
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরছেন, তাঁর আগমন ঘিরে দলীয়ভাবে বিভিন্ন প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে—কিছুদিন ধরে রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন আলোচনা বা গুঞ্জন চলছে। যদিও তারেক রহমান ঠিক কবে নাগাদ দেশে ফিরছেন, সে বিষয়ে ঢাকায় বিএনপির নেতারা সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারছেন না। তবে তাঁরা বলছেন, শিগগিরই তারেক রহমান দেশে ফিরছেন। তাঁর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঘিরে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। শনিবার (৫ জুলাই) একটি জাতীয় দৈনিকে 'তারেক রহমান দেশে ফিরছেন কবে' শিরোনামে একটি বিশদ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
বিএনপির দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, আগামী আগস্ট মাসের শেষ নাগাদ তারেক রহমানের দেশে ফেরার একটি সম্ভাবনা আছে। তবে সেটিও চূড়ান্ত কিছু নয়।
যদিও দলের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা তারেক রহমানের দেশে ফেরার পর তাঁর নিরাপত্তা, বাসভবন, রাজনৈতিক কার্যালয়সহ অন্যান্য বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সে ধরনের প্রস্তুতি দৃশ্যমান নয়।
এ বিষয়ে বিএনপির উচ্চপর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বললে তাঁরা জানান, তাঁরা দলের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতাকে দেশের মাটিতে গণ-অভ্যর্থনা জানাতে প্রস্তুত। কিন্তু তিনি এখনই ফিরবেন কি না, সে বিষয় চূড়ান্ত হয়নি। এ ক্ষেত্রে আগামী জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তাসহ নানা দিক বিবেচনায় নিতে হচ্ছে। তাই কোন সময় দেশে ফিরলে বিএনপির রাজনৈতিক অর্জনের পাশাপাশি ব্যক্তি তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনটা উজ্জ্বল হয়, সেটি দেখা হচ্ছে।
বিএনপির দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, আগামী আগস্ট মাসের শেষ নাগাদ তারেক রহমানের দেশে ফেরার একটি সম্ভাবনা আছে। তবে সেটিও চূড়ান্ত কিছু নয়।
জুলাই-আগস্টের মধ্যে তারেক রহমানের ফেরা নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে একটি জোরালো আলোচনা আছে। এর কারণ, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূতি উপলক্ষে বিএনপি ৩৬ দিনের কর্মসূচি নিয়েছে। এর মধ্যে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ও পলায়নের বর্ষপূতিতে ঢাকায় বড় সমাবেশ করার পরিকল্পনা আছে বিএনপির। ওই সমাবেশে তারেক রহমান উপস্থিত থাকতে পারেন; নেতা-কর্মীদের মধ্যে এমন আলোচনা রয়েছে। তবে ঢাকায় দলের উচ্চপর্যায়ের নেতারা বিষয়টি নিশ্চিত করেননি।
গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করে রাখতে চায় বিএনপি। সেদিন বিমানবন্দরসহ রাজধানীতে বৃহত্তম জমায়েত করার পরিকল্পনা রয়েছে দলের। সে ক্ষেত্রে চলতি জুলাই বা আগস্টে তাঁর ফেরার বিষয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করেছে বর্ষা। আষাঢ় ও শ্রাবণ—এই দুই মাস বর্ষাকাল। আজ শনিবার, ৫ জুলাই ২১ আষাঢ়, এরপর শ্রাবণ মাস। এর ফলে বর্ষায় বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে তারেক রহমান দেশে ফিরলে বিমানবন্দরসহ ঢাকায় বিএনপির যে বড় জনসমাগমের পরিকল্পনা রয়েছে, তাতে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এর ফলে জুলাই-আগস্টে তারেক রহমানের দেশে ফেরায় কিছুটা অনিশ্চয়তা রয়েছে বলে দলের কেউ কেউ মনে করছেন।
বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত একজন চিন্তাশীল ব্যক্তি তারেক রহমানের দেশে ফেরার ক্ষেত্রে দুটি বিষয় দেখেন। তাঁর মতে, একটি ফেরা হতে পারে রাজসিকভাবে লালগালিচায়। সেটি হতে পারে নির্বাচনে জয়ী হয়ে অথবা সরকার গঠনের আগে-পরে। আরেকটি হতে পারে, নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ তৈরি করতে বিশেষ প্রয়োজনে।
