দ্য ন্যাশনালকে প্রধান উপদেষ্টা
শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীরা শাস্তি এড়াতে পারবে না
ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় :
১৪-০২-২০২৫ ০২:৪৭:৫৩ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১৪-০২-২০২৫ ০২:৪৭:৫৩ অপরাহ্ন
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর শাসনামলের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ড. ইউনূস বলেছেন, শেখ হাসিনা ও তাঁর সহযোগীরা শাস্তি এড়াতে পারবে না এবং তাদের আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে। আমরা ইতিমধ্যেই আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছি এবং আশা করছি যে, শেখ হাসিনাকে বিচারের আওতায় আনা হবে। এটা ঘটতে হবে, অন্যথায় জনগণ আমাদের ক্ষমা করবে না।
ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিটে অংশগ্রহণের জন্য দুবাই সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন।
শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবনে হামলার পর তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ ত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর ড. ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিযুক্ত করা হয়। শেখ হাসিনা ১৫ বছর ধরে একদলীয় শাসন চালিয়েছিলেন, এবং জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র বিক্ষোভে তার পুলিশ ও সমর্থকদের হাতে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত ও ১১,০০০ জন আহত হয়।
ড. ইউনূস দ্য ন্যাশনালকে বলেন, আমরা ভারতকে নোটিশ পাঠিয়েছি যে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনা উচিত। আমাদের কাছে প্রচুর প্রমাণ রয়েছে, যার মধ্যে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের প্রতিবেদনও রয়েছে। এটি তাদের সমস্ত কাজের প্রমাণ। জাতিসংঘ এটি নথিভুক্ত করেছে এবং আমরা তার সরকার ও সমর্থকদের কর্মকাণ্ডের প্রমাণ সংগ্রহ করেছি।
অভ্যুত্থানের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহতদের মধ্যে ১৩ শতাংশ শিশু বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া, বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে যে তাদের ৪৪ জন কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। বাংলাদেশে অস্থিরতার সময় সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশিদের মধ্যে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে
সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৫৩ জন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, কিন্তু ইউনূসের ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপের পর তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। তিনি বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে আমাদের সম্পর্ক দারুণ। আমি রাষ্ট্র প্রধানের কাছে আবেদন করেছিলাম এবং তিনি আমার অনুরোধে বিক্ষোভকারীদের মুক্তি দিয়েছেন। এটি একটি দুর্দান্ত পদক্ষেপ ছিল।
ড. ইউনূস ও তার উপদেষ্টারা এখন অভ্যন্তরীণ সংস্কারের দিকে মনোনিবেশ করেছেন। বিচার বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ ও প্রশাসনিক সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়েছে। এছাড়া, একটি দুর্নীতি দমন কমিশন পূর্ববর্তী প্রশাসনের অপব্যবহারকৃত তহবিল পুনরুদ্ধারের কাজ করবে।
ড. ইউনূস বলেন, আমাদের তাৎক্ষণিক লক্ষ্য হল আইন-শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করা এবং অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করা। আমরা একটি সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাই। তিনি বলেছেন, তার সরকারের লক্ষ্য একটি শক্তিশালী ও গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব গঠন করা, যা দেশকে আরও সমৃদ্ধ ও নিরাপদ করবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে ডিসেম্বরের নির্বাচনের মাধ্যমে একটি স্থিতিশীল সরকার গঠিত হবে এবং তিনি তার দায়িত্ব শেষ করে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, আমার কাজ শেষ হয়ে গেলে, আমি নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করব। এটি হবে বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন অধ্যায়।
বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স