সারা দেশে খুন, ছিনতাই, চুরি ও ডাকাতির মতো ভয়ংকর অপরাধ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। রাত যত গভীর হতে থাকে সড়কের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় এসব অপরাধীর হাতে। বিশেষ করে রাজধানীতে এখন সাধারণ মানুষের মধ্যে ছিনতাই নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। খোদ রাজধানীতে সহস্রাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও মাত্র অর্ধশতাধিক ভুক্তভোগী থানায় অভিযোগ করেছে। বেশিরভাগ ছিনতাইয়ের ঘটনা পুলিশের অপরাধ পরিসংখ্যানের মধ্যে নথিভুক্ত করা হয়নি।
রাতে পুলিশের টহল কমে যাওয়ার কারণে বেড়েছে ছিনতাই। রাত ১০টার পর রাজধানীর পাড়া-মহল্লার অলিগলিতে একটু নিরিবিলি পরিবেশ হলেই পথচারীরা ছিনতাইকারীর কবলে পড়ছেন। দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে নিরীহ লোকজনের কাছ থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র কেড়ে নিচ্ছে। শুধু তাই নয়, ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ার কারণে বিগত তিন মাসে ছিনতাইকারীদের হাতে চার জনকে প্রাণ হারাতে হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, চলতি নভেম্বর মাস থেকে রাজধানীতে টহল পুলিশের পাশাপাশি যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। টহল বেড়ে যাওয়ার কারণে ছিনতাই আগের চেয়ে কমে যাচ্ছে। পুলিশের সাবেক একজন আইজি বলেন, রাতে পুলিশের টহল বাড়াতে হবে। পুলিশের কম জনবল ও মনোবলের কারণে এসব অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না।
পূর্ব শত্রুতা, ব্যক্তিগত বিরোধ ও আর্থিক লেনদেনকে কেন্দ্র করে খুনোখুনির ঘটনা বেড়েছে। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ৩০ আগস্ট পর্যন্ত রাজধানীতে ২৯টি খুনের ঘটনা ঘটে। তবে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে রাজধানীতে বিভিন্ন অপরাধ ও ঘটনায় দুই শতাধিক লাশ উদ্ধার হয়। এর মধ্যে শতাধিক খুনের ঘটনা রয়েছে। গত বছরের আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত তিন মাসে ৫৬টি খুনের ঘটনা ঘটে। সে অনুযায়ী বিগত তিন মাসে ১৩০টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলার এমন পরিস্থিতির জন্য পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র গোলাবারুদকে দায়ী করছেন অপরাধ বিশেষজ্ঞরা।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, পুলিশ, বিভিন্ন থানা, কারাগার ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ৫ হাজার ৮২৯টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ৬ লাখ ৫১ হাজার ৬০৯টি গুলি লুট হয়। এর মধ্যে ৪ হাজার ২৮৩টি অস্ত্র এবং ৩ লাখ ৮৮ হাজার ১৮২টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। ১ হাজার ৫৪৬টি অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। এ ছাড়া গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে গতকাল পর্যন্ত যৌথ বাহিনী অভিযানে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলোর মধ্যে এসএসএফের লুট হওয়া অস্ত্র রয়েছে কি না তা কেউ নিশ্চিত করতে পারেননি। গণভবনের দায়িত্বে থাকা এসএসএফ সদস্যদের বিভিন্ন ধরনের ট্যাক্টিক্যাল গিয়ার, অস্ত্র, গোলাবারুদ, সাজসরঞ্জাম, বেতার যোগাযোগ ও অপারেশনাল সরঞ্জামাদির মজুত ছিল। এছাড়া জাতীয় সংসদ ভবনেও এসএসএফের অস্ত্র গোলাবারুদ মজুত ছিল। ৫ আগস্ট জনতা গণভবন ও জাতীয় সংসদ ভবনে প্রবেশ করার পর ঐ সব অস্ত্রশস্ত্র লুট হয়ে যায়। লুট হওয়া অস্ত্রশস্ত্রের মধ্যে অত্যাধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেল, স্নাইপার রাইফেল, ফ্ল্যাশব্যাং গ্রেনেড, অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম, বেতার যোগাযোগের ডিভাইস ও বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদসহ ৩২টি ভারী অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি।
এসব বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) এনামুল হক সাগর বলেন, লুট হওয়া অস্ত্রের মধ্যে ৭৫ ভাগ অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। ৬০ ভাগ উদ্ধার হয়েছে গোলাবারুদ। গত ১৮ অক্টোবর থেকে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। যৌথ বাহিনীর অভিযানে লুট হওয়া অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে। গোটা রাজধানীতে স্থায়ী চেকপোস্টের পাশাপাশি শতাধিক অস্থায়ী চেকপোস্ট স্থাপন করে রাতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। প্রায় ৩০০ মোটরসাইকেল টহল টিম রাত ১০টার পর টহলে নামছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে কি না জানতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, পুলিশের নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অচিরেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতাবস্থায় ফিরে আসবে।
গোয়েন্দাদের ধারণা, যেসব অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি, তার একটি বড় অংশ সারা দেশের আন্ডারওয়ার্ল্ডের হাতে চলে গেছে। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প, পল্লবী, যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, কলাবাগান, হাজারীবাগ, ঢাকা উদ্যান, বছিলা, আদাবর ও লালবাগ এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রুপের কাছে হাত বদলের মাধ্যমে এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ চলে গেছে। মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে ইসরাইলের তৈরি উজি পিস্তলও দেখা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কারাগারে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসী, দাগী আসামি ও জঙ্গি আসামিদের অনেকে বেরিয়ে গেছেন।
