বাংলাদেশ হয়ে সেভেন সিস্টার্স রুটের রেল প্রকল্প স্থগিত
ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় :
২১-০৪-২০২৫ ১১:১৬:৫২ পূর্বাহ্ন
আপডেট সময় :
২১-০৪-২০২৫ ১১:৫৭:১৬ পূর্বাহ্ন
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশে রেলওয়ে সংযোগ উন্নয়নে পাঁচ হাজার কোটি রুপির অর্থায়ন এবং নির্মাণকাজ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে ভারত। এই সিদ্ধান্তের কারণে ভারতের অর্থায়নে পরিচালিত তিনটি চলমান রেল প্রকল্প এবং পাঁচটি সম্ভাব্য সংযোগ রুটের জরিপ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে রেলপথের মাধ্যমে বাংলাদেশ হয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে তাদের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে (সেভেন সিস্টার্স) যুক্ত করার পরিকল্পনা অনেকটাই বন্ধের দারপ্রান্তে।
রোববার (২০ এপ্রিল) দেশটির পত্রিকা দ্য হিন্দুর এক প্রতিবেদনের বরাতে জানা গেছে, শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতাকে সামনে রেখে নয়াদিল্লি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই মুহূর্তে বাংলাদেশে নির্মাণসামগ্রী বা উপকরণ পাঠানো বন্ধ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তার বরাতে জানানো হয়েছে, “প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সংযোগ রুটে অর্থায়ন আপাতত বন্ধ। প্রকল্প পুনরায় চালু করতে হলে আগে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হতে হবে।” যদিও ভারতের অভ্যন্তরে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কাজগুলো চলমান রয়েছে।
স্থগিত হওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগ প্রকল্প। ৪০০ কোটি রুপি ব্যয়ে নির্মিতব্য এই রুটটির ১২.২৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মধ্যে ৬.৭৮ কিলোমিটার পড়েছে বাংলাদেশে এবং বাকি অংশ ভারতের ত্রিপুরায়। এছাড়া খুলাবুড়া-শাহবাজপুর রেললাইন প্রকল্প, খুলনা-মোংলা বন্দর রেললাইন প্রকল্প এবং ঢাকা-টঙ্গি-জয়দেবপুর রেললাইন সম্প্রসারণ প্রকল্পও থমকে গেছে।
বিশেষ করে মোংলা বন্দর রেলসংযোগ প্রকল্পটি ছিল ভারতের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণের এই প্রকল্পে ৩ হাজার ৩০০ কোটি রুপির সহায়তা দেওয়া হয়েছিল। এর মাধ্যমে ভারতের একটি কোম্পানি মোংলা বন্দরের একটি টার্মিনাল পরিচালনার সুযোগও পেত।
অন্যদিকে, ১ হাজার ৬০০ কোটি রুপির ঢাকা-টঙ্গি-জয়দেবপুর প্রকল্পের কাজ এখনো ৫০ শতাংশের বেশি অগ্রসর হয়নি। বিলম্ব ও অর্থ ছাড় সংক্রান্ত জটিলতা প্রকল্পটিকে আরও পিছিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছে দ্য হিন্দু।
এদিকে, নয়াদিল্লি এখন নিজেদের রেল নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করতে বিকল্প আঞ্চলিক পরিকল্পনার দিকে ঝুঁকছে। এর অংশ হিসেবে উত্তর প্রদেশ ও বিহারে রেললাইন দ্বিগুণ থেকে চারগুণ করার সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে। পাশাপাশি নেপাল ও ভুটান হয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে সংযোগ গড়ে তোলার চিন্তাভাবনাও রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি করিডরের ওপর থেকে নির্ভরতা কমাতেই ভারতের এই পরিকল্পনা। বিশেষ করে বিরাটনগর-নিউ মাল, গালগালিয়া-ভদ্রপুর, কুমেডপুর-আম্বারি ফালাকাটা ও পশ্চিমবঙ্গ-বিহার সীমান্তে নতুন রেললাইন নির্মাণ নিয়ে কাজ চলছে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার। দক্ষিণ এশিয়ায় ঢাকা ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। এমন পরিস্থিতিতে বড় আকারের রেল প্রকল্প স্থগিত হওয়ার ঘটনাকে আঞ্চলিক যোগাযোগ ও অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংকেত হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
সূত্র: দ্য হিন্দু
বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স