আমাদের জীবন দীর্ঘ হতেই পারে। কিন্তু সব দীর্ঘ জীবনই যে মহিমান্বিত হবে কথা কিন্তু তা নয়। দীর্ঘ সে জীবন যদি ত্যাগ স্বীকারের হয়, অপরের জন্য কল্যাণকর হয়, তবে সে জীবনকে সফল বলা যায়। সে হিসেবে দীর্ঘ এবং সফল জীবনের এক জলজ্যান্ত উদাহরণ হলো ড. মাহাথির মোহাম্মদ। তাঁকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই। তিনি আধুনিক মালয়েশিয়ার স্থপতি, যিনি প্রথম দফায় দীর্ঘ ২২ বছর সফলভাবে দেশটির নেতৃত্ব দিয়ে মালয়েশিয়াকে করেছেন একটি আধুনিক ও সমৃদ্ধিশালী রাষ্ট্র।
দ্বিতীয় দফায় রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আসেন ৯৪ বছর বয়সে। তাঁর কর্মস্পৃহা এবং উদ্যম যেন তাক লাগিয়ে দেয়ার মতো ক্যারিশম্যাটিক। এখন নিরানব্বই পেরিয়ে শতবর্ষীর ঘরে পা দিতে যাওয়া জীবন্ত এ কিংবদন্তি চলছেন সাইকেল চালিয়েও। সম্প্রতি নিক্কেই এশিয়াকে দেয়া সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে তার সুস্থ থাকার রহস্যের কথা, উঠে এসেছে সুপারএজিং সমাজে এশিয়ার নেতৃত্বের ভূমিকার কথাও। বৃহৎ সে সাক্ষাৎকারের চুম্বকাংশ তুলে ধরা হলো-
প্রশ্ন: এশিয়ায় বয়স বৃদ্ধি একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। এই 'সুপারএজিং' সমাজে দেশগুলো কীভাবে এগিয়ে যেতে পারে?
মাহাথির: বয়স সময়ের উপর নির্ভর করে না। বয়স নির্ভর করে শারীরিক সুস্থতার উপর— আপনি কেমন কাজ করতে পারেন তার উপর। সেই কারণে, বয়স মানে সময় নয়; আপনি ৬০ হলে বুড়ো হয়ে যাবেন, এমন নয়। যদি কেউ ৯০ বছর বয়সেও কাজ করতে পারে এবং সক্ষম থাকে, তবে ৯০ বছর বুড়ো বয়স বলা যাবে না। এই মুহূর্তে, ৬০ বা ৬৫ বছরকে বুড়ো বয়স ধরা হয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে, অতীতে ৩০ বছর বয়সেই মানুষ বুড়ো হয়ে যেত। জুলিয়াস সিজারের সময়, নেতা ছিলেন মাত্র ৩০ বছরের, কারণ মানুষ তখন খুব কম বয়সে মারা যেত। আমাদের অবসরগ্রহণের বয়স পরিবর্তন করা উচিত। সমাজকে এটা মেনে নিতে হবে যে ৬০ বছর বয়সের মানুষ অবসর নেয়ার জন্য প্রস্তুত নয়। তাদের ৬৫ বা এমনকি ৭০ বছর বয়সে অবসর নেয়া যেতে পারে। অবসরের বয়স নির্ধারণ করা উচিত শারীরিক বয়সের উপর, শুধুমাত্র ক্রমান্বয়ে সময়ের উপর নয়। ব্যক্তিদের কাজের সক্ষমতার উপর নির্ভর করে এটি নির্ধারণ করা উচিত।
প্রশ্ন: আপনি ৭০ বছর বয়সে রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছিলেন এবং ২০১৮ সালে আবার ফিরে এলেন। কীভাবে এটি ঘটেছিল?
