ঢাকা , শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

​দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট

নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কুয়াশায় চলছে ট্রলার

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ০৯-০২-২০২৫ ০৪:১৯:৩০ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০৯-০২-২০২৫ ০৪:১৯:৩০ অপরাহ্ন
নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কুয়াশায় চলছে ট্রলার ​ছবি: সংগৃহীত

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে কুয়াশায় সব ধরনের নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে নৌ কর্তৃপক্ষের। অথচ এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী পারাপার করছে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারগুলো। শীত মৌসুম শুরুর পর থেকেই প্রায় প্রতিদিনই দেশের গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকছে। গত শনিবার টানা প্রায় ১১ ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। 

জানা যায়, কোনো প্রকার অনুমতি না থাকলেও অবৈধভাবে স্থানীয় ইঞ্জিনচালিত ট্রলারচালকরা সারাদিনই যাত্রীদের পদ্মা নদী পারাপার করে থাকে। দিনের অন্যান্য সময় যাত্রী কম থাকলেও ঘন কুয়াশা তাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসে। এ সময় ফেরি ও লঞ্চ বন্ধ থাকায় তাদের যাত্রী বেড়ে যায়। তারা যাত্রীদের সঙ্গে মোটরসাইকেলও পারাপার করে থাকে। জরুরি প্রয়োজনে যাত্রীরাও অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারেই নদী পাড়ি দেয়।

দৌলতদিয়া ঘাটে আটকে থাকা বাসযাত্রী নাজিবুর রহমান বলেন, এই ঘন কুয়াশায় অবৈধভাবে অনেককেই দেখছেন ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে নদী পারাপার হচ্ছে। যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি আমলে নিয়ে প্রশাসনকে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এভাবে পারাপার হলে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

একই দিন রাজবাড়ী থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেওয়া কামরুল ইসলাম ও রাশেদুল ইসলাম নামের দুই মোটরসাইকেল আরোহীর সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, জরুরি কাজে নবীনগর যেতে হবে তাদের। সকাল ৭টায় দৌলতদিয়া ঘাটে এসে দেখতে পান ফেরি বন্ধ। কখন ফেরি ছাড়বে, তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করে তারা ঝুঁকি নিয়েই ট্রলারে পদ্মা পাড়ি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এ ক্ষেত্রে তাদের মোটরসাইকেল ভাড়া ৫০০ ও দুজনের ভাড়া ২০০ টাকা দিতে হয়েছে। 

একই দিন সকালে নদী পাড়ি দিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে অপেক্ষায় ছিলেন সবুজ শেখ। তিনি জানান, ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে তিনি চাকরি করেন। ফেরি বন্ধ থাকায় চাকরি বাঁচাতে ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে নদী পাড়ি দিচ্ছেন। ভাড়া নিচ্ছে ১৫০ টাকা। 

দৌলতদিয়া ঘাট সংশ্লিষ্টরা জানান, ঘন কুয়াশায় ফেরি ও লঞ্চ বন্ধ রাখার সুযোগে ঘাটের সুবিধাভোগী একটি চক্র বাড়তি টাকা নিয়ে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে যাত্রী ও মোটরসাইকেল পারাপার করছে। চার কিলোমিটার নদীপথ পাড়ি দিতে যাত্রীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ১০০-২০০ টাকা এবং মোটরসাইকেল পারাপারে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো প্রকার পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

নৌ পুলিশ সূত্র জানায়, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ঘন কুয়াশার মধ্যে যাত্রী পারাপার করায় গত ১ ফেব্রুয়ারি দুটি ইঞ্জিনচালিত ট্রলার জব্দ ও তিন মাঝিকে আটক করেছে দৌলতদিয়া নৌ পুলিশ। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রত্যেককে ৫০০ টাকা করে জরিমানা করে সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, কুয়াশায় ফেরি বন্ধ থাকলেও মাঝেমধ্যে ট্রলার ভিড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করতে দেখা যায়। বিষয়টি স্থানীয় নৌ পুলিশকে একাধিকবার জানানো হয়েছে। এ ছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে।

দৌলতদিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক এনামুল হক বলেন, কুয়াশায় ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে যাত্রী পারাপারে নিষেধাজ্ঞা আছে। এর পরও যাত্রী পারাপারের কথা শুনে গত সপ্তাহে একাধিক অভিযান চালানো হয়েছে। পুলিশ পৌঁছানোর আগেই তারা সটকে পড়ে। জড়িত ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