
কারবালার শোককে শক্তিতে পরিণত করার প্রত্যয় নিয়ে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে ১০ মহররমের তাজিয়া মিছিল। এতে শহীদদের প্রতি নিজেদের আবেগ ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটান অনুরাগীরা। তুমুল বৃষ্টি উপক্ষো করে শোক মিছিলে যোগ দেন শিয়া অনুসারীরা। রবিবার (০৬ জুলাই) সকাল ১০টায় পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের হোসেনি দালান থেকে শুরু হওয়া এ শোক মিছিলে অংশগ্রহণ করেন কয়েক হাজার অনুরাগী। সবাই ছিলেন কালো কাপড় পরিহিত।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) এর শাহাদাতের এই দিনে কারবালা প্রান্তরের বিভিন্ন স্মৃতির প্রতীক তাজিয়া, আলম, ঝুলা, তাবত নিয়ে সমবেত হন তারা। এতে আরও ছিল কালো ব্যানার, বেহেস্তা (লাল সবুজ নিশান), পাঞ্জা, আলম মাতম, দুলদুল ঘোড়া, খুনি ঘোড়া ও জারি তাজিয়া।প্রায় পাঁচ কিলোমিটারের এ মিছিলটি কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়। শুধু হোসেনি দালান নয়, আশপাশের ইমামবাড়া থেকেও সোনালী এবং কালো রঙের প্রতীকী কফিন নিয় আসেন অনেকে।
ঢোল, তবলা ও খঞ্জনির তালে তালে হযরত ইমাম হাসান ও হোসেন (রা.) এবং হযরত আলীর (রা.) নামে সম্মিলিত মাতম করেন তরুণ-যুবকরা।অনেকে কালেমা খচিত বড় বড় পতাকা ও ঢাল তলোয়ার প্রদর্শন করেন। পুরুষের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক নারীও অংশ নেন। সকাল ১০টায় মূল কর্মসূচি শুরুর কথা থাকলেও ভোর থেকেই বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ জড়ো হন হোসেনি দালানের সামনে।
পূর্ব নির্ধারিত সময় সকাল ১০টায় তাজিয়া মিছিলটি হোসেনি দালান ইমামবাড়া উত্তর গেট থেকে বের হয়ে হোসেনি দালান রোড, বকশী বাজার লেন, আলিয়া মাদ্রাসা রোড, বকশী বাজার (কল পাড়) মোড়, উমেশ দত্ত রোড, উর্দু রোড মোড়, হরনাথ ঘোষ রোড, লালবাগ চৌরাস্তা মোড়, গোর-এ-শহীদ মাজার মোড়, এতিমখানা মোড়, আজিমপুর চৌরাস্তা মোড়, ইডেন কলেজ, নীলক্ষেত মোড়, মিরপুর রোড, ঢাকা কলেজ, সায়েন্সল্যাব মোড়, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার ২ নম্বর রোড, বিজিবি ৪ নম্বর গেট, সাত মসজিদ রোড (ঝিগাতলা বাসস্ট্যান্ড) প্রদক্ষিণ করে বিকাল পৌনে ৩টায় ধানমন্ডি লেকে (অস্থায়ী কারবালা) গিয়ে শেষ হয়।
