হিমাগারে এক কেজি আলু রাখলে গুনতে হবে ৮ টাকা
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
০৮-০২-২০২৫ ০৭:৩৫:৩৮ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
০৮-০২-২০২৫ ০৭:৩৫:৩৮ অপরাহ্ন
ছবি: সংগৃহীত
হিমাগারে আলু রাখার ভাড়া প্রতি কেজিতে এক টাকা বাড়িয়ে আট টাকা করেছে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন। আগে এক বস্তায় ৮০ কেজি আলু রাখা গেলেও চলতি বছর থেকে ৫০ কেজির বেশি রাখা যাবে না। বস্তার পরিবর্তে খরচও গুনতে হবে কেজি হিসাবে। এ ভাড়া বাড়ানোকে অযৌক্তিক দাবি করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন চাষিরা।
সংগঠনটির সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ২০২৫ সালে খরচ বিবেচনায় নিয়ে কেজি প্রতি ভাড়া ৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই ৮ টাকা কেজি প্রতি ভাড়া নির্ধারণের যৌক্তিকতা যাচাই করার জন্য আমি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয় ও ট্যারিফ কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার পুরানা পল্টনে অ্যাসোসিয়েশন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মোস্তফা আজাদ বলেন, ব্যাংক ঋণের সুদহার বেড়ে গেছে। বিদ্যুতের খরচ হিসাব করলে ৭ টাকা তো চলে যায়। ভাড়া বাড়ানোর লিখিত ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ১০ হাজার মেট্রিক টনের একটি হিমাগারের অনুকূলে গৃহীত ব্যাংক ঋণের উপর যে সুদ আসে, তা কেজিপ্রতি আলু সংরক্ষণে রূপান্তর করলে খরচ দাঁড়ায় ৫ দশমিক ৮৬ টাকা এবং এর সঙ্গে বিদ্যুৎ খরচ ১ দশমিক ১০ টাকা যোগ করলে দাঁড়ায় ৬ দশমিক ৯৬ টাকা।
অনেক কৃষক ও ব্যবসায়ী সময় মত আলু বের না করায় ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৭ সালে হিমাগার মালিকরা ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েন বলে দাবি করেন তিনি। সেই লোকসান এখনো অনেকে টানছেন দাবি করে তিনি বলেন, ঋণের কিস্তি নিয়ম মাফিক পরিশোধ করতে না পারায় বিভিন্ন আর্থিক চাপ ও সমস্যা নিয়ে হিমাগার পরিচালনা করছেন, যা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি।
এবার ভাড়া বাড়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষকরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মোস্তফা আজাদ বলেন, অনেকে কোল্ড স্টোরের সামনে বাধা দিচ্ছে, ঢুকতে দিচ্ছে না। এভাবে করলে তো কোল্ড স্টোর বন্ধ করে দিত হবে।
২০২৪ সালে হিমাগারে প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৪ টাকা ছিল বলে কৃষকরা যে দাবি করছেন, সেই বিষয়ে মোস্তফা আজাদ বলেন, ভাড়া ঠিক করা হয়েছিল ৭টাকা। কিছু মধ্যস্বত্বভোগী ও সুবিধাভোগী মানুষ সত্য গোপন করে বলছেন, ২০২৪ সালে কেজি প্রতি ভাড়া ছিল ৪ টাকা।
হিমাগারে আলু সংরক্ষণ হয় মার্চ মাসে, আর বাজারে তোলা শুরু হয় জুলাই মাস থেকে। হিমাগার একটি মৌসুমভিত্তিক শিল্প উল্লেখ করে আজাদ বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি ৩ মাস পর পর ব্যাংক ঋণের কিস্তি প্রদানের নির্দেশনা দিয়েছে। ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে ঋণের কিস্তি দিতে না পারলে অনেক উদ্যোক্তা খেলাপি হতে পারেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ হিমাগারের ভাড়া সহনীয় পর্যায়ে আনতে একে কৃষিভিত্তিক শিল্প ঘোষণা করাসহ পাঁচ দাবি তুলে ধরেন। ব্যাংক ঋণের সুদের হার ১৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭ শতাংশ করতে হবে, বিদ্যুৎ বিলের ইউনিট প্রতি রেট পিক আওয়ারে ১৩.৬২ টাকা ও অফপিক আওয়ারে ৯.৬২ টাকার বদলে ৫ টাকা করতে হবে, ভ্যাট প্রত্যাহার করতে হবে, উৎসে কর কর্তন (টিডিএস) প্রত্যাহার করতে হবে, ত্রৈমাসিক ঋণের কিস্তির পরিবর্তে ঋণের কিস্তি বাৎসরিক করতে হবে।
বাংলা স্কুপ/প্রতিবেদক/এএইচ/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স