মাহাথির: যখন আমি ৭০-এর কোটায় ছিলাম, এবং ৮০-এর দিকে এগোচ্ছিলাম, তখন ভাবতাম ৮০ অনেক বয়স্ক বয়স। আমি মনে করেছিলাম, এই বয়সে আমি আর কাজ করতে পারব না। তবে, অবসর নেয়ার পর বুঝতে পারলাম, আমি এখনও কাজ করতে সক্ষম। আমি দেশের পরিবর্তনগুলো দেখছিলাম এবং মনে করলাম কিছু বিষয় ঠিকঠাক নয়। তখন অনেক মানুষ আমার কাছে পরামর্শের জন্য আসতে শুরু করল এবং পরবর্তীতে তারা বলল যে আমাকে ফিরে আসা উচিত। যদিও আমি ৯০ বছর বয়সে ভেবেছিলাম, "আমি বোধ হয় ফিরে যেতে পারব না," তবে তারা আমাকে অনুরোধ করল চেষ্টা করতে। আমি চেষ্টা করলাম এবং তারা আমাকে ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করল।
প্রশ্ন: ফিরে আসার বিষয়ে আপনার কোনো আফসোস আছে কি?
মাহাথির: পেছনে তাকালে মনে হয়, ২০০৩ সালে, যখন আমি ৮০-ও পূর্ণ করিনি, অবসর নেয়ার সিদ্ধান্তটি আমার ভুল ছিল। আমি ভেবেছিলাম, যে সিস্টেমগুলো আমরা তৈরি করেছি, তা দেশের উন্নয়নে সাহায্য করবে। কিন্তু আমার অবসরের পর যা ঘটেছে, তা আমার প্রত্যাশার বাইরে ছিল। আমি আশা করেছিলাম দেশ এগিয়ে যাবে, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, যারা আমার পরে এসেছে তারা দেশের উন্নয়ন নয়, নিজেদের স্বার্থে কাজ করেছে। তাই এখন মনে হয়, ২০০৩ সালে সরে দাঁড়ানো উচিত হয়নি।
প্রশ্ন: অবসরের সাথে সম্পর্কিত পেনশন সিস্টেমের বোঝা এবং তরুণদের অর্থনৈতিক বৈষম্য কীভাবে সমাধান করা যেতে পারে?
মাহাথির: আমরা মনে করি, প্রবীণ মানুষদের দ্রুত অবসর নিতে হবে, যাতে তরুণরা তাদের জায়গা নিতে পারে। কিন্তু এটি সবসময় কার্যকর নয়। উদাহরণস্বরূপ, আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট মাত্র ৩২ বছর বয়সে মারা যান — যা আজকের মানদণ্ডে খুবই কম। তবে, এখনকার সমাজে মানুষের দীর্ঘায়ু হচ্ছে, কাজ করার সময়ও দীর্ঘ হচ্ছে। ফলে শীর্ষে উঠতে সময় বেশি লাগলেও, এর পুরস্কারও অনেক বেশি হবে। মানুষের কাজের সময় যদি ৪০ বা ৪৫ বছর পর্যন্ত হয়, তাহলে অবসরগ্রহণের আগে তাদের অবদান এবং পুরস্কারও অনেক বেশি হবে।
প্রশ্ন: প্রবীণ কর্মীদের জন্য এশিয়ার দেশগুলো কীভাবে কর্মসংস্থান বাড়াতে পারে?
মাহাথির: বয়সের সঙ্গে সঙ্গে আপনি অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। আপনি অনেক বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করেন, যা হারানো মানে মূল্যবান অভিজ্ঞতা হারানো। যদি প্রবীণ মানুষদের কর্মজীবনে রাখা হয় এবং তাদের অবসর নিতে বাধ্য না করা হয়, তবে তাদের অভিজ্ঞতা থেকে দেশ উপকৃত হবে। আমি নিজে ৮০ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা নিয়ে কাজ করছি। আমার এই দীর্ঘ অভিজ্ঞতা আমাকে এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েছে যা অন্যদের কাছে নেই। প্রবীণদের অবসর নেয়ার মাধ্যমে আমরা এই সম্পদ হারাই।
প্রশ্ন: কিছু দেশ অভিবাসনের মাধ্যমে শ্রমশক্তির ঘাটতি পূরণ করার চেষ্টা করছে। এই বিষয়ে আপনার কী মতামত?
