
একেবারে ছাপা অক্ষরের মতো ১০ মাসে ৩০ পারা কোরআন হাতে লিখে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছেন চট্টগ্রামের জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসার ফাজিল ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী মুহাম্মদ সালেহ উদ্দিন সাব্বির। তার বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পূর্বকোদালা রাইখালী গ্রামে।
সম্প্রতি তার হাতে লেখা ৩০ পারা পবিত্র কোরআন শরীফের প্রথম কপি তারই শিক্ষালয় জামেয়ার অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা আব্দুল আলিম রিজভীর হাতে তুলে দেন সালেহ উদ্দিন সাব্বির। এসময় অধ্যক্ষ মহান আল্লাহ্ তায়ালার দরবারে সাব্বিরের জন্য বিশেষ দোয়া করেন।
অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা আব্দুল আলিম রিজভী জানান, যে সময়ে তরুণরা বিভিন্ন ডিভাইসে ঢুবে থাকে, ফেসবুক এক্সসহ বিভিন্ন সামাজিক সাইট স্ক্রলে মত্ত, ঠিক সেই সময়ে উজ্জ্বল ব্যতিক্রম সালেহ উদ্দিন সাব্বির। বয়সের সেই উত্তাল সময়ে ৩০ পারা পবিত্র কোরআন শরীফ স্বহস্তে লিখে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছেন মুহাম্মদ সালেহ উদ্দিন সাব্বির। লেখাটাও হয়েছে একেবারে ছাপা অক্ষরের মতো।
৩০ পারা কোরআন শরীফ হাতে লেখার ইচ্ছে কেন জাগল জিজ্ঞেস করলে সাব্বির বলেন, কোরআন শরীফ হলো মহান আল্লাহ তায়ালার কালাম। যা আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর নাজিল হওয়ার মাধ্যমে আমরা পেয়েছি। এই কালামে পাক আল্লাহর রাসুলের সাহাবায়ে কেরামগণ অত্যন্ত কষ্ট করে আমাদের জন্য লিপিবদ্ধ করে গেছেন।
এমন সব পবিত্র উপলব্ধি থেকে এবং অন্যদের মতো ফেসবুকে আড্ডায় অযথা সময় নষ্ট না করে ভালো কিছু করবার পবিত্র মানসে সর্বোপরি মহান আল্লাহর রহমত এবং প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শাফায়াত পাওয়ার জন্য ৩০ পারা কোরআন শরীফ অত্যন্ত সাধনার মাধ্যমে লেখার জন্য মনস্থির করি।
পরবর্তীতে মহান আল্লাহর একান্ত দয়ায় প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উসিলায় মা বাবা উস্তাদদের দোয়ায় পুরো কোরআন শরীফ স্বহস্তে লিখতে সফল হই। আর এতে যদি মহান আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলের বিন্দুমাত্র সন্তুষ্টি হাসিল হয়, তবেই আমার এই কষ্ট সার্থক হবে।
কোন সময়ে লেখা হতো জিজ্ঞেস করলে সাব্বির জানায়, মাদরাসার ক্লাস এবং নিজের পড়ালেখার ফাঁকে ফাঁকে পবিত্র কোরআন শরীফ স্বহস্তে লিখতাম। যাতে মাদরাসার ক্লাসের পড়াশোনার কোনো প্রকার ব্যাঘাত না ঘটে। পুরো কোরআন শরীফ লিখতে ১০ মাসের মতো সময় লেগেছে। সাব্বির জানায়, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে শুরু করে পুরো কোরআন শরীফ স্বহস্তে লেখা শেষ করেন অক্টোবর মাসের ৩১ তারিখ। কোরআন শরীফ লিখতে কলম ব্যবহার করেছেন মোট ৫৫টির মতো। পৃষ্ঠা লেগেছে ৬১১। প্রতিবার কোরআন শরীফ লিখতে বসার আগে অজু করতেন এবং প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দরূদ শরীফ পড়ে লেখা শুরু করতেন। যাতে লেখার মধ্যে বরকত পাওয়া যায়।
সাব্বির আরও বলেন, পুরো কোরআন শরীফ স্বহস্তে লিখতে এবং এই মহৎ কাজ সম্পাদনে যিনি সার্বিক দিকনির্দেশনা ও উৎসাহ প্রদান করেছেন তিনি হলেন আমার শিক্ষক সীতাকুন্ড মাদরাসা-এ মুহাম্মদীয়া ইসলামিয়া দরসে নেজামী বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক মুহাম্মদ মোশারফ হোসাইন। সাব্বির বলেন, হুজুরের নির্দেশনা উৎসাহ না পেলে এত সহজে পুরো কোরআন শরীফ স্বহস্তে লেখা সম্ভব হতো না। সেই জন্য হুজুরের প্রতি কৃতজ্ঞ। ভবিষ্যতে সহীহ বুখারী শরিফও স্বহস্তে লেখার ইচ্ছে পোষণ করেন দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করেন সাব্বির।
চট্টগ্রামের বিশিষ্ট সংগঠক ও কলামিস্ট যিকরু হাবিবীল ওয়াহেদ জানান, সাব্বির ছোটবেলা থেকেই ব্যতিক্রম। লেখাপড়ার পাশাপাশি সৃজনশীল ভালো কিছু করতেই ভালোবাসতেন সবসময়। অন্যান্যদের মতো ফেসবুকে বুঁদ হয়ে পড়ে থাকা কিংবা অযথা আড্ডা দেওয়া থেকে বিরত থাকত সর্বদা। ভালো সৃজনশীল কিছু করতেই সবসময় উদগ্রীব থাকত সাব্বির।
সাব্বির রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পূর্বকোদালা রাইখালী গ্রামে বাবা শেখ মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন এবং মাতা গুলবাহার বেগমের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। তিন ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট সাব্বির। সাব্বিরের প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি রাঙ্গুনিয়া চন্দ্রঘোনা তৈয়্যবীয়া মাদরাসায়। তৈয়্যবীয়া মাদরাসা থেকে দাখিল পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি হন কাপ্তাই রাস্তার মাথা আল আমিন বারিয়া কামিল মাদরাসায়। ওখানে কৃতিত্বের সঙ্গে আলিম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হন দেশসেরা মাদরাসা জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়ায়। বর্তমানে সে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসায় ফাজিল ১ম বর্ষে অধ্যয়নরত।
বাংলা স্কুপ/ প্রতিনিধি/ এনআইএন/এসকে
সম্প্রতি তার হাতে লেখা ৩০ পারা পবিত্র কোরআন শরীফের প্রথম কপি তারই শিক্ষালয় জামেয়ার অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা আব্দুল আলিম রিজভীর হাতে তুলে দেন সালেহ উদ্দিন সাব্বির। এসময় অধ্যক্ষ মহান আল্লাহ্ তায়ালার দরবারে সাব্বিরের জন্য বিশেষ দোয়া করেন।
অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা আব্দুল আলিম রিজভী জানান, যে সময়ে তরুণরা বিভিন্ন ডিভাইসে ঢুবে থাকে, ফেসবুক এক্সসহ বিভিন্ন সামাজিক সাইট স্ক্রলে মত্ত, ঠিক সেই সময়ে উজ্জ্বল ব্যতিক্রম সালেহ উদ্দিন সাব্বির। বয়সের সেই উত্তাল সময়ে ৩০ পারা পবিত্র কোরআন শরীফ স্বহস্তে লিখে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছেন মুহাম্মদ সালেহ উদ্দিন সাব্বির। লেখাটাও হয়েছে একেবারে ছাপা অক্ষরের মতো।
৩০ পারা কোরআন শরীফ হাতে লেখার ইচ্ছে কেন জাগল জিজ্ঞেস করলে সাব্বির বলেন, কোরআন শরীফ হলো মহান আল্লাহ তায়ালার কালাম। যা আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর নাজিল হওয়ার মাধ্যমে আমরা পেয়েছি। এই কালামে পাক আল্লাহর রাসুলের সাহাবায়ে কেরামগণ অত্যন্ত কষ্ট করে আমাদের জন্য লিপিবদ্ধ করে গেছেন।
এমন সব পবিত্র উপলব্ধি থেকে এবং অন্যদের মতো ফেসবুকে আড্ডায় অযথা সময় নষ্ট না করে ভালো কিছু করবার পবিত্র মানসে সর্বোপরি মহান আল্লাহর রহমত এবং প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শাফায়াত পাওয়ার জন্য ৩০ পারা কোরআন শরীফ অত্যন্ত সাধনার মাধ্যমে লেখার জন্য মনস্থির করি।
