চারদিক কুয়াশাচ্ছন্ন। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকায় সূর্যের উত্তাপও তেমন নেই। পঞ্জিকা অনুযায়ী শীতের ঋতু না এলেও প্রকৃতিতে শীত জেঁকে বসেছে। তীব্রতা বাড়িয়ে দিচ্ছে হিমেল হাওয়া। সেই হিমেল হাওয়ার মাঝে সারি সারি সাজানো চুলোতে জ্বলছে কাঠের আগুন। কড়াইয়ের গরম তেলে আর মাটির তাওয়াতে তৈরি হচ্ছে চিতই, ভাপা, পুলি, পাটিসাপটাসহ নানান পদের পিঠা। এমন দৃশ্য পুরো শীতজুড়েই স্থান করে নেয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে।
এই আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের দরিদ্র নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীও উদ্যোক্তা হিসেবে পিঠার দোকান পরিচালনা করছেন। এ ছাড়া এই আয়োজন ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তন কেন্দ্রের (টিএসসি) মাঠ হয়ে উঠেছে উৎসবমুখর।
বাঙালির ঐতিহ্য অনুযায়ী শীত এলেই ঘরে ঘরে পিঠা বানানোর ধুম পড়ে যায়। মায়ের হাতে পরম যত্নে বানানো পিঠার স্বাদ নেয় সন্তানসহ পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু ব্যতিক্রম ঘটে পরিবার থেকে দূরে থাকা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে। তবে পরিবারের সঙ্গে থাকতে না পারলেও শীতের শুরুতে পিঠার স্বাদ আস্বাদন করতে পারেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কিছু তরুণ উদ্যোক্তা ও স্থানীয় কয়েকজন নারীর বদৌলতে তা সম্ভব হয়।
ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল স্কুল মাঠ, খালেদা জিয়া ও রোকেয়া হলের সামনে পিঠার দোকান বসলেও সবচেয়ে বেশি জমজমাট টিএসসি মাঠে। শীত আসতে না আসতেই এই মাঠে শুরু হয় হরেক রকম শীতকালীন পিঠা বিক্রি। যা শীতের অধিকাংশ সময়জুড়ে চলে। আর এসব দোকানের ধোঁয়া ওঠা গরম গরম পিঠা খেতে খেতে জমে ওঠে পিঠাপ্রেমী শিক্ষার্থীদের আড্ডা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পিঠাকুঞ্জ, পিঠা বিলাস, আরইউ পিঠার স্বর্গ, মাসুম আলীর পিঠা ঘরসহ বিভিন্ন নান্দনিক নামের পিঠার দোকানগুলোতে তৈরি হচ্ছে বাহারি পদের পিঠা। এর মধ্যে রয়েছে চিতই পিঠা, ভাপা পিঠা, পাটিসাপটা, নারকেলের পিঠা, পুলি পিঠা, তেলের পিঠা (পাকোয়ান) সহ হরেক রকমের পিঠা। পাশেই সবুজ ঘাসের ওপর পাটি, টুল-চেয়ারে শিক্ষার্থীদের আড্ডার আসরে গরম গরম পিঠা পৌঁছে দিচ্ছেন দোকানে কর্মরত শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা। চিংড়ি, মাছের শুঁটকি, বেগুন, কাঁচামরিচ, ধনিয়াপাতা, কালোজিরাসহ হরেক রকমের ভর্তার প্লেট সাজিয়ে দিচ্ছেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী আছিয়া খাতুন বলেন, ‘শীতকালে গ্রামাঞ্চলে পিঠাপুলির একটা আমেজ থাকে। বাসায় মা-চাচিরা বিভিন্ন ধরনের পিঠা বানায়। তবে বাসার বাইরে থাকায় সেভাবে মায়ের হাতে বানানো পিঠা খেতে পারি না। যদিও স্বাদে সবসময় মায়ের হাতে বানানো পিঠাই সবচেয়ে সুস্বাদু, কিন্তু মন্দের ভালো হলেও এখান থেকে বাহারি পিঠার স্বাদ নিতে পারি আমরা। এই পিঠাগুলো অন্য জায়গার চেয়ে একটু বেশিই সুস্বাদু। আর এখনকার অধিকাংশ দোকানই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত। তারা যে এই বয়সে উদ্যোক্তা হয়ে উঠছে, তাদের আয়ের একটা উৎস হয়েছে এটা ভালো লাগার বিষয়।’
টিএসসি চত্বরে পিঠা তৈরি করেন বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা বুধপাড়ার বাসিন্দা ফাহিমা আক্তার। পিঠা বানিয়ে নিয়মিত রোজগারের মাধ্যমে তার পরিবারে অনেকটা আর্থিক সচ্ছলতা এসেছে বলে জানান। ফাহিমা আক্তার বলেন, ‘আমরা এখানে নানা রকমের পিঠা বানাই। এর জন্য মামারা (শিক্ষার্থীরা) আমাদের প্রতিদিন ২০০ টাকা করে দেয়। এই কাজ করে আমাদের পরিবার কিছুটা সচ্ছল হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি একটি পিঠার দোকান পরিচালনা করেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায়। তার এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমর উদ্যোক্তা হওয়ার ইচ্ছে। বলা যায় এটা তারই একটি ধাপ মাত্র। আমার এই দোকানে এখন পর্যন্ত লোকসান হয়নি।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসজুড়ে এই পিঠার দোকানগুলো যুক্ত করেছে নতুন নান্দনিকতা। সারাদিন ক্লাস-পরীক্ষার বাইরে শিক্ষার্থীদের প্রাণের এক আড্ডাস্থলও হয়ে উঠেছে এই পিঠার দোকানগুলো। আর এই আয়োজন চলবে শীতের শেষভাগ পর্যন্ত।