মাহাথির: ভবিষ্যতে কোনো দেশ একক জাতিগোষ্ঠীর হবে না। উদাহরণস্বরূপ, জাপান একটি একজাতীয় দেশ হতে চায়, কিন্তু এটা সবসময় ধরে রাখা সম্ভব হবে না। মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করবে। যারা অভিবাসী, তাদের মধ্যে অনেকেই তরুণ। তারা শিশুর যত্ন বা প্রবীণদের দেখভালের মতো কাজ করতে পারে। তবে, এই পরিবর্তনগুলো ভাষা, সংস্কৃতি এবং দৈনন্দিন জীবনের অন্যান্য দিকগুলোতে চ্যালেঞ্জ আনবে। মানুষকে এই বহুজাতিক সমাজে থাকতে শেখা উচিত।
প্রশ্ন: এশিয়ার সমাজে কি ভবিষ্যতে শতবর্ষী কোনো প্রধানমন্ত্রী হতে পারে?
মাহাথির: এটি সম্ভব। বয়সের উপর ভিত্তি করে সীমা নির্ধারণ সঠিক নয়। বরং, ব্যক্তির ক্ষমতা যাচাই করার জন্য একটি পরীক্ষা হওয়া উচিত। বাইডেনের মতো ব্যক্তির সঙ্গে কথা বললে, হয়তো তিনি কিছু ভুল বলবেন, যা মানুষকে তার যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ করবে। অন্যদিকে, ট্রাম্প, যিনি বয়সেও প্রবীণ, অনেক তরুণদের মতোই সক্রিয়। তাই যোগ্যতা নির্ধারণের জন্য একটি ভালো ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন।
প্রশ্ন: এশিয়ার দেশগুলো যৌথভাবে 'সুপারএজিং' ভবিষ্যতের জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে?
মাহাথির: এশিয়ার দেশগুলো একটি মানদণ্ড স্থাপন করতে পারে, যা শুধুমাত্র বয়স নয়, বরং ব্যক্তির যোগ্যতার উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হবে।আমার ইচ্ছা, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমার কাজগুলোর সঠিক এবং ভুল দিকগুলো অধ্যয়ন করবে এবং সেখান থেকে শিক্ষাগ্রহণ করবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভালো দিকগুলো থেকে শিক্ষা নেয়া এবং সেগুলো প্রয়োগ করাই আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পথ।
বাংলা স্কুপ/ ডেস্ক/ এনআইএন/এসকে
দ্বিতীয় দফায় রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আসেন ৯৪ বছর বয়সে। তাঁর কর্মস্পৃহা এবং উদ্যম যেন তাক লাগিয়ে দেয়ার মতো ক্যারিশম্যাটিক। এখন নিরানব্বই পেরিয়ে শতবর্ষীর ঘরে পা দিতে যাওয়া জীবন্ত এ কিংবদন্তি চলছেন সাইকেল চালিয়েও। সম্প্রতি নিক্কেই এশিয়াকে দেয়া সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে তার সুস্থ থাকার রহস্যের কথা, উঠে এসেছে সুপারএজিং সমাজে এশিয়ার নেতৃত্বের ভূমিকার কথাও। বৃহৎ সে সাক্ষাৎকারের চুম্বকাংশ তুলে ধরা হলো-
প্রশ্ন: এশিয়ায় বয়স বৃদ্ধি একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। এই 'সুপারএজিং' সমাজে দেশগুলো কীভাবে এগিয়ে যেতে পারে?