র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিম ফেরদৌস বলেন, অস্ত্র উদ্ধারের জন্য আমরা দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্লক রেইড দিচ্ছি। র্যাবের অভিযানে দাগী আসামি, মাদক ব্যবসায়ী, অস্ত্র ব্যবসায়ী গ্রেফতার হচ্ছে।
বাংলা স্কুপ/এএইচ/এসকে
রাতে পুলিশের টহল কমে যাওয়ার কারণে বেড়েছে ছিনতাই। রাত ১০টার পর রাজধানীর পাড়া-মহল্লার অলিগলিতে একটু নিরিবিলি পরিবেশ হলেই পথচারীরা ছিনতাইকারীর কবলে পড়ছেন। দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে নিরীহ লোকজনের কাছ থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র কেড়ে নিচ্ছে। শুধু তাই নয়, ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ার কারণে বিগত তিন মাসে ছিনতাইকারীদের হাতে চার জনকে প্রাণ হারাতে হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, চলতি নভেম্বর মাস থেকে রাজধানীতে টহল পুলিশের পাশাপাশি যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। টহল বেড়ে যাওয়ার কারণে ছিনতাই আগের চেয়ে কমে যাচ্ছে। পুলিশের সাবেক একজন আইজি বলেন, রাতে পুলিশের টহল বাড়াতে হবে। পুলিশের কম জনবল ও মনোবলের কারণে এসব অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না।
পূর্ব শত্রুতা, ব্যক্তিগত বিরোধ ও আর্থিক লেনদেনকে কেন্দ্র করে খুনোখুনির ঘটনা বেড়েছে। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ৩০ আগস্ট পর্যন্ত রাজধানীতে ২৯টি খুনের ঘটনা ঘটে। তবে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে রাজধানীতে বিভিন্ন অপরাধ ও ঘটনায় দুই শতাধিক লাশ উদ্ধার হয়। এর মধ্যে শতাধিক খুনের ঘটনা রয়েছে। গত বছরের আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত তিন মাসে ৫৬টি খুনের ঘটনা ঘটে। সে অনুযায়ী বিগত তিন মাসে ১৩০টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলার এমন পরিস্থিতির জন্য পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র গোলাবারুদকে দায়ী করছেন অপরাধ বিশেষজ্ঞরা।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, পুলিশ, বিভিন্ন থানা, কারাগার ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ৫ হাজার ৮২৯টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ৬ লাখ ৫১ হাজার ৬০৯টি গুলি লুট হয়। এর মধ্যে ৪ হাজার ২৮৩টি অস্ত্র এবং ৩ লাখ ৮৮ হাজার ১৮২টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। ১ হাজার ৫৪৬টি অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। এ ছাড়া গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে গতকাল পর্যন্ত যৌথ বাহিনী অভিযানে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলোর মধ্যে এসএসএফের লুট হওয়া অস্ত্র রয়েছে কি না তা কেউ নিশ্চিত করতে পারেননি। গণভবনের দায়িত্বে থাকা এসএসএফ সদস্যদের বিভিন্ন ধরনের ট্যাক্টিক্যাল গিয়ার, অস্ত্র, গোলাবারুদ, সাজসরঞ্জাম, বেতার যোগাযোগ ও অপারেশনাল সরঞ্জামাদির মজুত ছিল। এছাড়া জাতীয় সংসদ ভবনেও এসএসএফের অস্ত্র গোলাবারুদ মজুত ছিল। ৫ আগস্ট জনতা গণভবন ও জাতীয় সংসদ ভবনে প্রবেশ করার পর ঐ সব অস্ত্রশস্ত্র লুট হয়ে যায়। লুট হওয়া অস্ত্রশস্ত্রের মধ্যে অত্যাধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেল, স্নাইপার রাইফেল, ফ্ল্যাশব্যাং গ্রেনেড, অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম, বেতার যোগাযোগের ডিভাইস ও বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদসহ ৩২টি ভারী অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি।
এসব বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) এনামুল হক সাগর বলেন, লুট হওয়া অস্ত্রের মধ্যে ৭৫ ভাগ অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। ৬০ ভাগ উদ্ধার হয়েছে গোলাবারুদ। গত ১৮ অক্টোবর থেকে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। যৌথ বাহিনীর অভিযানে লুট হওয়া অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে। গোটা রাজধানীতে স্থায়ী চেকপোস্টের পাশাপাশি শতাধিক অস্থায়ী চেকপোস্ট স্থাপন করে রাতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। প্রায় ৩০০ মোটরসাইকেল টহল টিম রাত ১০টার পর টহলে নামছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে কি না জানতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, পুলিশের নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অচিরেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতাবস্থায় ফিরে আসবে।
গোয়েন্দাদের ধারণা, যেসব অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি, তার একটি বড় অংশ সারা দেশের আন্ডারওয়ার্ল্ডের হাতে চলে গেছে। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প, পল্লবী, যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, কলাবাগান, হাজারীবাগ, ঢাকা উদ্যান, বছিলা, আদাবর ও লালবাগ এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রুপের কাছে হাত বদলের মাধ্যমে এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ চলে গেছে। মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে ইসরাইলের তৈরি উজি পিস্তলও দেখা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কারাগারে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসী, দাগী আসামি ও জঙ্গি আসামিদের অনেকে বেরিয়ে গেছেন।
র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিম ফেরদৌস বলেন, অস্ত্র উদ্ধারের জন্য আমরা দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্লক রেইড দিচ্ছি। র্যাবের অভিযানে দাগী আসামি, মাদক ব্যবসায়ী, অস্ত্র ব্যবসায়ী গ্রেফতার হচ্ছে।
বাংলা স্কুপ/এএইচ/এসকে