এমতাবস্থায় তারেক রহমানের দেশে ফেরার সম্ভাব্য সময় নিয়ে আরও কয়েকটি আলোচনা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এর একটি হতে পারে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ঠিক আগে অথবা তফসিল ঘোষণার পরপর। এ সময়ে দেশে ফিরে তিনি দলের পক্ষে একটি জোয়ার সৃষ্টি করে নির্বাচনে ভালো ফল আদায়ে ভূমিকা রাখতে পারেন।
আরেকটি আলোচনা হলো, লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর যৌথ ঘোষণা অনুযায়ী আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। এতে কোনো অনিশ্চয়তা তৈরি হলে তখন সরকারের ওপর চূড়ান্তভাবে চাপ তৈরির জন্য তারেক রহমানের উপস্থিতি জরুরি হয়ে উঠতে পারে। এখন পর্যন্ত সে ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। সবকিছু ঠিকভাবে এগোলে ডিসেম্বরের শেষ অথবা জানুয়ারির শুরুর দিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তাসহ নানা দিক বিবেচনায় নিতে হচ্ছে। তাই কোন সময় দেশে ফিরলে বিএনপির রাজনৈতিক অর্জনের পাশাপাশি ব্যক্তি তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনটা উজ্জ্বল হয়, সেটি দেখা হচ্ছে।
এ রকম পরিস্থিতিতে তারেক রহমানের দেশে ফেরার দিনক্ষণ নিয়ে নানামুখী চিন্তা রয়েছে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের।
লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ মনে করেন, তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনটা হয়তো নির্বাচনী শোডাউনের একটা অংশ হবে। হয়তো সেইভাবে প্রস্তুতি নিয়েই তিনি দেশে ফিরবেন।
ধারণা করা হচ্ছে, তারেক রহমান দেশে ফেরার পর গুলশান-২ অ্যাভিনিউ রোডের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে থাকবেন। ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর তৎকালীন সরকার তাঁর স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এই বাড়ি বরাদ্দ দেয়। সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার এই বাড়ির নামজারি সম্পন্ন করে এ–সংক্রান্ত কাগজপত্র খালেদা জিয়ার হাতে হস্তান্তর করে। এর পাশের বাড়ি ফিরোজায় থাকেন খালেদা জিয়া। গুলশানের ১৯৬ নম্বর বাড়িটি ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ-এর কাছে ভাড়া দেওয়া ছিল।
জানা গেছে, ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো এ বছরের শুরুর দিকে বাড়িটি ছেড়ে দিয়েছে। এখন নতুন করে বাড়ির ভেতরে-বাইরে রং করাসহ প্রয়োজনীয় সংস্কারকাজ চলছে।
এক-এগারোর জরুরি সরকারের সময় ২০০৭ সালের ৭ মার্চ তারেক রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পেয়ে ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য তিনি সপরিবার লন্ডনে যান। পরে সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। প্রায় ১৭ বছর ধরে লন্ডনে আছেন। এর মধ্যে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়া হলে তারেক রহমান দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর তারেক রহমান প্রায় সব মামলা থেকে অব্যাহতি পান। তাঁর দেশে ফেরার ক্ষেত্রে সরকারের দিক থেকে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তারেক রহমান কবে দেশে ফিরবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকায় বিএনপির নেতারা বলে থাকেন ‘শিগগিরই’ দেশে ফিরবেন তিনি। গত ১০ জুন গুলশান কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘তারেক সাহেব নিশ্চয়ই দেশে ফিরবেন, অবশ্যই দেশে ফিরবেন।’ কবে ফিরবেন, সে প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘শিগগিরই ফিরবেন।’ তবে দিনক্ষণ কোনো কিছু বলেননি বিএনপির মহাসচিব।
সর্বশেষ ২৬ জুন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিও বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন। তাঁর আগমনের প্রস্তুতি শুধু দলের মধ্যে নয়, জাতীয় পর্যায়েও নেওয়া হচ্ছে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় একটি স্লোগান ছিল বিএনপির নেতা-কর্মীদের মুখেমুখে। এই স্লোগান দিয়েই নেতারা বক্তৃতা শেষ করতেন। সেটি হচ্ছে, ‘তারেক রহমান বীরের বেশে, আসবে ফিরে বাংলাদেশে’। এই স্লোগান উল্লেখ করে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত একজন চিন্তাশীল ব্যক্তি তারেক রহমানের দেশে ফেরার ক্ষেত্রে দুটি বিষয় দেখেন। তাঁর মতে, একটি ফেরা হতে পারে রাজসিকভাবে লালগালিচায়। সেটি হতে পারে নির্বাচনে জয়ী হয়ে অথবা সরকার গঠনের আগে-পরে। আরেকটি হতে পারে, নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ তৈরি করতে বিশেষ প্রয়োজনে।