তাজিয়া মিছিলে সমবেত যুবকরা বুক চাপড়িয়ে ইয়া হাসান, ইয়া হোসেন ও ইয়া আলী বলে জারি পাঠ করেন। অনেকে বিলাপ করে অশ্রু বিসর্জন করেন। সেখানে আগত যুবক জহির মোল্লা বলেন, কারবালার ময়দানে যে নির্মম হত্যাকাণ্ড হয়েছে, তা উপলব্ধি করলে খুবই কষ্ট অনুভব হয়। তাই আশুরার দিনে আমরা ঘরে থাকতে পারি না। তিনি মনে করেন, হযরত হোসাইন (রা.) সহ কারবালার শহীদরা জীবন দিয়ে সত্যকে প্রতিষ্ঠা করে গেছেন।পুরান ঢাকা থেকে মিছিল শুরু করে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে দুপুর দেড়টা থেকেই ধানমন্ডির জিগাতলায় খণ্ড খণ্ড মিছিল সমবেত হয়। এ সময় সড়কের মাঝেই খালি গায়ে লোহার বস্তু দিয়ে পিঠ থেকে রক্ত ঝরান কতিপয় তরুণ। অনেক ব্লেড দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করেন শরীরের বিভিন্ন অংশ। তাদের কয়েকজন বলেন, কারবালার শহীদদের যেভাবে কষ্ট দিয়ে মারা হয়েছে, সে তুলনায় এটি কিছুই নয়। মূলত তাদের কষ্টের প্রতি সহমর্মিতা থেকে এমনটি করেন বলে তারা জানান।
মিছিলে আগত কয়েকজন বলেন, সত্য ও মিথ্যার লড়াই চিরন্তন। কারবালায় ইমাম হোসেনসহ তার পরিবারকে হত্যার মধ্য দিয়ে সত্যের পথকে ধ্বংস করার চক্রান্ত হয়েছে। তবে সেখানে সত্যের পথে যারা জীবন দিয়েছেন, তারা অবিনশ্বর। তাদের হারিয়ে আমরা কিছুটা শোকাতুর হলেও এটি আমাদের সঠিক পথে চলার প্রেরণা দেয়। যে বিষাদময় ঘটনা ঘটেছে ইতিহাসে তার পুনরাবৃত্তি হবে না বলে তাদের প্রত্যাশা। শোককে শক্তিতে পরিণত করেই এগিয়ে যেতে চান তারা।
প্রসঙ্গত, হিজরি ৬১ সালের ১০ মুহাররম কারবালার প্রান্তরে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসেন (আ.) ও তার পরিবারের সদস্যরা ইয়াজিদের বাহিনীর হাতে শহীদ হন। সেই ঘটনাকে স্মরণ করেই প্রতিবছর আশুরার দিন তাজিয়া মিছিল আয়োজন করে থাকেন শিয়া মুসলিমরা।
বাংলাস্কুপ/ প্রতিবেদক/এনআইএন
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) এর শাহাদাতের এই দিনে কারবালা প্রান্তরের বিভিন্ন স্মৃতির প্রতীক তাজিয়া, আলম, ঝুলা, তাবত নিয়ে সমবেত হন তারা। এতে আরও ছিল কালো ব্যানার, বেহেস্তা (লাল সবুজ নিশান), পাঞ্জা, আলম মাতম, দুলদুল ঘোড়া, খুনি ঘোড়া ও জারি তাজিয়া।প্রায় পাঁচ কিলোমিটারের এ মিছিলটি কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়। শুধু হোসেনি দালান নয়, আশপাশের ইমামবাড়া থেকেও সোনালী এবং কালো রঙের প্রতীকী কফিন নিয় আসেন অনেকে।
ঢোল, তবলা ও খঞ্জনির তালে তালে হযরত ইমাম হাসান ও হোসেন (রা.) এবং হযরত আলীর (রা.) নামে সম্মিলিত মাতম করেন তরুণ-যুবকরা।অনেকে কালেমা খচিত বড় বড় পতাকা ও ঢাল তলোয়ার প্রদর্শন করেন। পুরুষের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক নারীও অংশ নেন। সকাল ১০টায় মূল কর্মসূচি শুরুর কথা থাকলেও ভোর থেকেই বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ জড়ো হন হোসেনি দালানের সামনে।
