গাইবান্ধায় বাণিজ্যিকভাবে বিটরুট চাষ, কৃষকের মুখে হাসি
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
০৯-০২-২০২৫ ০৪:৫৩:২৭ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
০৯-০২-২০২৫ ০৪:৫৩:২৭ অপরাহ্ন
ছবি: সংগৃহীত
কৃষি নির্ভরশীল জেলা গাইবান্ধায় কৃষিতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছেন স্থানীয় কৃষকরা। ধান, পাটসহ প্রচলিত ফসলের চাষের পরিবর্তে এবার প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়েছে ভিনদেশি সবজি বিটরুট। নতুন এ উদ্যোগে সাফল্যের মুখ দেখছেন কৃষক, যা জেলার কৃষিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।
গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলার সদর ও ফুলছড়ি উপজেলায় মোট ৩০ শতক জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে বিটরুটের চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে গাইবান্ধা সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সুপারির ভিটা গ্রামে ২০ শতক এবং ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের ভাষারপাড়া গ্রামে ১০ শতক জমিতে বিটরুট চাষ হয়েছে।
সরেজমিনে গাইবান্ধা সদর উপজেলার সুপারির ভিটা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কৃষক দম্পতি ফারুকুজ্জামান ফারুক ও মাহফুজা বেগম তাদের ২০ শতক জমিতে বিটরুট চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছেন। তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ধান ও পাট চাষ করলেও আশানুরূপ লাভ হচ্ছিল না। পরে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এসকেএস ফাউন্ডেশনের এসএমএপি প্রকল্পের সহায়তায় গত বছরের নভেম্বরে বিটরুট চাষ শুরু করেন তারা।
ফারুকুজ্জামান ফারুক বলেন, এসকেএসের ২০ হাজার টাকা সহায়তা নিয়ে আমরা বিটরুট চাষ শুরু করি। এখন জমিতে প্রায় ১ হাজার কেজি বিটরুট রয়েছে। বর্তমানে প্রতিকেজি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে লক্ষাধিক টাকা লাভের আশা করছি।
তার স্ত্রী মাহফুজা বেগম বলেন, শুরুতে অচেনা এ সবজি চাষে স্বামী রাজি হচ্ছিলেন না। তবে মোবাইল ও বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য জেনে এক পর্যায়ে তিনি রাজি হন। এখন আমাদের সাফল্য দেখে আশেপাশের অনেকেই বিটরুট চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
বিটরুটকে সুপারফুড হিসেবে গণ্য করা হয়, যা নানা পুষ্টিগুণ ও ঔষধি গুণসম্পন্ন। শীতকালেই বেশি উৎপাদন হলেও বর্তমানে এটি সারাবছরই বাজারে পাওয়া যায় এবং ভালো দামে বিক্রি হয়। কৃষকদের সফলতা দেখে স্থানীয় অনেকেই এখন বিটরুট চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
এসকেএস ফাউন্ডেশনের এসএমএপি প্রকল্পের ব্যবস্থাপক হারুন অর রশিদ বলেন, আমরা শুরু থেকেই কৃষকদের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিয়ে আসছি। সেই সঙ্গে বাজারজাতকরণেও সহযোগিতা করছি। কৃষকরা যাতে এ ফসলে আরও লাভবান হন, সে বিষয়ে কাজ করছি।
গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. খোরশেদ আলম বলেন, গাইবান্ধার মাটি বিটরুট চাষের জন্য উপযুক্ত। কৃষকরা ভালো ফল পাচ্ছেন, যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। বিটরুট লাভজনক ফসল হওয়ায় এর সম্প্রসারণের জন্য আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করব।
কৃষকদের মতে, প্রচলিত ফসলের তুলনায় বিটরুট চাষে কম খরচ ও সময় লাগে, অথচ লাভ বেশি হয়। ফলে জেলার কৃষিতে এটি একটি সম্ভাবনাময় নতুন দিক হতে পারে। কৃষি বিভাগের সহায়তা ও সঠিক বাজার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা গেলে ভবিষ্যতে গাইবান্ধার কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে ব্যাপক হারে বিটরুট চাষে যুক্ত হতে পারেন।
বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স