বাংলা স্কুপ/ প্রতিনিধি/ এনআইএন/এসকে
এই আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের দরিদ্র নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীও উদ্যোক্তা হিসেবে পিঠার দোকান পরিচালনা করছেন। এ ছাড়া এই আয়োজন ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তন কেন্দ্রের (টিএসসি) মাঠ হয়ে উঠেছে উৎসবমুখর।
বাঙালির ঐতিহ্য অনুযায়ী শীত এলেই ঘরে ঘরে পিঠা বানানোর ধুম পড়ে যায়। মায়ের হাতে পরম যত্নে বানানো পিঠার স্বাদ নেয় সন্তানসহ পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু ব্যতিক্রম ঘটে পরিবার থেকে দূরে থাকা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে। তবে পরিবারের সঙ্গে থাকতে না পারলেও শীতের শুরুতে পিঠার স্বাদ আস্বাদন করতে পারেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কিছু তরুণ উদ্যোক্তা ও স্থানীয় কয়েকজন নারীর বদৌলতে তা সম্ভব হয়।
ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল স্কুল মাঠ, খালেদা জিয়া ও রোকেয়া হলের সামনে পিঠার দোকান বসলেও সবচেয়ে বেশি জমজমাট টিএসসি মাঠে। শীত আসতে না আসতেই এই মাঠে শুরু হয় হরেক রকম শীতকালীন পিঠা বিক্রি। যা শীতের অধিকাংশ সময়জুড়ে চলে। আর এসব দোকানের ধোঁয়া ওঠা গরম গরম পিঠা খেতে খেতে জমে ওঠে পিঠাপ্রেমী শিক্ষার্থীদের আড্ডা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পিঠাকুঞ্জ, পিঠা বিলাস, আরইউ পিঠার স্বর্গ, মাসুম আলীর পিঠা ঘরসহ বিভিন্ন নান্দনিক নামের পিঠার দোকানগুলোতে তৈরি হচ্ছে বাহারি পদের পিঠা। এর মধ্যে রয়েছে চিতই পিঠা, ভাপা পিঠা, পাটিসাপটা, নারকেলের পিঠা, পুলি পিঠা, তেলের পিঠা (পাকোয়ান) সহ হরেক রকমের পিঠা। পাশেই সবুজ ঘাসের ওপর পাটি, টুল-চেয়ারে শিক্ষার্থীদের আড্ডার আসরে গরম গরম পিঠা পৌঁছে দিচ্ছেন দোকানে কর্মরত শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা। চিংড়ি, মাছের শুঁটকি, বেগুন, কাঁচামরিচ, ধনিয়াপাতা, কালোজিরাসহ হরেক রকমের ভর্তার প্লেট সাজিয়ে দিচ্ছেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী আছিয়া খাতুন বলেন, ‘শীতকালে গ্রামাঞ্চলে পিঠাপুলির একটা আমেজ থাকে। বাসায় মা-চাচিরা বিভিন্ন ধরনের পিঠা বানায়। তবে বাসার বাইরে থাকায় সেভাবে মায়ের হাতে বানানো পিঠা খেতে পারি না। যদিও স্বাদে সবসময় মায়ের হাতে বানানো পিঠাই সবচেয়ে সুস্বাদু, কিন্তু মন্দের ভালো হলেও এখান থেকে বাহারি পিঠার স্বাদ নিতে পারি আমরা। এই পিঠাগুলো অন্য জায়গার চেয়ে একটু বেশিই সুস্বাদু। আর এখনকার অধিকাংশ দোকানই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত। তারা যে এই বয়সে উদ্যোক্তা হয়ে উঠছে, তাদের আয়ের একটা উৎস হয়েছে এটা ভালো লাগার বিষয়।’
টিএসসি চত্বরে পিঠা তৈরি করেন বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা বুধপাড়ার বাসিন্দা ফাহিমা আক্তার। পিঠা বানিয়ে নিয়মিত রোজগারের মাধ্যমে তার পরিবারে অনেকটা আর্থিক সচ্ছলতা এসেছে বলে জানান। ফাহিমা আক্তার বলেন, ‘আমরা এখানে নানা রকমের পিঠা বানাই। এর জন্য মামারা (শিক্ষার্থীরা) আমাদের প্রতিদিন ২০০ টাকা করে দেয়। এই কাজ করে আমাদের পরিবার কিছুটা সচ্ছল হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি একটি পিঠার দোকান পরিচালনা করেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায়। তার এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমর উদ্যোক্তা হওয়ার ইচ্ছে। বলা যায় এটা তারই একটি ধাপ মাত্র। আমার এই দোকানে এখন পর্যন্ত লোকসান হয়নি।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসজুড়ে এই পিঠার দোকানগুলো যুক্ত করেছে নতুন নান্দনিকতা। সারাদিন ক্লাস-পরীক্ষার বাইরে শিক্ষার্থীদের প্রাণের এক আড্ডাস্থলও হয়ে উঠেছে এই পিঠার দোকানগুলো। আর এই আয়োজন চলবে শীতের শেষভাগ পর্যন্ত।
বাংলা স্কুপ/ প্রতিনিধি/ এনআইএন/এসকে