ফেনীতে রঙিন ফুলকপি-ব্রকলির বাণিজ্যিক আবাদ
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
১০-০২-২০২৫ ০২:১৮:২৮ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১০-০২-২০২৫ ০২:২৮:০৩ অপরাহ্ন
ফোকাস বাংলা নিউজ
বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে রঙিন বেগুনী বা রাণী গোলাপি ও হলুদ রঙের ফুলকপি ও ব্রকলির আবাদ। ফেনীর দাগনভূঞায় এই ফুলকপি দেখতে যেমন সুন্দর, খেতে সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে বেশ চাহিদা রয়েছে। উপজেলার কৃষকরা সাধারণত সাদা ফুলকপির আবাদ করে থাকেন। পৌর এলাকার জগতপুর গ্রামের অর্গানিক ভেজিটেবল গার্ডেন এর স্বত্বাধিকারী তরুণ উদ্যোক্তা মো. হাসান আহমেদ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ১২০ শতক জমিতে এবারও বাণিজ্যিকভাবে রঙিন ফুলকপি, ব্রকলি ও বিভিন্ন ধরনের চাইনিজ সবজি চাষ করছেন। উপজেলায় রঙিন ফুলকপি চাষ করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এই তরুণ উদ্যোক্তা।
কৃষি সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রঙিন ফুলকপি ভিটামিন-সি, ই, কে, ফলিক অ্যাসিড, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজসহ বিভিন্ন ধরনের ক্যারোটেনেয়ড সমৃদ্ধ সবজি। এই সবজি ক্যানসার প্রতিরোধে কাজ পাচ্ছি। অর্গানিক ভেজিটেবল নামে ফেসবুক পেইজ আছে। সেখানে রঙিন ফুলকপির ছবি আপলোড করা হয়। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে এই কপি চাষে কোনো প্রকার বালাইনাশক ব্যবহার করা হয়নি, শুধু জৈব স্যার ব্যবহার করছেন বলে জানান তিনি। একই পরিমাণ খরচে অধিক লাভ হওয়ায় এই কপি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন স্থানীয় অন্যান্য কৃষকরাও।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাগান পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন হাসান। রঙিন ফুলকপি, ব্রকলি, বিটরুট, চাইনিজ ক্যাবেজ, চেরি টমেটো, শালগম, ধান, সরিষাসহ ফুলকপি ও বাঁধাকপির ব্যাপক আবাদ করছেন। আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে মানুষ হাসানের অর্গানিক ভেজিটেবল গার্ডেনে রঙিন ফুলকপি দেখতে এসেছেন। কেউ কেউ রঙিন ফুলকপি হাতে নিয়ে ছবি তুলছেন। অনেকে বাগান থেকেই কপি কিনে নিচ্ছেন।রঙিন ফুলকপি দেখতে আসা ফারহান আলী বলেন, আমারও ইচ্ছা আছে রঙিন ফুলকপি চাষ করার। এই জন্য সরাসরি দেখতে আসছি। ফুলকপিগুলো দেখতে খুব ভালো লাগছে। এর চাহিদাও দ্বিগুণ। খেতেও অনেক সুস্বাদু।
স্থানীয় কৃষক রফিক উল্যাহ জানান, এ প্রথম হাসান আহমেদের জমিতে রঙিন ফুলকপি চাষ দেখেছি। দেখতে খুব সুন্দর। বাজারে দামও বেশ ভালো। আগামীতে আমি এই রঙিন ফুলকপি চাষ করবো।উদ্যোক্তা হাসান বলেন, দুই বছর আগে রঙিন ফুলকপির পরীক্ষামূলকভাবে চাষ শুরু করি। এই বছর ব্যাপকভাবে করার চেষ্টা করেছি এবং সফলও হয়েছি। ফলনও হয়েছে ভালো। মূল্যও ভালো পাচ্ছি। তবে রঙিন হওয়ায় বাজারে এই ফুলকপির দাম দ্বিগুণ। এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার কেজি রঙিন ফুলকপি বিক্রি করেছি। প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার কপি বিক্রি করা হয়েছে। প্রথম প্রথম একটু বেশি দামে বিক্রি করলেও এখন কিছুটা কম ধরে বিক্রি করছি। অনলাইনে অর্ডার করে থাকে।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, উদ্যোক্তা হাসানকে সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আমরা চাই সব কৃষকের মাঝে তথ্যপ্রযুক্তির নতুনত্ব পৌঁছে দিতে। সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। আশা করছি তার দেখাদেখি অন্যান্য কৃষকরাও এই রঙিন ফুলকপি চাষ করতে আগ্রহী হবে।
দাগনভূঞা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. কামরুজ্জামান বলেন, তরুণ উদ্যোক্তা মো. হাসান আহমেদ আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে থাকেন। বাণিজ্যিকভাবে তিনি রঙিন ফুলকপি, ব্রকলি বিভিন্ন ধরণের চাইনিজ ভেজিটেবল চাষ করে শুধু দাগনভূঞায় নয় ফেনী জেলাতে সাড়া ফেলেছেন। আগামীতে তিনিসহ অন্যান্য উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত চাইনিজ ভেজিটেবল দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করার সুযোগ রয়েছে। এ ফসলগুলি দেখতে রঙিন হওয়ায় ভোক্তাগণ বেশি ক্রয় করে থাকেন।
বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স