
বিস্তীর্ণ পদ্মা কিছুদিন আগেই ছিল পানিতে টইটম্বুর। সেই পদ্মায় এখন বিস্তীর্ণ চর জেগেছে। তাতে ফলছে নানা জাতের ফসল। সবুজের বিপ্লব ঘটেছে চরাঞ্চলজুড়ে। রাজশাহীর পদ্মা নদীর বিভিন্ন চরে ১২ ধরনের ফসলের চাষ হয়। জেলার ১৪টি চরের ১৪ হাজার ৮৫৩ হেক্টর জমিতে বছরের ৯ মাস থাকে নানান ফসল। স্বল্প খরচে এসব ফসল ফলানো আর বিক্রির ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় কৃষি অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে পদ্মার চর।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পদ্মার চরে পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ফসল চাষ শুরু হয়। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে গম, ভুট্টা ও মসুরের চাষ শুরু হয়েছে চরে। চলবে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। এভাবে টানা চলতে থাকে ফসলের চাষ। গত বছর ১০ হাজার ১৮৭ হেক্টর চর-ভূমিতে মসুর, গম, সরিষা, বিভিন্ন শাকসবজি, ভুট্টা, পিঁয়াজ, রসুন, আদা, আলু, মাসকলাই, চিনাবাদাম ও ধনেপাতার চাষ হয়।
জানা গেছে, রাজশাহীর মোট ৯ উপজেলার মধ্যে পবা, গোদাগাড়ী, চারঘাট ও বাঘায় পদ্মা নদীর চর আছে। এসব উপজেলায় চর রয়েছে ১৪টি। এর মধ্যে পবার চর মাজারদিয়াড় ও চর খিদিরপুর, গোদাগাড়ীর চর আষাড়িয়াদহ ও চর দিয়াড় মানিকচর এবং চারঘাটের টাঙ্গন উল্লেখযোগ্য। প্রায় ৫ হাজার ৮১৬ হেক্টর জমির আয়তন নিয়ে সবচেয়ে বড় চর পবার চর মাজারদিয়াড় ও চর খিদিরপুর। গত অর্থবছরে ১৪টি চরের অন্তর্ভুক্ত মোট জমি ছিল ১৪ হাজার ৮৫৩ হেক্টর। এর মধ্যে ১০ হাজার ১৮৭ হেক্টর জমিতে ফসল আবাদ হয়।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চর এলাকার ১১টি ব্লকে মোট জমি রয়েছে ১৪ হাজার ৪৪ হেক্টর। এর মধ্যে ৭ হাজার ৯৪৮ হেক্টর জমিতে ফসল আবাদ হয়ে থাকে। আর ১৫ হেক্টর জমি পতিত আছে। চরাঞ্চলের ২ হাজার ৭৯ হেক্টর জমিতে বছরে এক ফসল হয়। আর ৪ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে দুই ফসল এবং বাকি ১ হাজার ৮১৯ হেক্টর জমিতে আবাদ হচ্ছে তিনটি ফসল।
বাঘার চকরাজাপুর ইউনিয়নের আতারপাড়া চরে গিয়ে দেখা গেছে, বিস্তীর্ণ চরজুড়ে চলছে গম, মসুর ও ভুট্টার চাষ। এসব ফসল চাষে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষিরা। যদিও এই চরটির এক অংশ কুষ্টিয়ার মধ্যে পড়েছে। চরটি আবার ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা। কাঁটাতারের বেড়ার পাশে বাংলাদেশ সীমান্তে কৃষকদের নানান ফসল চাষে ব্যস্ত সময় কাটাতে দেখা গেছে। শুধু তাই নয়, এই চরের কৃষিতে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টর দিয়ে চাষ হচ্ছে জমি।
চরের রাকিব ও সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর ভালো কলাইয়ের চাষ হয়েছে। স্থানীয়ভাবে চাহিদা মিটিয়ে বাঘা ও কুষ্টিয়ার চরের কলাই রাজশাহীর বানেশ্বরে নিয়ে যাওয়া হয় বিক্রির জন্য। তারা বলেন, বর্তমানে চরের জমিতে গম, মসুর ও ভুট্টার চাষ শুরু হয়েছে। পদ্মার চরে উর্বর পলির কারণে ফসল চাষে তেমন সারের প্রয়োজন হয় না। ফলে অল্প খরচে ফসল উৎপাদন হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, চরাঞ্চলে পলিমাটির সুবিধা পাওয়া যায়, সার কম লাগে। তবে পানির সমস্যা সমাধানে ছোট ছোট পাম্প মেশিন বসালে তাদের জন্য সুবিধাজনক হবে। এতে চরাঞ্চলের অর্থনীতি আরও চাঙা হবে। এখানে একমাত্র যোগাযোগব্যবস্থা নৌকা। কৃষি ছাড়া সব ধরনের পণ্য আনা-নেওয়ার একমাত্র মাধ্যম নৌকা।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক উম্মে ছালমা বলেন, চরে প্রায় ১২ থেকে ১৩ ধরনের ফসল হয়। বর্তমানে গম, ভুট্টার চাষ চলছে। পর্যায়ক্রমে আরও ফসলের চাষ হবে। চরাঞ্চলে অর্থকরী ফসলে অনেক কৃষকের ভাগ্য বদলেছে। আমরা তাদের পরামর্শ দেওয়াসহ বিভিন্ন প্রজেক্ট আকারে কাজ চলমান রেখেছি। তাদের যে কোনো সমস্যা সমাধানে কৃষি বিভাগ কাজ করে যাবে।
বাংলা স্কুপ/ প্রতিনিধি/ এনআইএন/এসকে
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পদ্মার চরে পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ফসল চাষ শুরু হয়। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে গম, ভুট্টা ও মসুরের চাষ শুরু হয়েছে চরে। চলবে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। এভাবে টানা চলতে থাকে ফসলের চাষ। গত বছর ১০ হাজার ১৮৭ হেক্টর চর-ভূমিতে মসুর, গম, সরিষা, বিভিন্ন শাকসবজি, ভুট্টা, পিঁয়াজ, রসুন, আদা, আলু, মাসকলাই, চিনাবাদাম ও ধনেপাতার চাষ হয়।
জানা গেছে, রাজশাহীর মোট ৯ উপজেলার মধ্যে পবা, গোদাগাড়ী, চারঘাট ও বাঘায় পদ্মা নদীর চর আছে। এসব উপজেলায় চর রয়েছে ১৪টি। এর মধ্যে পবার চর মাজারদিয়াড় ও চর খিদিরপুর, গোদাগাড়ীর চর আষাড়িয়াদহ ও চর দিয়াড় মানিকচর এবং চারঘাটের টাঙ্গন উল্লেখযোগ্য। প্রায় ৫ হাজার ৮১৬ হেক্টর জমির আয়তন নিয়ে সবচেয়ে বড় চর পবার চর মাজারদিয়াড় ও চর খিদিরপুর। গত অর্থবছরে ১৪টি চরের অন্তর্ভুক্ত মোট জমি ছিল ১৪ হাজার ৮৫৩ হেক্টর। এর মধ্যে ১০ হাজার ১৮৭ হেক্টর জমিতে ফসল আবাদ হয়।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চর এলাকার ১১টি ব্লকে মোট জমি রয়েছে ১৪ হাজার ৪৪ হেক্টর। এর মধ্যে ৭ হাজার ৯৪৮ হেক্টর জমিতে ফসল আবাদ হয়ে থাকে। আর ১৫ হেক্টর জমি পতিত আছে। চরাঞ্চলের ২ হাজার ৭৯ হেক্টর জমিতে বছরে এক ফসল হয়। আর ৪ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে দুই ফসল এবং বাকি ১ হাজার ৮১৯ হেক্টর জমিতে আবাদ হচ্ছে তিনটি ফসল।
বাঘার চকরাজাপুর ইউনিয়নের আতারপাড়া চরে গিয়ে দেখা গেছে, বিস্তীর্ণ চরজুড়ে চলছে গম, মসুর ও ভুট্টার চাষ। এসব ফসল চাষে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষিরা। যদিও এই চরটির এক অংশ কুষ্টিয়ার মধ্যে পড়েছে। চরটি আবার ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা। কাঁটাতারের বেড়ার পাশে বাংলাদেশ সীমান্তে কৃষকদের নানান ফসল চাষে ব্যস্ত সময় কাটাতে দেখা গেছে। শুধু তাই নয়, এই চরের কৃষিতে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টর দিয়ে চাষ হচ্ছে জমি।
চরের রাকিব ও সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর ভালো কলাইয়ের চাষ হয়েছে। স্থানীয়ভাবে চাহিদা মিটিয়ে বাঘা ও কুষ্টিয়ার চরের কলাই রাজশাহীর বানেশ্বরে নিয়ে যাওয়া হয় বিক্রির জন্য। তারা বলেন, বর্তমানে চরের জমিতে গম, মসুর ও ভুট্টার চাষ শুরু হয়েছে। পদ্মার চরে উর্বর পলির কারণে ফসল চাষে তেমন সারের প্রয়োজন হয় না। ফলে অল্প খরচে ফসল উৎপাদন হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, চরাঞ্চলে পলিমাটির সুবিধা পাওয়া যায়, সার কম লাগে। তবে পানির সমস্যা সমাধানে ছোট ছোট পাম্প মেশিন বসালে তাদের জন্য সুবিধাজনক হবে। এতে চরাঞ্চলের অর্থনীতি আরও চাঙা হবে। এখানে একমাত্র যোগাযোগব্যবস্থা নৌকা। কৃষি ছাড়া সব ধরনের পণ্য আনা-নেওয়ার একমাত্র মাধ্যম নৌকা।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক উম্মে ছালমা বলেন, চরে প্রায় ১২ থেকে ১৩ ধরনের ফসল হয়। বর্তমানে গম, ভুট্টার চাষ চলছে। পর্যায়ক্রমে আরও ফসলের চাষ হবে। চরাঞ্চলে অর্থকরী ফসলে অনেক কৃষকের ভাগ্য বদলেছে। আমরা তাদের পরামর্শ দেওয়াসহ বিভিন্ন প্রজেক্ট আকারে কাজ চলমান রেখেছি। তাদের যে কোনো সমস্যা সমাধানে কৃষি বিভাগ কাজ করে যাবে।
বাংলা স্কুপ/ প্রতিনিধি/ এনআইএন/এসকে