মিরসরাইয়ে আবাস সংকোচন ও খাবারের সংকটের কারণে পাহাড় থেকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে লোকালয়ে ঢুকে আটকা পড়ছে অজগরসহ নানা প্রজাতির সরীসৃপ প্রাণী। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গত এক বছরে ১৫ টির বেশি অজগর লোকালয়ে ঢুকে আটকা পড়েছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই আটকা পড়েছে পাহাড়ি অঞ্চলে আশপাশে কৃষি জমির ফসলের ক্ষেতের সুরক্ষার জালে। চলতি বছরে শুধু উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নে আটকা পড়েছে তিনটি অজগর।
সর্বশেষ ১৬ অক্টোবর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ঠাকুরদিঘী এলাকায় বসতবাড়ির আঙ্গিনায় জালে আটকা পড়া অবস্থায় ১২ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি অজগর সাপ উদ্ধার করে ওয়াইল্ডলাইফ এ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিমের সদস্যরা। অক্ষত অবস্থায় অজগরটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম লেক মহামায়ার বনে অবমুক্ত করা হয়। এর আগে ৯ সেপ্টেম্বর উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ছত্তরুয়া এলাকা থেকে ১৩ ফুট দৈর্ঘ্যের আরেকটি অজগর উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত করে করেরহাট রেঞ্জের কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, গত দেড় বছরে অর্ধ সহস্রাধিক সাপ লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে। এরমধ্যে ১৬৫ টি সাপ লোকালয় থেকে উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত করেছে বন বিভাগ ও রেসকিউ টিমের সদস্যরা। প্রাণীবিদরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সরীসৃপ প্রাণী বিচরণ করা অঞ্চলগুলোতে দিনদিন খাদ্যের পাশাপাশি পানি সংকটও দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাহাড়ি এলাকায় ঝিরি-ঝর্না বছরের বেশিরভাগ সময় শুকিয়ে থাকছে। খাদ্যের খোঁজে প্রাণীরা লোকালয়ে ঢুকে পড়ে প্রাণও হারাচ্ছে।
বন্যপ্রাণী ও সাপ উদ্ধারকারী সংগঠন ওয়াইল্ড লাইফ অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশ (ডব্লিউএসআরটিবিডি) মিরসরাইয়ের তথ্যমতে, গত এক বছরে মিরসরাইয়ে জীবিত উদ্ধারকৃত সাপের সংখ্যা ১৫০ এর অধিক। যার মধ্যে অজগর ১৫ টি। আর বিষধর সাপের মধ্যে রয়েছে পদ্ম গোখরা, বড় কৃষ্ণ কালাচ, শঙ্খিনী, সবুজ বোড়া। আর বিষ নেই এমন সাপের মধ্যে অজগর, দাঁড়াশ, দুধরাজ, ঘরগিন্নি, লাউডগা, হেলে, বেত আঁচড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির সাপ রয়েছে। সবচেয়ে বেশি সাপ উদ্ধার হয়েছে করেরহাট, জোরারগঞ্জ, দুর্গাপুর ইউনিয়ন থেকে।
মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্যমতে, চলতি বছরের ১০ মাসে উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুইটি পৌরসভায় প্রায় ৪ শতাধিক মানুষকে সাপে কেটেছে। এরমধ্যে সর্বশেষ মারা গেছে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া জোরারগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সীমান্ত নাথ।
মিরসরাই বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা শাহানশাহ নওশাদ বলেন, বিভিন্ন সময়ে লোকালয়ে অজগরসহ বিভিন্ন প্রজাতির সাপ খাদ্যের অভাবে পাহাড়ের নিকটবর্তী কৃষি, লোকালয় মানুষের বসতবাড়ির আঙ্গিনায় এসে আটকা পড়ছে। গত এক বছরে মিরসরাইয়ে ১৫ টি অজগর লোকালয়ে ঢুকেছে। যার সবগুলোই স্নেক রেসকিউ টিমের সহযোগিতায় পাহাড়ি বনে অবমুক্ত করা হয়।
বন্যপ্রাণী ও সাপ উদ্ধারকারী সংগঠন ওয়াইল্ড লাইফ অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশের সিনিয়র রেসকিউয়ার ও সংগঠনটির চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি নাইমুল ইসলাম নিলয় বলেন, জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য সাপ রেসকিউয়ের কাজগুলো স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে নিজ খরচে করি। এজন্য আমাদের বনবিভাগ কিংবা সরকারিভাবে কোন সাহায্য সহযোগিতা করা হয় না। যদি সাহায্য সহযোগিতা পেতাম তাহলে কাজগুলো আরও ত্বরান্বিত হতো।
মিরসরাই উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাকিরুল ফরিদ বলেন, উদ্ধারকৃত অজগর ও অন্যান্য সাপগুলোর দেহে কোনো ধরনের ক্ষত এবং বড় ধরনের ইনজুরি ছিল না। সাধারণত কোনো প্রাণী আঘাতপ্রাপ্ত হলে পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আঘাত না থাকায় চিকিৎসার প্রয়োজন হয়নি।
