ঢাকা , শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫ , ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

​যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূতকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় : ১৫-০৩-২০২৫ ০৪:৫৯:৩৪ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১৫-০৩-২০২৫ ০৭:০৯:২০ অপরাহ্ন
​যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূতকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত ইব্রাহিম রসুলকে আর ‘স্বাগত জানানো হবে না’ বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মর্কো রুবিও। এমন এক সময় এই সিদ্ধান্ত এসেছে, যখন আফ্রিকান দেশগুলোর বিরুদ্ধে সম্প্রতি বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনকে।

সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মার্কো রুবিও বলেন, ‘ইব্রাহিম রসুল একজন ‘জাতি-বিদ্বেষী’ রাজনীতিবিদ, যিনি আমেরিকা ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ঘৃণা করেন। তার সঙ্গে আমাদের আলোচনার কিছু নেই, এখন থেকে তাকে পারসোনা নন গ্রাটা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।’-খবর এপি ও নিউ ইয়র্ক টাইমসের

এরমধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত হিসেবে তার ভূমিকার ইতি ঘটেছে। গেল ১৩ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে নিজের পরিচয়পত্র দেন ইব্রাহিম রসুল। যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছিলেন তিনি।

এরআগে ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত একই পদে দায়িত্ব পালন করেন দক্ষিণ আফ্রিকার এই রাজনীতিবিদ।

সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গ নেতৃত্বাধীন সরকারের সমালোচনা করতে দেখা গেছে ট্রাম্প ও তার মিত্র ইলন মাস্ককে। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকায়ই বেড়ে উঠেছেন ইলন মাস্ক। তাদের দাবি, দেশটিতে নতুন ভূমি আইনে শ্বেতাঙ্গদের বিরুদ্ধে বৈষম্য করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের ঘটনা খুবই অস্বাভাবিক। কখনো-কখনো নিম্ন পদ-মর্যাদার কূটনীতিকদের ‘পারসোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা করা হয়।

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোসার অফিস থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই বহিষ্কারের ঘটনা দুঃখজনক।’ এতে এ ঘটনায় প্রচলিত কূটনৈতিক রীতিনীতি অনুসরণ করতে কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারস্পরিক লাভজনক সম্পর্ক গড়তে দক্ষিণ আফ্রিকা অঙ্গীকারাবদ্ধ।’

শৈশবে কেপ টাউনের একটি গ্রাম থেকে ইব্রাহিম রসুলের পরিবারকে উচ্ছেদ করে সেখানকার শ্বেতাঙ্গরা। পরবর্তীতে তিনি বর্ণবাদবিরোধী প্রচারে নামেন। দেশটির বর্ণবাদবিরোধী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা তাকে ‘বন্ধু’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। ম্যান্ডেলার আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন ইব্রাহিম রসুল।

শুক্রবার জোহানেসবার্গের একটি ইনস্টিটিউটের ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে ইব্রাহিম রসুল বলেন, ‘ক্ষমতার বিরুদ্ধে, দক্ষিণ আফ্রিকায় যারা ক্ষমতায় আছেন, তাদের বিরুদ্ধে শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীদের আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।’

তিনি বলেন, ‘ক্ষমতার ওপর শ্রেষ্ঠত্ববাদী হামলা—আমরা এটিকে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি হিসেবে দেখি, এমএজিএ আন্দোলন, দ্য মেইক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন আন্দোলন—কেবল শ্রেষ্ঠত্বাবাদী প্রবৃত্তি থেকেই আসছে না, সুস্পষ্ট উপাত্ত বলে দিচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক জনমিতিক পরিবর্তনের কথা, যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেতাঙ্গ নির্বাচকমণ্ডলীর সংখ্যা ৪৮ শতাংশ হতে যাচ্ছে।’

সম্প্রতি ওয়াশিংটন ও প্রিটোরিয়ার মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। গেল ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় মার্কিন সহায়তা বন্ধ করার ঘোষণা দেন ট্রাম্প। শ্বেতাঙ্গদের কাছ থেকে ভূমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করে গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষকদের যুক্তরাষ্ট্রে স্বাগত জানানো হচ্ছে।’

সামাজিকমাধ্যম ট্রুথে তিনি বলেন, ‘যদি কোনো কৃষক নিরাপত্তার কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে পালিয়ে আসতে চান, তাকে যুক্তরাষ্ট্রে স্বাগত জানানো হচ্ছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাকে মার্কিন নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।’


বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