সূত্র : প্রথম আলো
বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এসকে
বিএনপির দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, আগামী আগস্ট মাসের শেষ নাগাদ তারেক রহমানের দেশে ফেরার একটি সম্ভাবনা আছে। তবে সেটিও চূড়ান্ত কিছু নয়।
যদিও দলের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা তারেক রহমানের দেশে ফেরার পর তাঁর নিরাপত্তা, বাসভবন, রাজনৈতিক কার্যালয়সহ অন্যান্য বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সে ধরনের প্রস্তুতি দৃশ্যমান নয়।
এ বিষয়ে বিএনপির উচ্চপর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বললে তাঁরা জানান, তাঁরা দলের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতাকে দেশের মাটিতে গণ-অভ্যর্থনা জানাতে প্রস্তুত। কিন্তু তিনি এখনই ফিরবেন কি না, সে বিষয় চূড়ান্ত হয়নি। এ ক্ষেত্রে আগামী জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তাসহ নানা দিক বিবেচনায় নিতে হচ্ছে। তাই কোন সময় দেশে ফিরলে বিএনপির রাজনৈতিক অর্জনের পাশাপাশি ব্যক্তি তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনটা উজ্জ্বল হয়, সেটি দেখা হচ্ছে।
বিএনপির দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, আগামী আগস্ট মাসের শেষ নাগাদ তারেক রহমানের দেশে ফেরার একটি সম্ভাবনা আছে। তবে সেটিও চূড়ান্ত কিছু নয়।
জুলাই-আগস্টের মধ্যে তারেক রহমানের ফেরা নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে একটি জোরালো আলোচনা আছে। এর কারণ, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূতি উপলক্ষে বিএনপি ৩৬ দিনের কর্মসূচি নিয়েছে। এর মধ্যে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ও পলায়নের বর্ষপূতিতে ঢাকায় বড় সমাবেশ করার পরিকল্পনা আছে বিএনপির। ওই সমাবেশে তারেক রহমান উপস্থিত থাকতে পারেন; নেতা-কর্মীদের মধ্যে এমন আলোচনা রয়েছে। তবে ঢাকায় দলের উচ্চপর্যায়ের নেতারা বিষয়টি নিশ্চিত করেননি।
গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করে রাখতে চায় বিএনপি। সেদিন বিমানবন্দরসহ রাজধানীতে বৃহত্তম জমায়েত করার পরিকল্পনা রয়েছে দলের। সে ক্ষেত্রে চলতি জুলাই বা আগস্টে তাঁর ফেরার বিষয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করেছে বর্ষা। আষাঢ় ও শ্রাবণ—এই দুই মাস বর্ষাকাল। আজ শনিবার, ৫ জুলাই ২১ আষাঢ়, এরপর শ্রাবণ মাস। এর ফলে বর্ষায় বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে তারেক রহমান দেশে ফিরলে বিমানবন্দরসহ ঢাকায় বিএনপির যে বড় জনসমাগমের পরিকল্পনা রয়েছে, তাতে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এর ফলে জুলাই-আগস্টে তারেক রহমানের দেশে ফেরায় কিছুটা অনিশ্চয়তা রয়েছে বলে দলের কেউ কেউ মনে করছেন।
বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত একজন চিন্তাশীল ব্যক্তি তারেক রহমানের দেশে ফেরার ক্ষেত্রে দুটি বিষয় দেখেন। তাঁর মতে, একটি ফেরা হতে পারে রাজসিকভাবে লালগালিচায়। সেটি হতে পারে নির্বাচনে জয়ী হয়ে অথবা সরকার গঠনের আগে-পরে। আরেকটি হতে পারে, নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ তৈরি করতে বিশেষ প্রয়োজনে।
এমতাবস্থায় তারেক রহমানের দেশে ফেরার সম্ভাব্য সময় নিয়ে আরও কয়েকটি আলোচনা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এর একটি হতে পারে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ঠিক আগে অথবা তফসিল ঘোষণার পরপর। এ সময়ে দেশে ফিরে তিনি দলের পক্ষে একটি জোয়ার সৃষ্টি করে নির্বাচনে ভালো ফল আদায়ে ভূমিকা রাখতে পারেন।
