​ মহাকাশ থেকে স্যাটেলাইট নিখোঁজ

আপলোড সময় : ০৬-০৭-২০২৫ ০১:৫০:১৪ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৬-০৭-২০২৫ ০৮:০৯:৩৯ অপরাহ্ন
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় একটি বড় ধাক্কা হিসেবে তেল ও গ্যাস উৎপাদন থেকে নির্গত হওয়া মিথেন গ্যাস শনাক্ত করার জন্য নকশাকৃত ৮৮ মিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি স্যাটেলাইট মহাকাশে নিখোঁজ রয়েছে।‘মিথেনস্যাট’ স্যাটেলাইটটি গত বছরই ইলন মাস্কের স্পেসএক্স রকেটে করে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। এটি তেল ও গ্যাস খাত থেকে নির্গত এই শক্তিশালী গ্রিনহাউস গ্যাসের উৎস সম্পর্কে পাঁচ বছর ধরে তথ্য সংগ্রহ করবে বলে পরিকল্পনা ছিল। মিথেন গ্যাস মানবসৃষ্ট উষ্ণায়নের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের জন্য দায়ী।

স্যাটেলাইটটি তত্ত্বাবধায়ক এনজিও এনভায়রনমেন্টাল ডিফেন্স ফান্ড (ইডিএফ) জানিয়েছে, দশ দিন আগে স্যাটেলাইটের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং বর্তমানে ঘটনার কারণ তদন্ত চলছে। মিথেন গ্রিনহাউস গ্যাসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী—কার্বন ডাইঅক্সাইডের মতো দীর্ঘস্থায়ী না হলেও ১০০ বছরের সময়কালে এটি ২৮ গুণ বেশি তাপ ধরে রাখে। ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির (ইএসএ) তথ্য অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে মিথেন নির্গমন ৩০% কমানোর আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও, এর মাত্রা প্রতি বছর বাড়ছে এবং লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা কম।মিথেনের প্রধান উৎস হলো তেল-গ্যাস উৎপাদন, কৃষিকাজ এবং ল্যান্ডফিলে খাদ্যবর্জ্য পচন। তবে বর্তমানে মিথেন পর্যবেক্ষণকারী বেশিরভাগ স্যাটেলাইট বেসরকারিভাবে পরিচালিত হয়, যার ফলে কারা সবচেয়ে বেশি মিথেন নির্গমন করছে তা নিয়ে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে।

ইডিএফ-এর বছরব্যাপী গবেষণার পর তৈরি ‘মিথেনস্যাট’ তার তথ্য উন্মুক্ত করে দিয়েছিল, যাতে সরকার ও বিজ্ঞানীরা তা বিশ্লেষণ করতে পারেন। গুগল ও জেফ বেজোসের মতো প্রযুক্তি জায়ান্টদের নেতৃত্বে একটি কনসোর্টিয়াম এই প্রকল্পে $৮৮ মিলিয়ন বিনিয়োগ করেছিল।এই স্যাটেলাইটে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি বিশ্বের সবচেয়ে সংবেদনশীলগুলোর মধ্যে একটি, যা ক্ষুদ্রতম মিথেন উৎস এবং ‘সুপার-এমিটার’ শনাক্ত করতে সক্ষম।তেল-গ্যাসের তুলনায় কৃষিখাতে মিথেন নির্গমন বেশি বিস্তৃত হওয়ায়, সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। গুগল আশা করেছিল যে এই প্রকল্পটি ‘বিদ্যমান পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার ঘাটতি পূরণ করবে’ এবং এআই ব্যবহার করে একটি গ্লোবাল মিথেন ম্যাপ তৈরি করবে।কিন্তু মাত্র এক বছর পরই (৫ বছর মেয়াদী মিশনের মধ্যে) মিথেনস্যাটের সাথে যোগাযোগ হারিয়ে যায়। ইডিএফ-এর দল ধারণা করছে যে স্যাটেলাইটটি শক্তি হারিয়েছে এবং এটি ‘সম্ভবত পুনরুদ্ধারযোগ্য নয়’।তবে কিছু সফটওয়্যার পুনরায় ব্যবহার করা যেতে পারে, কিন্তু নতুন স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হবে কিনা তা নিয়ে এখনই কিছু বলা যায় না।

ইডিএফ-এর মতে, ‘জলবায়ু সংকট সমাধানে সাহসী পদক্ষেপ ও ঝুঁকি নেওয়া প্রয়োজন—এই স্যাটেলাইটটি ছিল বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পরিবেশ সুরক্ষার অগ্রভাগে।’মিথেন ডেটার আরেকটি বড় উন্মুক্ত উৎস হলো ‘কার্বনম্যাপার’, যা ইএসএ-এর সেন্টিনেল-৫পি স্যাটেলাইটের ট্রোপোমি যন্ত্রের তথ্য ব্যবহার করে। তবে এই মিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল গত অক্টোবরে, তাই এটি কতদিন আর তথ্য পাঠাতে পারবে তা অনিশ্চিত। ফলে, বিশ্বজুড়ে মিথেন নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টা আরও সীমিত হয়ে পড়তে পারে।

বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এনআইএন

সম্পাদক ও প্রকাশক :

মোঃ কামাল হোসেন

অফিস :

অফিস : ৬/২২, ইস্টার্ণ প্লাাজা (৬ তলা), কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স, হাতিরপুল, ঢাকা।

ইমেইল :