পরবর্তীতে মহান আল্লাহর একান্ত দয়ায় প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উসিলায় মা বাবা উস্তাদদের দোয়ায় পুরো কোরআন শরীফ স্বহস্তে লিখতে সফল হই। আর এতে যদি মহান আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলের বিন্দুমাত্র সন্তুষ্টি হাসিল হয়, তবেই আমার এই কষ্ট সার্থক হবে।
কোন সময়ে লেখা হতো জিজ্ঞেস করলে সাব্বির জানায়, মাদরাসার ক্লাস এবং নিজের পড়ালেখার ফাঁকে ফাঁকে পবিত্র কোরআন শরীফ স্বহস্তে লিখতাম। যাতে মাদরাসার ক্লাসের পড়াশোনার কোনো প্রকার ব্যাঘাত না ঘটে। পুরো কোরআন শরীফ লিখতে ১০ মাসের মতো সময় লেগেছে। সাব্বির জানায়, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে শুরু করে পুরো কোরআন শরীফ স্বহস্তে লেখা শেষ করেন অক্টোবর মাসের ৩১ তারিখ। কোরআন শরীফ লিখতে কলম ব্যবহার করেছেন মোট ৫৫টির মতো। পৃষ্ঠা লেগেছে ৬১১। প্রতিবার কোরআন শরীফ লিখতে বসার আগে অজু করতেন এবং প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দরূদ শরীফ পড়ে লেখা শুরু করতেন। যাতে লেখার মধ্যে বরকত পাওয়া যায়।
সাব্বির আরও বলেন, পুরো কোরআন শরীফ স্বহস্তে লিখতে এবং এই মহৎ কাজ সম্পাদনে যিনি সার্বিক দিকনির্দেশনা ও উৎসাহ প্রদান করেছেন তিনি হলেন আমার শিক্ষক সীতাকুন্ড মাদরাসা-এ মুহাম্মদীয়া ইসলামিয়া দরসে নেজামী বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক মুহাম্মদ মোশারফ হোসাইন। সাব্বির বলেন, হুজুরের নির্দেশনা উৎসাহ না পেলে এত সহজে পুরো কোরআন শরীফ স্বহস্তে লেখা সম্ভব হতো না। সেই জন্য হুজুরের প্রতি কৃতজ্ঞ। ভবিষ্যতে সহীহ বুখারী শরিফও স্বহস্তে লেখার ইচ্ছে পোষণ করেন দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করেন সাব্বির।
চট্টগ্রামের বিশিষ্ট সংগঠক ও কলামিস্ট যিকরু হাবিবীল ওয়াহেদ জানান, সাব্বির ছোটবেলা থেকেই ব্যতিক্রম। লেখাপড়ার পাশাপাশি সৃজনশীল ভালো কিছু করতেই ভালোবাসতেন সবসময়। অন্যান্যদের মতো ফেসবুকে বুঁদ হয়ে পড়ে থাকা কিংবা অযথা আড্ডা দেওয়া থেকে বিরত থাকত সর্বদা। ভালো সৃজনশীল কিছু করতেই সবসময় উদগ্রীব থাকত সাব্বির।
সাব্বির রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পূর্বকোদালা রাইখালী গ্রামে বাবা শেখ মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন এবং মাতা গুলবাহার বেগমের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। তিন ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট সাব্বির। সাব্বিরের প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি রাঙ্গুনিয়া চন্দ্রঘোনা তৈয়্যবীয়া মাদরাসায়। তৈয়্যবীয়া মাদরাসা থেকে দাখিল পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি হন কাপ্তাই রাস্তার মাথা আল আমিন বারিয়া কামিল মাদরাসায়। ওখানে কৃতিত্বের সঙ্গে আলিম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হন দেশসেরা মাদরাসা জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়ায়। বর্তমানে সে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসায় ফাজিল ১ম বর্ষে অধ্যয়নরত।
বাংলা স্কুপ/ প্রতিনিধি/ এনআইএন/এসকে