লোকালয়ে অজগর ছুটে আসার বিষয়ে এ কর্মকর্তা বলেন, যে কোন বন্যপ্রাণীর আবাস ঝুঁকির মুখে থাকলে এবং খাবারের সংকট হলে তারা লোকালয়ে বেরিয়ে আসে। অজগরের ক্ষেত্রেও আবাস সংকোচনের ফলে তাদের খাবার সংকট হচ্ছে। ফলে তারা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে খাবারের খোঁজে জনবসতি এলাকায় আসছে। এ পরিক্রমায় অনেক সময়ই তারা লোকালয়ে ঢুকে পড়ে আর বের হতে পারে না।
বাংলা স্কুপ/মিরসরাই প্রতিনিধি/এসকে
সর্বশেষ ১৬ অক্টোবর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ঠাকুরদিঘী এলাকায় বসতবাড়ির আঙ্গিনায় জালে আটকা পড়া অবস্থায় ১২ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি অজগর সাপ উদ্ধার করে ওয়াইল্ডলাইফ এ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিমের সদস্যরা। অক্ষত অবস্থায় অজগরটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম লেক মহামায়ার বনে অবমুক্ত করা হয়। এর আগে ৯ সেপ্টেম্বর উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ছত্তরুয়া এলাকা থেকে ১৩ ফুট দৈর্ঘ্যের আরেকটি অজগর উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত করে করেরহাট রেঞ্জের কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, গত দেড় বছরে অর্ধ সহস্রাধিক সাপ লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে। এরমধ্যে ১৬৫ টি সাপ লোকালয় থেকে উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত করেছে বন বিভাগ ও রেসকিউ টিমের সদস্যরা। প্রাণীবিদরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সরীসৃপ প্রাণী বিচরণ করা অঞ্চলগুলোতে দিনদিন খাদ্যের পাশাপাশি পানি সংকটও দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাহাড়ি এলাকায় ঝিরি-ঝর্না বছরের বেশিরভাগ সময় শুকিয়ে থাকছে। খাদ্যের খোঁজে প্রাণীরা লোকালয়ে ঢুকে পড়ে প্রাণও হারাচ্ছে।
বন্যপ্রাণী ও সাপ উদ্ধারকারী সংগঠন ওয়াইল্ড লাইফ অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশ (ডব্লিউএসআরটিবিডি) মিরসরাইয়ের তথ্যমতে, গত এক বছরে মিরসরাইয়ে জীবিত উদ্ধারকৃত সাপের সংখ্যা ১৫০ এর অধিক। যার মধ্যে অজগর ১৫ টি। আর বিষধর সাপের মধ্যে রয়েছে পদ্ম গোখরা, বড় কৃষ্ণ কালাচ, শঙ্খিনী, সবুজ বোড়া। আর বিষ নেই এমন সাপের মধ্যে অজগর, দাঁড়াশ, দুধরাজ, ঘরগিন্নি, লাউডগা, হেলে, বেত আঁচড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির সাপ রয়েছে। সবচেয়ে বেশি সাপ উদ্ধার হয়েছে করেরহাট, জোরারগঞ্জ, দুর্গাপুর ইউনিয়ন থেকে।
মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্যমতে, চলতি বছরের ১০ মাসে উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুইটি পৌরসভায় প্রায় ৪ শতাধিক মানুষকে সাপে কেটেছে। এরমধ্যে সর্বশেষ মারা গেছে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া জোরারগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সীমান্ত নাথ।
মিরসরাই বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা শাহানশাহ নওশাদ বলেন, বিভিন্ন সময়ে লোকালয়ে অজগরসহ বিভিন্ন প্রজাতির সাপ খাদ্যের অভাবে পাহাড়ের নিকটবর্তী কৃষি, লোকালয় মানুষের বসতবাড়ির আঙ্গিনায় এসে আটকা পড়ছে। গত এক বছরে মিরসরাইয়ে ১৫ টি অজগর লোকালয়ে ঢুকেছে। যার সবগুলোই স্নেক রেসকিউ টিমের সহযোগিতায় পাহাড়ি বনে অবমুক্ত করা হয়।
বন্যপ্রাণী ও সাপ উদ্ধারকারী সংগঠন ওয়াইল্ড লাইফ অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশের সিনিয়র রেসকিউয়ার ও সংগঠনটির চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি নাইমুল ইসলাম নিলয় বলেন, জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য সাপ রেসকিউয়ের কাজগুলো স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে নিজ খরচে করি। এজন্য আমাদের বনবিভাগ কিংবা সরকারিভাবে কোন সাহায্য সহযোগিতা করা হয় না। যদি সাহায্য সহযোগিতা পেতাম তাহলে কাজগুলো আরও ত্বরান্বিত হতো।
মিরসরাই উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাকিরুল ফরিদ বলেন, উদ্ধারকৃত অজগর ও অন্যান্য সাপগুলোর দেহে কোনো ধরনের ক্ষত এবং বড় ধরনের ইনজুরি ছিল না। সাধারণত কোনো প্রাণী আঘাতপ্রাপ্ত হলে পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আঘাত না থাকায় চিকিৎসার প্রয়োজন হয়নি।
লোকালয়ে অজগর ছুটে আসার বিষয়ে এ কর্মকর্তা বলেন, যে কোন বন্যপ্রাণীর আবাস ঝুঁকির মুখে থাকলে এবং খাবারের সংকট হলে তারা লোকালয়ে বেরিয়ে আসে। অজগরের ক্ষেত্রেও আবাস সংকোচনের ফলে তাদের খাবার সংকট হচ্ছে। ফলে তারা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে খাবারের খোঁজে জনবসতি এলাকায় আসছে। এ পরিক্রমায় অনেক সময়ই তারা লোকালয়ে ঢুকে পড়ে আর বের হতে পারে না।
বাংলা স্কুপ/মিরসরাই প্রতিনিধি/এসকে