বাংলা স্কুপ, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪:
ছাত্র–জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাকে একহাত নিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ (সরকার) ফেরত চাইবার আগ পর্যন্ত যদি ভারত তাঁকে রাখতে চায় তাহলে তাকে চুপ থাকতে হবে।
ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন ড. ইউনূস। গত রোববার ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবনে দেওয়া এই সাক্ষাৎকারটি বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে যাওয়ার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা সে দেশে আশ্রয়লাভের চেষ্টা করছেন।
ভারতে বসে দেশের বিষয়ে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক মন্তব্য করাকে একটি ‘অবন্ধুসুলভ আচরণ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন ড. ইউনূস। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ থেকে তার প্রত্যর্পণের অনুরোধ না করা পর্যন্ত উভয় দেশকে অস্বস্তিতে না ফেলতে তাকে অবশ্যই রাজনৈতিক ইস্যুতে চুপ থাকতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, 'ভারতে তার অবস্থান নিয়ে কেউ স্বস্তিতে নেই। বিচারের জন্য তাকে আমরা ফিরিয়ে আনতে চাই। তিনি ভারতে আছেন এবং মাঝে-মধ্যেই কথা বলছেন। এটি সমস্যাজনক। তিনি যদি চুপ থাকতেন, তাহলে আমরা তা ভুলে যেতাম। তিনি নিজের জগত নিয়ে থাকলে মানুষও তা ভুলে যেত। কিন্তু তিনি ভারতে বসে কথা বলে যাচ্ছেন এবং নির্দেশনা দিচ্ছেন। এটা কেউ পছন্দ করছে না।'
পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য হিন্দু’ জানিয়েছে, ‘ড. ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার নৃশংসতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ন্যায়বিচারের প্রয়োজনেই শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।’
এসময় তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘তাকে ফিরিয়ে আনতেই হবে। তা না হলে বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে থাকবে না। তিনি যে ধরনের নৃশংসতা করেছেন, তাকে এখানে (দেশে) এনে সবার সামনে বিচার করতে হবে।’
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার সময় ড. ইউনূস ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্কের আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেন। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, দিল্লিকে এই বর্ণনাটি ত্যাগ করতে হবে যে, শুধু শেখ হাসিনার নেতৃত্বই দেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে।
ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ যখন ভারতের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ককে মূল্য দেয়; দিল্লিকে তখন অবশ্যই ‘আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য সব রাজনৈতিক দল ইসলামপন্থি এবং শেখ হাসিনা ছাড়া দেশ আফগানিস্তানে পরিণত হবে’ এমন ধারণার বাইরে যেতে হবে।
সূত্র : ইকোনমিক টাইমস
নিউজ ডেস্ক/এসকে