পূর্ব নির্ধারিত সময় সকাল ১০টায় তাজিয়া মিছিলটি হোসেনি দালান ইমামবাড়া উত্তর গেট থেকে বের হয়ে হোসেনি দালান রোড, বকশী বাজার লেন, আলিয়া মাদ্রাসা রোড, বকশী বাজার (কল পাড়) মোড়, উমেশ দত্ত রোড, উর্দু রোড মোড়, হরনাথ ঘোষ রোড, লালবাগ চৌরাস্তা মোড়, গোর-এ-শহীদ মাজার মোড়, এতিমখানা মোড়, আজিমপুর চৌরাস্তা মোড়, ইডেন কলেজ, নীলক্ষেত মোড়, মিরপুর রোড, ঢাকা কলেজ, সায়েন্সল্যাব মোড়, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার ২ নম্বর রোড, বিজিবি ৪ নম্বর গেট, সাত মসজিদ রোড (ঝিগাতলা বাসস্ট্যান্ড) প্রদক্ষিণ করে বিকাল পৌনে ৩টায় ধানমন্ডি লেকে (অস্থায়ী কারবালা) গিয়ে শেষ হয়।
তাজিয়া মিছিলে সমবেত যুবকরা বুক চাপড়িয়ে ইয়া হাসান, ইয়া হোসেন ও ইয়া আলী বলে জারি পাঠ করেন। অনেকে বিলাপ করে অশ্রু বিসর্জন করেন। সেখানে আগত যুবক জহির মোল্লা বলেন, কারবালার ময়দানে যে নির্মম হত্যাকাণ্ড হয়েছে, তা উপলব্ধি করলে খুবই কষ্ট অনুভব হয়। তাই আশুরার দিনে আমরা ঘরে থাকতে পারি না। তিনি মনে করেন, হযরত হোসাইন (রা.) সহ কারবালার শহীদরা জীবন দিয়ে সত্যকে প্রতিষ্ঠা করে গেছেন।পুরান ঢাকা থেকে মিছিল শুরু করে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে দুপুর দেড়টা থেকেই ধানমন্ডির জিগাতলায় খণ্ড খণ্ড মিছিল সমবেত হয়। এ সময় সড়কের মাঝেই খালি গায়ে লোহার বস্তু দিয়ে পিঠ থেকে রক্ত ঝরান কতিপয় তরুণ। অনেক ব্লেড দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করেন শরীরের বিভিন্ন অংশ। তাদের কয়েকজন বলেন, কারবালার শহীদদের যেভাবে কষ্ট দিয়ে মারা হয়েছে, সে তুলনায় এটি কিছুই নয়। মূলত তাদের কষ্টের প্রতি সহমর্মিতা থেকে এমনটি করেন বলে তারা জানান।
মিছিলে আগত কয়েকজন বলেন, সত্য ও মিথ্যার লড়াই চিরন্তন। কারবালায় ইমাম হোসেনসহ তার পরিবারকে হত্যার মধ্য দিয়ে সত্যের পথকে ধ্বংস করার চক্রান্ত হয়েছে। তবে সেখানে সত্যের পথে যারা জীবন দিয়েছেন, তারা অবিনশ্বর। তাদের হারিয়ে আমরা কিছুটা শোকাতুর হলেও এটি আমাদের সঠিক পথে চলার প্রেরণা দেয়। যে বিষাদময় ঘটনা ঘটেছে ইতিহাসে তার পুনরাবৃত্তি হবে না বলে তাদের প্রত্যাশা। শোককে শক্তিতে পরিণত করেই এগিয়ে যেতে চান তারা।
প্রসঙ্গত, হিজরি ৬১ সালের ১০ মুহাররম কারবালার প্রান্তরে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসেন (আ.) ও তার পরিবারের সদস্যরা ইয়াজিদের বাহিনীর হাতে শহীদ হন। সেই ঘটনাকে স্মরণ করেই প্রতিবছর আশুরার দিন তাজিয়া মিছিল আয়োজন করে থাকেন শিয়া মুসলিমরা।
বাংলাস্কুপ/ প্রতিবেদক/এনআইএন