​মায়ের অপমানের প্রতিশোধ নিতে ১০ বছর পর খুন

আপলোড সময় : ২২-০৭-২০২৫ ০৭:১২:৩৪ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২২-০৭-২০২৫ ০৭:১২:৩৪ অপরাহ্ন
১০ বছর আগে মাকে অপমান ও মারধরের প্রতিশোধ নিতে প্রকাশ্য দিবালোকে ৩২ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে নৃশংসভাবে খুন করেছেন এক যুবক। মায়ের অপমান মানতে না পেরে এক দশক ধরে ওই ব্যক্তির সন্ধান করছিলেন তিনি। পরে গত ২২ মে ভারতের উত্তর প্রদেশের লক্ষ্ণৌর কল্যাণপুর এলাকায় তাকে হত্যা করেন ওই যুবক। এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে।

দেশটির সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মনোজ কুমার নামের ওই ব্যক্তিকে কল্যাণপুরের মানমিত ডেইরির কাছের এক এলাকায় লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

এই ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত অনুপ ওরফে সোনু কাশ্যপ (২১) পেশায় ডেলিভারি বয়ের কাজ করেন। মায়ের অপমানের প্রতিশোধ নিতে গত দশ বছর ধরে ক্ষোভের আগুনে পুড়ছিলেন তিনি। ঘনিষ্ঠ কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে মনোজ কুমারকে নৃশংসভাবে হত্যা করেন তিনি। প্রধান অভিযুক্ত ছাড়াও সানি কাশ্যপ (২০), সালমান (৩০), রঞ্জিত কুমার (২১) ও রহমত আলী (২৫) নামের চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

উত্তরপ্রদেশ পুলিশ বলেছে, ২০১৫ সালে সোনু কাশ্যপের বয়স ছিল ১১ বছর। ওই সময় তার মাকে মনোজ প্রকাশ্যে চড় মারেন ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। ওই ঘটনার পর তার মা স্মৃতি শক্তি হারিয়ে ফেলেন ও মৃগী রোগে আক্রান্ত হন। মায়ের এ অপমান সোনু কখনও ভুলতে পারেননি।

সম্প্রতি মুনশিপুলিয়া ক্রসিং এলাকায় মনোজকে নারিকেলের পানি বিক্রি করতে দেখেন সোনু। প্রতিশোধের নেশায় মত্ত হয়ে সোনু তার বন্ধুদের কাছে মায়ের অপমানের কথা প্রকাশ করেন। সোনু তার বন্ধুদের বলেন, ‌‌মনোজ আমার মাকে মেরেছিল। আমি তাকে মেরে ফেলতে চাই।

পুলিশের কাছে দেয়া স্বীকারোক্তিতে সোনু বলেন, গত ২২ মে মনোজের কাজ শেষে ফেরার পথে বন্ধুদের নিয়ে ওৎ পেতে ছিলেন তিনি। সোনুই প্রথমে লোহার রড দিয়ে মনোজকে আঘাত করেন। পর বাকিরা মনোজকে বেধড়ক মারধর করেন। এর এক পর্যায়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মনোজ। 

মনোজ মারা গেছেন ভেবে বন্ধুদেরসহ পালিয়ে যান সোনু। এই ঘটনার সময় রহমত ও সচীন নামে সোনুর আরও দুই সহযোগী সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরে তারাও পালিয়ে যান।

লক্ষ্ণৌর পূর্ব বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার শশাঙ্ক সিং বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সোমবার (২১ জুলাই) অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেছে ইন্দিরানগর থানা পুলিশ।

এ হত্যাকাণ্ডের প্রায় দুই মাস পর পুলিশ বিশেষ একটি সূত্র ধরে মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করে। এর নেপথ্যে ছিল একটি কমলা রঙের টি-শার্ট; যেখানে কার্টুন চরিত্র সিম্পসনের ছবি ও মাথার অংশে কাটা দাগ ছিল। এ একই টি-শার্ট পরিহিত যুবককে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়। পরে এক তরুণের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া পোস্টে সে টি-শার্ট দেখা যায়।

মামলার রহস্য উদঘাটনে লক্ষ্ণৌ পুলিশের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যবেক্ষণকারীদের একটি বিশেষ দল ওই তরুণের অবস্থান শনাক্ত করে। পরে ডেলিভারি বয়ের ছদ্মবেশে ওই তরুণের বাড়িতে পৌঁছে তাকে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে মনোজকে হত্যার কথা স্বীকার করেন সোনু। এর মধ্য দিয়ে বেরিয়ে আসে আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।

বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এইচএইচ/এসকে

সম্পাদক ও প্রকাশক :

মোঃ কামাল হোসেন

অফিস :

অফিস : ৬/২২, ইস্টার্ণ প্লাাজা (৬ তলা), কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স, হাতিরপুল, ঢাকা।

ইমেইল :