ঢাকা , সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ১২ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

​উপযুক্ত মানুষ পেলে স্বাগত জানিয়ে চলে যাব : তৌহিদ হোসেন

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ২৪-০২-২০২৫ ০৭:৫৭:২০ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২৪-০২-২০২৫ ০৭:৫৭:২০ অপরাহ্ন
​উপযুক্ত মানুষ পেলে স্বাগত জানিয়ে চলে যাব : তৌহিদ হোসেন ​ছবি: সংগৃহীত
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার সাত মাসের বেশি পার করে ফেলেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন সাবেক কূটনীতিক মো. তৌহিদ হোসেন। তাঁর নেতৃত্বে কূটনীতিক অঙ্গনে সাফল্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু মহল সমালোচনা করছে। তার জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, যদি কাউকে পাওয়া যায় এরচেয়ে ভালো পারবে, আমি খুব আনন্দের সঙ্গে তাকে এখানে স্বাগত জানিয়ে চলে যাব।

তৌহিদ হোসেন বলেন, আমার মন্তব্য এটুকু, নিশ্চই আমি পারছি না। না হলে এ প্রশ্ন আসছে কেন? আমি শুধু এটুকু বলতে পারি যে, যদি কাউকে পাওয়া যায় এরচেয়ে ভালো পারবে আমি খুব আনন্দের সঙ্গে তাকে এখানে স্বাগত জানিয়ে চলে যাব।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সাহিত্য উৎসবে বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকরের মন্তব্যের বিপরীতে সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি)  তিনি একথা বলেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ‘সংখ্যালঘু সম্পর্কে তিনি (জয়শংকর) আবারও বলেছেন। তবে সংখ্যালঘু বিষয়টি হচ্ছে যে, এই অভিযোগগুলো প্রধানত ভারতীয় মিডিয়া যে বিকৃত তথ্য প্রবাহ সৃষ্টি করেছে, তার ভিত্তিতে এগুলো বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন জন বলে বেড়াচ্ছে। তার চেয়েও বড় কথা হলো— বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ভারতের বিষয় হতে পারে না। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু বাংলাদেশের বিষয়। যেমন- ভারতের সংখ্যালঘুদের সঙ্গে কী ধরনের আচরণ করা হচ্ছে, সেটি ভারতের বিষয়। কাজেই আমি মনে করি, হস্তক্ষেপ না করার নীতি অনুসরণ করতে হবে। সংখ্যালঘুদের বিষয়টি আমরা দেখছি। তারা বাংলাদেশের নাগরিক। আমার যতটুকু অধিকার আছে, তাদের প্রত্যেকের ততটুকু অধিকার আছে। সরকার সেটাই বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবে।

ভারতের সঙ্গে কী ধরনের সম্পর্ক হবে, সেটি বাংলাদেশকেই ঠিক করতে হবে, জয়শংকরের এমন মন্তব্যের  বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, অবশ্যই বাংলাদেশ সিদ্ধান্ত নেবে ভারতের সঙ্গে কী ধরনের সম্পর্ক চায়। একইভাবে ভারতকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে— তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়। এটি দুপক্ষের বিষয় এবং এটা বলাতে দোষের কিছু নেই। আমার মনে হয়, এ বিষয়ে আমাদের স্পষ্ট সিদ্ধান্ত আছে। আমরা ভারতের সঙ্গে ভালো কার্যকর সম্পর্ক (গুড ওয়ার্কিং রিলেশনস) চাই। সেটার ভিত্তি হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও স্বার্থ। এ বিষয়ে আমাদের কোনও অস্পষ্টতা নেই।’

তৌহিদ হোসেন বলেন,  ভারত কেমন সম্পর্ক চায়, সেটি তারা সিদ্ধান্ত নেবে। তবে উনি (জয়শংকর) কিন্তু বলেছেন যে, ‘বাংলাদেশের বিভিন্ন জন আপত্তিকর কথাবার্তা বলছে, সরকারের ভেতর থেকে ভারতবিরোধী কথা বলছে।’ আমি এ নিয়ে ন্যায়-অন্যায়, উচিত-অনুচিত বিচার করতে চাই না। আমার কথা হলো, এ রকম কথা আমাদের এখান থেকে বলছে, তাদের ওখান থেকেও বলছে। ওনাদের মুখ্যমন্ত্রী তো পারলে বাংলাদেশে জাতিসংঘ দল পাঠিয়ে দেয়। শান্তিরক্ষী দল পাঠিয়ে দেয়। তাদের একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অহরহ বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। ঠিক আছে, এগুলো চলতে থাকবে ধরে নিয়েই সম্পর্ক ভালো করা যায় কিনা, সেই চেষ্টা করছি। কাজেই আমাদের অবস্থান হচ্ছে এটাই যে, আশেপাশে থেকে দুই-চারজন কী বললো না বললো, সেটাতে মনোযোগ না দিয়ে বরং আমরা আমাদের সম্পর্ক ভালো করার চেষ্টা করি।

সম্পর্ক ভালো করতে গেলে, বরং আমাদের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ওখানে ভারতীয় আতিথেয়তায় থেকে যেসব কথাবার্তা বলছেন, সেগুলো তো আসলে ক্ষতিকর। সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর। ঠিক আছে, আমাদের অস্থিতিশীলতা বা এ ধরনের কিছু আমাদেরকেই সামাল দিতে হবে। কিন্তু তার বক্তব্য যে আগুনে ঘি ঢেলে দিচ্ছে, সেটিতো স্বীকৃত বিষয়। সবাই জানে এটি। একইভাবে ভিসার বিষয়ও। ভিসা সম্পূর্ণভাবে তাদের নিজস্ব বিষয়। তারা কাউকে না দিলে আমাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু যখন ভিসা দেওয়া হচ্ছে না, বা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে সাংঘাতিকভাবে, আমরা তো বিকল্প খুঁজে নেবোই বলে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
 
বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/ এনআইএন/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