ওই এলাকায় দুটি বড় সম্পদের মালিক তারা। এর মূল্য তের মিলিয়ন পাউন্ড। ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডস এর নিবন্ধিত কোম্পানির মাধ্যমে এগুলো কেনা হয়েছে। এছাড়া ফ্রেঞ্চ স্টাইলের আরেকটি ম্যানশন এখন নির্মাণাধীন রয়েছে। অবজারভার ওই এলাকাটি ঘুরে এসেছে।
এছাড়া সিঙ্গাপুরের ঠিকানা ব্যবহার করে অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে সাড়ে পাঁচ মিলিয়ন পাউন্ডের চেলসি ওয়াটারফ্রন্ট প্রোপার্টি কিনেছেন মি. সোবহানের এক ছেলে।
মি. সোবহানের ছেলে সাফওয়ান সোবহান তার নিজের ও পরিবারের পক্ষ থেকে গার্ডিয়ানকে বলেছেন ‘যে কোন অনিয়মের অভিযোগ তারা শক্তভাবে প্রত্যাখ্যান করছে এবং এসব অভিযোগের বিরুদ্ধে তারা দৃঢ়ভাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করবে’।
‘আমরা মনে করি এই তদন্ত আইনি দিক থেকে দুর্বল বলে প্রতীয়মান হবে এবং এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত,” বলেছেন তিনি। তবে তিনি দুবাই ও সিঙ্গাপুরকে ব্যবহার করে যুক্তরাজ্যে সম্পদ ক্রয়ের বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি।
গার্ডিয়ানের এই রিপোর্ট বিবিসিসহ বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর গত কয়েকদিন এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছিলো।
এর মধ্যেই চলতি মাসের শুরুতে সোবহান পরিবারের সদস্যদের বিদেশে থাকা সম্পদ জব্দ করতে দেয়া আদালতের আদেশ সামনে এলো।
সিআইডি যা বলেছিলো
সিআইডি গত পাঁচই সেপ্টেম্বর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায় যে আহমেদ আকবর সোবহান ও সায়েম সোবহান আনভীরসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অর্থপাচার, জালিয়াতি, প্রতারণা, শুল্ক ফাঁকিসহ বিভিন্ন অভিযোগ তারা অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বসুন্ধরা গ্রুপ পর্যাপ্ত জামানত না রেখে প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে বিঘাপ্রতি ২০-২৫ লাখ টাকায় কেনা জমি কাঠাপ্রতি তিন কোটি টাকা দাম দেখিয়ে ৪২ হাজার কোটি টাকারও বেশি ঋণ নিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় সিআইডির ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
“এর বেশিরভাগ অর্থ পাচার করা হয়েছে দুবাই, সিঙ্গাপুর, সাইপ্রাস, লন্ডন, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে। বসুন্ধরা গ্রুপের সিঙ্গাপুর অফিস দেখাশোনা করছেন শাহ আলমের বড় ছেলে সাদাত সোবহান তানভীর। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে একের পর এক প্রকল্প দেখিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিলেও সেসব ঋণ পরিশোধ না করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে,” সিআইডি তার বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করে।
এতে আরো বলা হয়, “রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই ক্ষমতা ও অর্থের বলে জনসাধারণের ও সরকারি সম্পত্তি যেমন খাল, বিল, নদী, খাসজমি, পতিত ভূমি, কবরস্থান, বধ্যভূমি ইত্যাদি ভরাট করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে”।
এছাড়া বসুন্ধরা গ্রুপের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি, শুল্ক ফাঁকি, ভ্যাট ফাঁকি, আন্ডার ইনভয়েসিং/ওভার ইনভয়েসিং করে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার সংক্রান্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিআইডি মানিলন্ডারিং অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানানো হয়েছিলো সেই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
অনুসন্ধানের অগ্রগতি কতটা হলো জানতে চাইলে সংস্থাটির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকদের বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম চলমান আছে।
দুদক যা করছে
দুর্নীতি দমন কমিশনের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম জানিয়েছেন মি. সোবহান ও তার পরিবারের সদস্যদের দেশের বাইরে থাকা সম্পত্তির বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।
“বসুন্ধরা গ্রুপের মালিক ও তার পরিবারের সদস্যরা বিদেশে টাকা পাঠানোর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি নেননি। কিন্তু তাদের টাকা স্থানান্তর হয়েছে এবং তারা কোম্পানি থেকে ঋণ নিয়ে সেই টাকার একাংশ বিদেশে বিনিয়োগ করেছেন। এসব বিষয় নিয়ে অনুসন্ধান দল কাজ করছে,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
মি. আলী জানিয়েছেন অনুসন্ধান রিপোর্ট দুদকে আসার পর সিদ্ধান্ত হবে বসুন্ধরা গ্রুপের মালিক ও তার পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে কোন ধরনের মামলা হবে বা অর্থ পাচারের মামলা আলাদা করে করা হবে কি-না।
বসুন্ধরা গ্রুপ আরও যা বলছে
সরকারের বিভিন্ন সংস্থার নেয়া পদক্ষেপের বিষয়ে বসুন্ধরা গ্রুপ এক বিবৃতিতে বলছে বিদেশে সম্পদ জব্দ নিয়ে যেসব খবর প্রকাশিত হয়েছে তা ভুল এবং এতে সঠিক তথ্যের ঘাটতি আছে।
" বসুন্ধরা গ্রুপ এর চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যাংক ঋণ যথাযথ ব্যবহার না করে সম্পদ অর্জন এবং ঋণের টাকা বিদেশে পাঠানোর মতো ভিত্তিহীন দাবিগুলো প্রত্যাখ্যান করছে," ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
এতে বলা হয় "বসুন্ধরা গ্রুপ সরকারি অবকাঠামো প্রকল্প, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, শেয়ার বাজার জালিয়াতি, ব্যাংকের ব্যবহার করে সরকারি অর্থের অপব্যবহার কিংবা অর্থ পাচারের মতো কর্মকাণ্ডে কখনোই নিজেকে জড়িত করেনি। গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের সদস্যরা কখনো রাজনীতির সাথেও জড়িত হননি। বরং দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে এই গ্রুপ উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে আসছে"।
বাংলা স্কুপ/ডেস্ক/এসকে