রাজধানীর কিছু রুটে শৃঙ্খলা ফেরানো ও শতভাগ যাত্রীসেবা নিশ্চিতে টিকিট কাউন্টারভিত্তিক বাস সার্ভিস চালু করায় সড়কে বাস কম ছাড়ছেন মালিকরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও বাসে উঠতে পারছেন না অনেকে। সব থেকে বেশি ভোগান্তি হচ্ছে নারী যাত্রীদের। বাসে উঠতে না পেরে অনেকেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যে রওনা হচ্ছেন। যাদের সামর্থ্য আছে তারা রিকশা, সিএনজি, রাইড শেয়ারে গন্তব্যে ছুটছেন।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, বাড্ডা লিংক রোড থেকে শুরু করে রামপুরা বাজার পর্যন্ত প্রতিটি মোড়ে মোড়েই মানুষের জটলা। এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত চলাচলকারী রাইদা, তুরাগ, ভিক্টর, আকাশ পরিবহন খুব কম চলছে। মাঝেমধ্যে একটা বাস আসলে ঝাঁপিয়ে পড়ে উঠতে চেষ্টা করছেন যাত্রীরা।
বাড্ডা লিংক রোডে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা জাহিদ নামে একজন যাত্রী বলেন, ‘শুনতেছি কাউন্টারভিত্তিক টিকিট চালু করায় মালিকরা বাস চালাচ্ছে না। এক ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি কোনো রাইদা গাড়ি নেই। তাদের কাছে আমরা জিম্মি।’ আরেক যাত্রী বলেন, ‘গুলিস্তান যামু, অনেকক্ষণ ধইরা দাঁড়াই আছি, যাও দু-একটা ভিক্টর ও আকাশ বাস আসতেছে উঠাই যাচ্ছে না।’পুরুষদের দুএকজন বাঁদর ঝোলা হয়ে যেতে পারলেও চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নারীরা। বাড্ডা বাজার রোডের যাত্রী নাসিমা বলেন, ‘অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছি, যাত্রাবাড়ী যাওয়ার বাস পাচ্ছি না। একটা রাইদা গাড়িও নেই। সিএনজি অনেক ভাড়া চাচ্ছে। কিভাবে যাব বুঝতেছি না।’বাস চালকরা বলছেন, কাউন্টার ও টিকিট সিস্টেম চালু করার কারণে গাড়ি কম চলছে। ভিক্টর পরিবহনের এক কন্টাকটার বলেন, ‘আমাগোর কিছু করার নাই। সরকার মালিক যেভাবে বলছে আমরাও সেভাবে চালাচ্ছি। কাউন্টার ও টিকিট ছাড়া যাত্রী তুলতাছি না। যে অবস্থা এই সিস্টেম বেশিদিন চালু রাখতে পারবো না।’
প্রসঙ্গত, রাজধানী ঢাকার সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো ও শতভাগ যাত্রীসেবা নিশ্চিতে টিকিট কাউন্টারভিত্তিক বাস সার্ভিস চালু করা হয় বৃহস্পতিবার। ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঢাকার আবদুল্লাহপুর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করা ২১টি কোম্পানির বাস একক কোম্পানির অধীন পরিচালনা করার উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। এর আওতায় প্রায় ২ হাজার ৬১০টি বাস চলাচল করবে। বাসগুলোর রং হবে গোলাপি।সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এসব বাস চলবে কাউন্টার–পদ্ধতিতে। যাত্রীদের নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহ করে বাসে যাতায়াত করতে হবে। নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া বাস দাঁড় করানো হবে না। যাত্রী ওঠানামাও করবে নির্দিষ্ট স্থানে। বাসে ওঠানামার জন্য ঢাকার বিভিন্ন অংশে থাকবে প্রায় ১০০টি স্টপেজ। তবে এখনো সব স্টপেজে কাউন্টার বসানোর কাজ এখনো শেষ হয়নি।
বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এনআইএন