চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি মোংলা কাস্টমস। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে এক হাজার ৭৮৬ কোটি টাকা রাজস্ব কম আদায় হয়েছে। তাছাড়া লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এ সময়ে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৭৩১ কোটি টাকা। গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হয়। যার প্রভাব পড়েছে রাজস্ব আদায়ে।
মোংলা কাস্টমস হাউজের কমিশনার ম. সফিউজ্জামান এ তথ্য জানিয়ে বলেন, রাজস্ব আদায় কম হওয়ার কারণ হিসেবে গত অর্থবছরের প্রথম সাত মাসের তুলনায় মোংলা বন্দরে ৫০টি জাহাজ কম এসেছে। যার মধ্যে সার ও ক্লিংকারবাহী জাহাজ ৪১টি, একটি গাড়ি এবং ৮টি কন্টেইনার জাহাজ। একইসঙ্গে ২৪ শতাংশ বিল অব এন্ট্রি কমে যাওয়ায় রাজস্ব আদায়ও কমেছে।তিনি আরও বলেন, মোংলা কাস্টমসের ৫৭ ভাগ রাজস্ব আসে মোংলা বন্দরে গাড়ি আমদানির মাধ্যমে। গত বছরের প্রথম সাত মাসে গাড়ি খালাস হয়েছে ৭,৮৫৮টি। কিন্তু চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে ৬,০৬৩টি গাড়ি খালাস হয়। ১৭৯৫টি গাড়ি খালাস কম হওয়ায় আনুপাতিক হারে রাজস্ব কমে গেছে।
এছাড়া গত অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে কন্টেইনার এসেছিল ৫,৬০০টি। কিন্তু চলতি অর্থবছরের ঠিক একই সময়ে কন্টেইনার এসেছে ২,০১৮টি। ৩,৪০০টি কন্টেইনার কম খালাস হওয়ায় রাজস্ব কম আদায় হয়েছে। অপরদিকে গত অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে বিল অব এন্ট্রি হয়েছে ১০,৪০০টি। কিন্তু চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে ২৪ শতাংশ কমে ৭,৮৩৫ বিল অব এন্ট্রি হওয়ায় রাজস্ব কম আদায় হয়েছে বলেও জানান কাস্টমস কমিশনার ম. সফিউজ্জামান।তিনি আরও বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোংলা কাস্টম হাউজে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আদায় হয়েছিল চার হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা। আর ৩২ শতাংশ রাজস্ব বৃদ্ধি করে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ছয় হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রথম সাত মাসে তিন হাজার ৬২৬ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও আদায় হয়েছে এক হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এখানে রাজস্ব কমেছে এক হাজার ৭৮৬ কোটি টাকা। এছাড়া গেলো অর্থবছরের তুলনায় একই সময়ে রাজস্ব কমে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৩১ কোটি টাকা।
এদিকে মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ী জুলফিকার আলী ও মশিউর রহমান অভিযোগ করে বলেন, এলসি খোলায় কড়াকড়ি ও আমদানি নিয়ন্ত্রণের কারণেই এমন পরিস্থিতি। অধিক শুল্কমুক্ত পণ্য আমদানিতে জটিলতা নিরসনসহ কতিপয় কাস্টমস কর্মকর্তার হয়রানি কমাতে পারলে মোংলা বন্দরে পণ্য আমদানি বাড়বে। একই সাথে রাজস্ব বাড়বে মোংলা কাস্টমসের।
বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি /এনআইএন