
গত পাঁচ বছরে হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি সংরক্ষিত বনের ভেতর দিয়ে চলে যাওয়া পুরাতন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে গাড়িচাপায় শতাধিক প্রাণি মারা গেছে। বহু প্রাণি আহত হয়ে পঙ্গু হয়েছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেল ৩টার দিকে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে বিপন্ন প্রজাতির মুখপোড়া হনুমানের একটি বাচ্চা গাড়ির চাপায় মারা যায়। আহত হয় মা হনুমানটি। বন বিভাগ মৃত বাচ্চাটি উদ্ধার করে নিয়ে গেছে। তবে আহত মা হনুমানটিকে খুঁজে পায়নি।
সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক এক সদস্য বলেন, “কয়েক বছরের মধ্যে গাড়িচাপায় ১২ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি কিং কোবরা, একটি শঙ্খিনী সাপ, একটি কালনাগিনী সাপ, একটি চশমাপরা হনুমান, একটি মুখপোড়া হনুমান, একটি মায়া হরিণ ও কয়েকটি বানর মারা যাওয়ার পর আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। এছাড়া আরও অনেক প্রাণি মারা যাওয়ার খবর শুনেছি। গত পাঁচ বছরে দুর্ঘটনাজনিত কারণে মারা যাওয়া প্রাণির সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে যাবে।”তিনি আরও বলেন, “স্থানীয়দের মতে-গাড়িচাপায় সবচেয়ে বেশি মারা যায় বানর। কারণ এরা রাস্তার পাশে বেশি ঘোরাফেরা করে। এছাড়া মারা যায় হনুমান, বন মোরগ, সজারু, বনরুই ও বিভিন্ন প্রজাতির সাপ।”
প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে বর্তমানে ১৯৭ প্রজাতির জীবজন্তুর বসবাস। এর মধ্যে ২৪ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ৬ প্রজাতির উভচর প্রাণি এবং আরও প্রায় ২০০ প্রজাতির পশুপাখি রয়েছে। প্রাণির মৃত্যুর বিষয়ে বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ সোসাইটির (ডব্লিউসিএস) সমন্বয়কারী সামিউল মোহসেনিন বলেন, “বনের ভেতর দিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার সড়কে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতিসীমা ২০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা থাকলেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক রোড সাইন নেই। চালকরাও প্রাণির প্রতি সদয় আচরণ করেন না। ফলে দিন দিন প্রাণি মৃত্যুর হার বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে রোড সাইন বাড়ানোসহ জরুরি প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিকল্প নেই।”তিনি আরও বলেন, “একটি জার্মান আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা সাতছড়িতে প্রাণি মৃত্যুর হার নির্ধারণে কাজ করছে। তারা এখানকার পরিস্থিতি নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন।”
বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মীর জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “সাতছড়িতে ঠিক কত প্রাণি মারা গেছে, তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। তবে অনেক প্রাণি যে গাড়িচাপায় মারা যাচ্ছে, তা সত্যি। মূলত সড়ক পরিবহন আইনে স্পিড ব্রেকার নির্মাণের বিধান না থাকায় এমনটা ঘটছে।”তিনি দাবি করেন, “গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার প্রাণি মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা কমেছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান স্যারের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিয়ে কিছু করার চেষ্টা করব।”
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন কয়েক শতাধিক বালু ও পাথরবোঝাই ট্রাক সাতছড়ি সংরক্ষিত বনের ভেতর দিয়ে যাতায়াত করে। এছাড়া বাস, ট্রাক ও ট্রাক্টরসহ বিভিন্ন যানবাহন বেপরোয়া গতিতে বনের মধ্যবর্তী সড়ক ব্যবহার করছে, যা প্রাণি মৃত্যুর জন্য দায়ী। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ছয় মাস আগেও যানবাহনের নিচে চাপা পড়ে মুখপোড়া হনুমান মারা গিয়েছিল। এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।” তিনি আরও বলেন, “সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে মাত্র কয়েক জোড়া বিপন্ন হনুমান টিকে আছে। এভাবে একের পর এক হনুমান মারা গেলে সাতছড়ি থেকে বিলীন হয়ে যাবে এ প্রাণিটি।”
বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন
সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক এক সদস্য বলেন, “কয়েক বছরের মধ্যে গাড়িচাপায় ১২ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি কিং কোবরা, একটি শঙ্খিনী সাপ, একটি কালনাগিনী সাপ, একটি চশমাপরা হনুমান, একটি মুখপোড়া হনুমান, একটি মায়া হরিণ ও কয়েকটি বানর মারা যাওয়ার পর আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। এছাড়া আরও অনেক প্রাণি মারা যাওয়ার খবর শুনেছি। গত পাঁচ বছরে দুর্ঘটনাজনিত কারণে মারা যাওয়া প্রাণির সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে যাবে।”তিনি আরও বলেন, “স্থানীয়দের মতে-গাড়িচাপায় সবচেয়ে বেশি মারা যায় বানর। কারণ এরা রাস্তার পাশে বেশি ঘোরাফেরা করে। এছাড়া মারা যায় হনুমান, বন মোরগ, সজারু, বনরুই ও বিভিন্ন প্রজাতির সাপ।”
প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে বর্তমানে ১৯৭ প্রজাতির জীবজন্তুর বসবাস। এর মধ্যে ২৪ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ৬ প্রজাতির উভচর প্রাণি এবং আরও প্রায় ২০০ প্রজাতির পশুপাখি রয়েছে। প্রাণির মৃত্যুর বিষয়ে বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ সোসাইটির (ডব্লিউসিএস) সমন্বয়কারী সামিউল মোহসেনিন বলেন, “বনের ভেতর দিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার সড়কে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতিসীমা ২০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা থাকলেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক রোড সাইন নেই। চালকরাও প্রাণির প্রতি সদয় আচরণ করেন না। ফলে দিন দিন প্রাণি মৃত্যুর হার বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে রোড সাইন বাড়ানোসহ জরুরি প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিকল্প নেই।”তিনি আরও বলেন, “একটি জার্মান আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা সাতছড়িতে প্রাণি মৃত্যুর হার নির্ধারণে কাজ করছে। তারা এখানকার পরিস্থিতি নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন।”
বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মীর জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “সাতছড়িতে ঠিক কত প্রাণি মারা গেছে, তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। তবে অনেক প্রাণি যে গাড়িচাপায় মারা যাচ্ছে, তা সত্যি। মূলত সড়ক পরিবহন আইনে স্পিড ব্রেকার নির্মাণের বিধান না থাকায় এমনটা ঘটছে।”তিনি দাবি করেন, “গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার প্রাণি মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা কমেছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান স্যারের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিয়ে কিছু করার চেষ্টা করব।”
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন কয়েক শতাধিক বালু ও পাথরবোঝাই ট্রাক সাতছড়ি সংরক্ষিত বনের ভেতর দিয়ে যাতায়াত করে। এছাড়া বাস, ট্রাক ও ট্রাক্টরসহ বিভিন্ন যানবাহন বেপরোয়া গতিতে বনের মধ্যবর্তী সড়ক ব্যবহার করছে, যা প্রাণি মৃত্যুর জন্য দায়ী। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ছয় মাস আগেও যানবাহনের নিচে চাপা পড়ে মুখপোড়া হনুমান মারা গিয়েছিল। এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।” তিনি আরও বলেন, “সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে মাত্র কয়েক জোড়া বিপন্ন হনুমান টিকে আছে। এভাবে একের পর এক হনুমান মারা গেলে সাতছড়ি থেকে বিলীন হয়ে যাবে এ প্রাণিটি।”
বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন