ঢাকা , শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

​চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্যদের পুনর্বহালের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ১১-০২-২০২৫ ০৪:৪৬:৪৮ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১১-০২-২০২৫ ০৪:৪৬:৪৮ অপরাহ্ন
​চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্যদের পুনর্বহালের দাবি ​ছবি: সংগৃহীত
বিগত সরকারের আমলে চাকরিচ্যুত ২২০০ পুলিশ সদস্যকে পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছে ভিকটিম পুলিশ পরিবার। এ ছাড়াও ১৫২২ পুলিশ সদস্যকে চাকরিতে পুনর্বহালের সংবাদকে মিথ্যা আখ্যা দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে ‘ভিকটিম পুলিশ পরিবার’ ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে চাকরিচ্যুত এই পুলিশ সদস্যরা বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে দীর্ঘ ১৬ বছরের স্বৈরশাসনের পতন ঘটেছে। এই দীর্ঘ সময়ে স্বৈরশাসক দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। তারমধ্যে অন্যতম হচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ। বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে অন্যায়ভাবে প্রায় ২২০০ পুলিশ সদস্যকে চাকরিচ্যুত করার মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীর নিম্নপদস্থ কর্মচারীদের মনে চাকরি হারানোর আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। এরই ফলস্বরূপ জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে পুলিশ বাহিনীর কিছু সিনিয়র দানবদের অবৈধ আদেশ পালন করে চাকরি বাঁচাতে অনিচ্ছা সত্ত্বেও গণহত্যার মতো অপরাধ করতে বাধ্য হয়।

তারা বলেন, স্বৈরাচারী সরকারের আমলে পুলিশ বাহিনীর বেশিরভাগ সিনিয়র কর্মকর্তা পুলিশ বাহিনীকে ভয়ংকর দানবে পরিণত করতে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন মামলা দিয়ে চাকরিচ্যুত করে। বিভাগীয় মামলা তদন্তের ক্ষেত্রে ন্যায় সংগত কোনোপ্রকার প্রসিডিউর অনুসরণ করেনি। তদন্তকারী কর্মকর্তা, তদন্ত, মিথ্যা সাক্ষ্য গ্রহণসহ সব কিছুতেই তাদের পক্ষের একতরফা নীতি অনুসরণ করেছে। তারা এমনভাবে মামলা সৃজন করেছে যেন, আদালত থেকেও কোনোভাবে বিবাদী নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে না পারে। বিজ্ঞ আদালত হতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় রায় পাওয়ার পরেও আমাদের চাকরিতে পুনর্বহাল করেনি।

চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্যরা আরও বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতাল ও অন্যান্য অনুমোদনহীন হাসপাতাল থেকে ডোপ টেস্টের মাধ্যমে নিরীহ পুলিশ সদস্যদের চাকরিচ্যুত করেছে। বেশিরভাগ চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্য ঐদিনই ঢাকা মেডিকেল ও পিজি হাসপাতাল থেকে ডোপ টেস্টের নেগেটিভ রিপোর্ট জমা দিলেও তা গ্রহণ করেনি। ডোপ টেস্টে যারা মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ দিয়েছে বা যারা স্বৈরাচারী সরকারের লোক ছিলেন তাদের চাকরিতে বহাল রেখেছেন। আর যারা টাকা দিতে পারেনি তাদের চাকরিচ্যুত করেছে। যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে কমেন্ট করেছেন তাদেরও অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়।

তারা বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন মানবিক বিবেচনায় সব পুলিশ সদস্যকে পুনর্বহালের আদেশ প্রদান করার পরেও স্বৈরাচারী সরকারের নিয়োজিত দোসররা তা বাস্তবায়নে বাধা দিয়েছেন। অনেক পুলিশ সদস্যকে চাকরিচ্যুত করার পর যদি আদালতে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে চাইতো তাহলে গুম খুনের হুমকি দেওয়া হতো। এসবের ভয়ে অনেক পুলিশ সদস্য আদালতে মামলা দায়ের করতে পারেনি। অনেক পুলিশ সদস্যকে জোরপূর্বক অথবা স্বাক্ষর জাল করে চাকরি হতে সেচ্ছায় অবসর বা বাধ্যতামূলক অবসর নিতে বাধ্য করা হয়। 

তারা আরও বলেন, আজকে যখন গণ-অভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরশাসক পালিয়ে গেছে তখন পুলিশ বাহিনীর কিছু পুরাতন দোসর আমাদের চাকরিতে পুনর্বহাল করার কথা দিয়েও তালবাহানা করছে। আমরা বর্তমান সরকারের বিনীত আবেদন জানাচ্ছি, আমাদের সব সুযোগ-সুবিধাসহ চাকরিতে পুনর্বহাল করুন। বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী থেকে স্বৈরাচারের দোসরদের অপসারণ করা হোক।

সংবাদ সম্মেলনে ভিকটিম পুলিশ পরিবারের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন- ভিকটিম পরিবারের সমন্বয়ক এস আই মামুন, সমন্বয়ক এস আই জাকারিয়া, মুখপাত্র এ এস আই তৌহিদ মণ্ডল, ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক এ এস আই সাইফুল, সমন্বয়ক কনস্টেবল সাদ্দাম হোসেন, সমন্বয়ক কনস্টেবল আরাফাতসহ আরও অনেক চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্য।

বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এনআইএন/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