আরেকটি আলোচনা হলো, লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর যৌথ ঘোষণা অনুযায়ী আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। এতে কোনো অনিশ্চয়তা তৈরি হলে তখন সরকারের ওপর চূড়ান্তভাবে চাপ তৈরির জন্য তারেক রহমানের উপস্থিতি জরুরি হয়ে উঠতে পারে। এখন পর্যন্ত সে ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। সবকিছু ঠিকভাবে এগোলে ডিসেম্বরের শেষ অথবা জানুয়ারির শুরুর দিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তাসহ নানা দিক বিবেচনায় নিতে হচ্ছে। তাই কোন সময় দেশে ফিরলে বিএনপির রাজনৈতিক অর্জনের পাশাপাশি ব্যক্তি তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনটা উজ্জ্বল হয়, সেটি দেখা হচ্ছে।
এ রকম পরিস্থিতিতে তারেক রহমানের দেশে ফেরার দিনক্ষণ নিয়ে নানামুখী চিন্তা রয়েছে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের।
লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ মনে করেন, তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনটা হয়তো নির্বাচনী শোডাউনের একটা অংশ হবে। হয়তো সেইভাবে প্রস্তুতি নিয়েই তিনি দেশে ফিরবেন।
ধারণা করা হচ্ছে, তারেক রহমান দেশে ফেরার পর গুলশান-২ অ্যাভিনিউ রোডের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে থাকবেন। ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর তৎকালীন সরকার তাঁর স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এই বাড়ি বরাদ্দ দেয়। সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার এই বাড়ির নামজারি সম্পন্ন করে এ–সংক্রান্ত কাগজপত্র খালেদা জিয়ার হাতে হস্তান্তর করে। এর পাশের বাড়ি ফিরোজায় থাকেন খালেদা জিয়া। গুলশানের ১৯৬ নম্বর বাড়িটি ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ-এর কাছে ভাড়া দেওয়া ছিল।
জানা গেছে, ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো এ বছরের শুরুর দিকে বাড়িটি ছেড়ে দিয়েছে। এখন নতুন করে বাড়ির ভেতরে-বাইরে রং করাসহ প্রয়োজনীয় সংস্কারকাজ চলছে।
এক-এগারোর জরুরি সরকারের সময় ২০০৭ সালের ৭ মার্চ তারেক রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পেয়ে ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য তিনি সপরিবার লন্ডনে যান। পরে সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। প্রায় ১৭ বছর ধরে লন্ডনে আছেন। এর মধ্যে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়া হলে তারেক রহমান দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর তারেক রহমান প্রায় সব মামলা থেকে অব্যাহতি পান। তাঁর দেশে ফেরার ক্ষেত্রে সরকারের দিক থেকে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তারেক রহমান কবে দেশে ফিরবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকায় বিএনপির নেতারা বলে থাকেন ‘শিগগিরই’ দেশে ফিরবেন তিনি। গত ১০ জুন গুলশান কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘তারেক সাহেব নিশ্চয়ই দেশে ফিরবেন, অবশ্যই দেশে ফিরবেন।’ কবে ফিরবেন, সে প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘শিগগিরই ফিরবেন।’ তবে দিনক্ষণ কোনো কিছু বলেননি বিএনপির মহাসচিব।
সর্বশেষ ২৬ জুন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিও বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন। তাঁর আগমনের প্রস্তুতি শুধু দলের মধ্যে নয়, জাতীয় পর্যায়েও নেওয়া হচ্ছে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় একটি স্লোগান ছিল বিএনপির নেতা-কর্মীদের মুখেমুখে। এই স্লোগান দিয়েই নেতারা বক্তৃতা শেষ করতেন। সেটি হচ্ছে, ‘তারেক রহমান বীরের বেশে, আসবে ফিরে বাংলাদেশে’। এই স্লোগান উল্লেখ করে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত একজন চিন্তাশীল ব্যক্তি তারেক রহমানের দেশে ফেরার ক্ষেত্রে দুটি বিষয় দেখেন। তাঁর মতে, একটি ফেরা হতে পারে রাজসিকভাবে লালগালিচায়। সেটি হতে পারে নির্বাচনে জয়ী হয়ে অথবা সরকার গঠনের আগে-পরে। আরেকটি হতে পারে, নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ তৈরি করতে বিশেষ প্রয়োজনে।
সূত্র : প্রথম আলো
বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এসকে