ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণ কেন্দ্র ধ্বংসের দাবি পাকিস্তানের

আপলোড সময় : ১০-০৫-২০২৫ ১১:৫৯:৫৫ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ১০-০৫-২০২৫ ০১:৩১:৫৬ অপরাহ্ন
জম্মু কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় হতাহতের ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে দেশটিতে হামলা করেছে ভারত। তারা এ অভিযানের নাম দিয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’।  জবাবে ভারতের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করেছে পাকিস্তান। শনিবার (১০ মে) ভোরে ‘অপারেশন বুনয়া নুম মারসূস’ নামের এ অভিযান শুরু করেছে বলে জানা গেছে। 

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বেশ কয়েকটি সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা করা হয়েছে। এতে ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের বিয়াসে থাকা একটি ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণ কেন্দ্র ধ্বংস করার দাবি করেছে পাকিস্তান। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি ভারত। 

পাকিস্তানি নিরাপত্তা সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে দেশটির বিভিন্ন মিডিয়ার খবরে বলা হয়, ভারতের বিভিন্ন কৌশলগত অবস্থান এ হামলার টার্গেট করা হয়েছে।

এর আগে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর তিনটি ঘাঁটিতে আক্রমণ চালায় ভারত। এগুলো হলো নূর খান এয়ার বেজ, মুরিদ বেস এবং শুরকোট এয়ার বেজ। ভারত এসব ঘাঁটিতে বিমান থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।

এর আগে পাকিস্তানের আইএসপিআরের মহাপরিচালক লে. জেনারেল আহমদ শরিফ চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পাকিস্তানকে পূর্ণ যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে ভারত। আমরা ভারতকে হুঁশিয়ার করে দিতে চাই যে, তারা এবার পাকিস্তানের জবাবের জন্য অপেক্ষা করুক।

তিনি জানান, ভারতের হামলা সত্ত্বেও পাকিস্তানের বিমান ঘাঁটিগুলো সুরক্ষিত রয়েছে। পারমাণবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার ঘোষণা পাকিস্তানের

ভারতের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার পরিপ্রেক্ষিতে আবারও নিজেদের পারমাণবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চাইছে পাকিস্তান।

সে লক্ষ্যে প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকার সংরক্ষণ করছে বলেই মন্তব্য করেছেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার রাশিদ ওয়ালি। শুক্রবার (০৯ মে) আল-জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। 

এদিকে পাকিস্তানের পাঞ্জাবের কয়েকটি জেলায় শুক্রবার আরও ৬টি ড্রোন গুলি করে নামিয়েছে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী। নিরাপত্তা ও মিলিটারি সূত্রের বরাত দিয়ে দেশটির গণমাধ্যম সামা টিভি জানিয়েছে, এ নিয়ে ভারতের ৭৭টি ড্রোন ধংস করেছে পাকিস্তান। যার মধ্যে রয়েছে ইসরাইল-নির্মিত ২৫টি ড্রোন।

সাক্ষাৎকারে ওয়ালি বলেন, ভারতের মতো একটি পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র এতটা বেপরোয়া হতে পারে, এটা ভেবে পাকিস্তান হতবাক হয়েছে। তিনি জানান, এ ক্ষেত্রে ইসলামাবাদের জবাব হবে ‘সামঞ্জস্যপূর্ণ ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুকে কেন্দ্র করে’।

এছাড়া গত ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনায় আন্তর্জাতিক তদন্তে সহযোগিতার প্রস্তাব দেয়ার পরও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘ভুয়া অভিযোগ’ তোলা হয়েছে বলেও দাবি করেন ব্রিগেডিয়ার রাশিদ ওয়ালি।

পাকিস্তানের এ অবস্থান দেশটির প্রতিরক্ষা নীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় নির্দেশ করে। যেখানে কূটনৈতিক চাপ ও সামরিক উত্তেজনার মধ্যে পারমাণবিক সম্ভাবনার ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তানের পাইলটরা। যদিও পাকিস্তানের এমন দাবি স্বীকার করেনি ভারত। অবশ্য তারা অস্বীকারও করেনি। যা নিয়ে কিছুটা ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। 

তবে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি ও মার্কিন গণমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস রাফালসহ ভারতের কয়েকটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। 

অপারেশন 'বুনিয়ান উন মারসুস' পরিচালনার করেছে পাকিস্তান। এর মাধ্যমে শুক্রবার মধ্যরাতে ভারত এবং ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বেশ কয়েকটি সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে আক্রমণ করা হয়েছে। এতে ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের বিয়াসে থাকা একটি ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণ কেন্দ্র ধ্বংস করার দাবি করেছে পাকিস্তান। তবে এ হামলার বিষয়ে মুখ খোলেনি ভারত। 

মূলত রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে 'ব্রহ্মস' সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন করে ভারত। ব্রহ্মস সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের সর্বোচ্চ ৮০০ কিলোমিটার (৪৯৭ মাইল) দূরে আঘাত হানতে পারে। এগুলো সাবমেরিন, জাহাজ এবং যুদ্ধবিমান সহ বিভিন্ন সামরিক যান থেকে উৎক্ষেপণ করা যেতে পারে।

সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বরাতে জানিয়েছে, এদিন একাধিক হামলা চালানো হয়েছে। ফাতাহ-১ মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ব্যবহার করে ভারতের সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হচ্ছে।

এর আগে শুক্রবার রাতে পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর তিনটি ঘাঁটি লক্ষ্য করে মিসাইল হামলা চালায় ভারত। দেশটির রাওয়ালপিন্ডির নূর খান বিমানঘাঁটি, সরকোটের রফিকি বিমান ঘাঁটি এবং চকওয়ালের মোরাইদ ঘাঁটিতে  হামলার ঘটনা ঘটেছে। তার কিছুক্ষণ পরেই পাল্টা হামলা চালিয়েছে শেহবাজ শরিফের দেশ।

বাংলা স্কুপ/ডেস্ক/এসকে





 

সম্পাদক ও প্রকাশক :

মোঃ কামাল হোসেন

অফিস :

অফিস : ৬/২২, ইস্টার্ণ প্লাাজা (৬ তলা), কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স, হাতিরপুল, ঢাকা।

ইমেইল :