মাহাথির: বয়স সময়ের উপর নির্ভর করে না। বয়স নির্ভর করে শারীরিক সুস্থতার উপর— আপনি কেমন কাজ করতে পারেন তার উপর। সেই কারণে, বয়স মানে সময় নয়; আপনি ৬০ হলে বুড়ো হয়ে যাবেন, এমন নয়। যদি কেউ ৯০ বছর বয়সেও কাজ করতে পারে এবং সক্ষম থাকে, তবে ৯০ বছর বুড়ো বয়স বলা যাবে না। এই মুহূর্তে, ৬০ বা ৬৫ বছরকে বুড়ো বয়স ধরা হয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে, অতীতে ৩০ বছর বয়সেই মানুষ বুড়ো হয়ে যেত। জুলিয়াস সিজারের সময়, নেতা ছিলেন মাত্র ৩০ বছরের, কারণ মানুষ তখন খুব কম বয়সে মারা যেত। আমাদের অবসরগ্রহণের বয়স পরিবর্তন করা উচিত। সমাজকে এটা মেনে নিতে হবে যে ৬০ বছর বয়সের মানুষ অবসর নেয়ার জন্য প্রস্তুত নয়। তাদের ৬৫ বা এমনকি ৭০ বছর বয়সে অবসর নেয়া যেতে পারে। অবসরের বয়স নির্ধারণ করা উচিত শারীরিক বয়সের উপর, শুধুমাত্র ক্রমান্বয়ে সময়ের উপর নয়। ব্যক্তিদের কাজের সক্ষমতার উপর নির্ভর করে এটি নির্ধারণ করা উচিত।
প্রশ্ন: আপনি ৭০ বছর বয়সে রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছিলেন এবং ২০১৮ সালে আবার ফিরে এলেন। কীভাবে এটি ঘটেছিল?
মাহাথির: যখন আমি ৭০-এর কোটায় ছিলাম, এবং ৮০-এর দিকে এগোচ্ছিলাম, তখন ভাবতাম ৮০ অনেক বয়স্ক বয়স। আমি মনে করেছিলাম, এই বয়সে আমি আর কাজ করতে পারব না। তবে, অবসর নেয়ার পর বুঝতে পারলাম, আমি এখনও কাজ করতে সক্ষম। আমি দেশের পরিবর্তনগুলো দেখছিলাম এবং মনে করলাম কিছু বিষয় ঠিকঠাক নয়। তখন অনেক মানুষ আমার কাছে পরামর্শের জন্য আসতে শুরু করল এবং পরবর্তীতে তারা বলল যে আমাকে ফিরে আসা উচিত। যদিও আমি ৯০ বছর বয়সে ভেবেছিলাম, "আমি বোধ হয় ফিরে যেতে পারব না," তবে তারা আমাকে অনুরোধ করল চেষ্টা করতে। আমি চেষ্টা করলাম এবং তারা আমাকে ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করল।
প্রশ্ন: ফিরে আসার বিষয়ে আপনার কোনো আফসোস আছে কি?
মাহাথির: পেছনে তাকালে মনে হয়, ২০০৩ সালে, যখন আমি ৮০-ও পূর্ণ করিনি, অবসর নেয়ার সিদ্ধান্তটি আমার ভুল ছিল। আমি ভেবেছিলাম, যে সিস্টেমগুলো আমরা তৈরি করেছি, তা দেশের উন্নয়নে সাহায্য করবে। কিন্তু আমার অবসরের পর যা ঘটেছে, তা আমার প্রত্যাশার বাইরে ছিল। আমি আশা করেছিলাম দেশ এগিয়ে যাবে, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, যারা আমার পরে এসেছে তারা দেশের উন্নয়ন নয়, নিজেদের স্বার্থে কাজ করেছে। তাই এখন মনে হয়, ২০০৩ সালে সরে দাঁড়ানো উচিত হয়নি।
প্রশ্ন: অবসরের সাথে সম্পর্কিত পেনশন সিস্টেমের বোঝা এবং তরুণদের অর্থনৈতিক বৈষম্য কীভাবে সমাধান করা যেতে পারে?
