​দুর্ভিক্ষের শঙ্কা ব্যবসায়ীদের

গ্যাস সংকটে বন্ধ হচ্ছে কারখানা, দেয়ালে ঠেকে গেছে পিঠ

আপলোড সময় : ২৫-০৫-২০২৫ ০৭:০৪:৩৮ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২৫-০৫-২০২৫ ০৯:৪৫:৫৬ অপরাহ্ন
বিল দিতে হয় কিন্তু প্রত্যাশিত পরিমাণ গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না। বন্ধ হচ্ছে একের পর এক কারখানা। এগুলো শিল্পকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র। উদ্যোক্তাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আর টিকে থাকার কোনো উপায় নেই বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)।

সরকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন বস্ত্র খাতের ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, এভাবে চলতে থাকলে ঈদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করা কঠিন হবে। কয়েক মাসের মধ্যে বন্ধ হতে পারে অর্ধেক টেক্সটাইল কারখানা। 

রোববার (২৫ মে) রাজধানীর গুলশান ক্লাবে শিল্পখাতে জ্বালানি সংকট নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়।

টেক্সটাইল কারখানাগুলোর মালিকদের সংগঠন বিটিএমএ'র সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, দেশের শিল্পকারখানা বিশেষ করে টেক্সটাইল মিল এবং পোশাক খাতে গ্যাস সরবরাহে খুবই সংকট তৈরি হয়েছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে চলা পরিস্থিতিতে সমস্যা আরও প্রকট হচ্ছে। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন শিল্প উদ্যোক্তা এবং রফতানিকারকরা।

তিনি বলেন, এক থেকে দেড় মাস ধরে চলা প্রকট গ্যাস সংকটে দেশের রপ্তানিনির্ভর ও স্থানীয় টেক্সটাইল মিল এবং পোশাক খাতসহ অনেক খাতের কারখানা/মিলের উৎপাদন আংশিক অথবা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে। 

শওকত আজিজ রাসেল বলেন, গ্যাসের অভাবে পোশাক কারখানাগুলো উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারায় চলমান কার্যাদেশ অনুযায়ী যথাসময়ে পণ্য সরবরাহের জন্য বাধ্য হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে বিমান পথে অতিরিক্ত খরচে পণ্য সরবরাহ করতে হচ্ছে। এতে পোশাক কারখানাগুলোকে বিশাল অংকের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। 

লিখিত বক্তব্যে বিটিএমএ সভাপতি বলেন, টেক্সটাইল মিল এবং পোশাক কারখানাসহ অন্যান্য খাত গুলোতে গ্যাসের সংকট দীর্ঘদিনের। একইসঙ্গে বিদ্যুতের লোডশেডিং সব মাত্রা অতিক্রম করে গেছে। তিনি আরও বলেন, গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের আশ্বাসে গত কয়েক বছরে দফায় দফায় ৩০০ শতাংশ এর অধিক মূল্য বৃদ্ধি করা হয়। সেই সঙ্গে মিল মালিকদের সিকিউরিটি বাবদ অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করতে হয়। 

শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাসের সরবরাহের নামে মূল্য বৃদ্ধি করা হলেও বাস্তবে গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়নি বলে মন্তব্য করেন শওকত আজিজ রাসেল।

দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য কাপড় ও সুতার বড় অংশ জোগান দেয় স্থানীয় টেক্সটাইল কারখানাগুলো। বড় বিনিয়োগে গ্যাসনির্ভর এসব শিল্প এখন চরম সংকটে। জ্বালানির অভাবে বন্ধ থাকছে বেশিরভাগ সময়। নষ্ট হচ্ছে যন্ত্রপাতি। টানতে হচ্ছে চড়া সুদের ব্যাংক ঋণ। বিকল্প জ্বালানিতে খরচও বাড়ছে। দাম বাড়ানোর পরও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গ্যাস না পেয়ে ক্ষুব্ধ শিল্পমালিকরা। তাদের অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবেই ধ্বংস করা হচ্ছে শিল্পগুলো। সরকারের পরিকল্পনাহীনতার খেসারত দিচ্ছেন তারা। 

বিটিএমএ’র সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, আমাদের উপদেষ্টা সাহেবরা মনে হয় উটপাখির মতো হয়ে গেছে। চারদিকে কি হচ্ছে মনে হয় তারা দেখতে পারছেন না। প্রতিনিয়ত আমাদের লে অফ হচ্ছে। কিছুদিন পরে মানুষ রাস্তায় নামবে। আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি হবে। দুর্ভিক্ষের মতো অবস্থা হবে যদি আপনি শিল্পকে বাঁচাতে না পারেন।

বাংলা স্কুপ/প্রতিবেদক/এসকে

সম্পাদক ও প্রকাশক :

মোঃ কামাল হোসেন

অফিস :

অফিস : ৬/২২, ইস্টার্ণ প্লাাজা (৬ তলা), কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স, হাতিরপুল, ঢাকা।

ইমেইল :