মাহাথির: আমরা মনে করি, প্রবীণ মানুষদের দ্রুত অবসর নিতে হবে, যাতে তরুণরা তাদের জায়গা নিতে পারে। কিন্তু এটি সবসময় কার্যকর নয়। উদাহরণস্বরূপ, আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট মাত্র ৩২ বছর বয়সে মারা যান — যা আজকের মানদণ্ডে খুবই কম। তবে, এখনকার সমাজে মানুষের দীর্ঘায়ু হচ্ছে, কাজ করার সময়ও দীর্ঘ হচ্ছে। ফলে শীর্ষে উঠতে সময় বেশি লাগলেও, এর পুরস্কারও অনেক বেশি হবে। মানুষের কাজের সময় যদি ৪০ বা ৪৫ বছর পর্যন্ত হয়, তাহলে অবসরগ্রহণের আগে তাদের অবদান এবং পুরস্কারও অনেক বেশি হবে।
প্রশ্ন: প্রবীণ কর্মীদের জন্য এশিয়ার দেশগুলো কীভাবে কর্মসংস্থান বাড়াতে পারে?
মাহাথির: বয়সের সঙ্গে সঙ্গে আপনি অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। আপনি অনেক বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করেন, যা হারানো মানে মূল্যবান অভিজ্ঞতা হারানো। যদি প্রবীণ মানুষদের কর্মজীবনে রাখা হয় এবং তাদের অবসর নিতে বাধ্য না করা হয়, তবে তাদের অভিজ্ঞতা থেকে দেশ উপকৃত হবে। আমি নিজে ৮০ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা নিয়ে কাজ করছি। আমার এই দীর্ঘ অভিজ্ঞতা আমাকে এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েছে যা অন্যদের কাছে নেই। প্রবীণদের অবসর নেয়ার মাধ্যমে আমরা এই সম্পদ হারাই।
প্রশ্ন: কিছু দেশ অভিবাসনের মাধ্যমে শ্রমশক্তির ঘাটতি পূরণ করার চেষ্টা করছে। এই বিষয়ে আপনার কী মতামত?
মাহাথির: ভবিষ্যতে কোনো দেশ একক জাতিগোষ্ঠীর হবে না। উদাহরণস্বরূপ, জাপান একটি একজাতীয় দেশ হতে চায়, কিন্তু এটা সবসময় ধরে রাখা সম্ভব হবে না। মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করবে। যারা অভিবাসী, তাদের মধ্যে অনেকেই তরুণ। তারা শিশুর যত্ন বা প্রবীণদের দেখভালের মতো কাজ করতে পারে। তবে, এই পরিবর্তনগুলো ভাষা, সংস্কৃতি এবং দৈনন্দিন জীবনের অন্যান্য দিকগুলোতে চ্যালেঞ্জ আনবে। মানুষকে এই বহুজাতিক সমাজে থাকতে শেখা উচিত।
প্রশ্ন: এশিয়ার সমাজে কি ভবিষ্যতে শতবর্ষী কোনো প্রধানমন্ত্রী হতে পারে?
মাহাথির: এটি সম্ভব। বয়সের উপর ভিত্তি করে সীমা নির্ধারণ সঠিক নয়। বরং, ব্যক্তির ক্ষমতা যাচাই করার জন্য একটি পরীক্ষা হওয়া উচিত। বাইডেনের মতো ব্যক্তির সঙ্গে কথা বললে, হয়তো তিনি কিছু ভুল বলবেন, যা মানুষকে তার যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ করবে। অন্যদিকে, ট্রাম্প, যিনি বয়সেও প্রবীণ, অনেক তরুণদের মতোই সক্রিয়। তাই যোগ্যতা নির্ধারণের জন্য একটি ভালো ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন।
প্রশ্ন: এশিয়ার দেশগুলো যৌথভাবে 'সুপারএজিং' ভবিষ্যতের জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে?
মাহাথির: এশিয়ার দেশগুলো একটি মানদণ্ড স্থাপন করতে পারে, যা শুধুমাত্র বয়স নয়, বরং ব্যক্তির যোগ্যতার উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হবে।আমার ইচ্ছা, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমার কাজগুলোর সঠিক এবং ভুল দিকগুলো অধ্যয়ন করবে এবং সেখান থেকে শিক্ষাগ্রহণ করবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভালো দিকগুলো থেকে শিক্ষা নেয়া এবং সেগুলো প্রয়োগ করাই আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পথ।
বাংলা স্কুপ/ ডেস্ক/ এনআইএন/এসকে