ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ

শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার রায় ছিল পক্ষপাতদুষ্ট

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ০৫-০২-২০২৫ ০৭:৪৪:১৬ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০৫-০২-২০২৫ ০৭:৪৪:১৬ অপরাহ্ন
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার রায় ছিল পক্ষপাতদুষ্ট ​ছবি: সংগৃহীত
প্রায় তিন দশক আগে পাবনার ঈশ্বরদী রেলস্টেশনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় বিচারিক আদালতের রায় অমানবিক ও পক্ষপাত দুষ্টু ছিল বলে রায়ে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই মামলায় সব আসামিকে খালাস দিয়ে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মুহম্মদ মাহবুব-উল ইসলাম ও বিচারপতি মো. হামিদুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ পর্যবেক্ষণ দেন। 

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, বিচারিক আদালত যে রায় দিয়েছেন, ‘তা পক্ষপাতদুষ্ট এবং বিশেষ কোনও ভাবাদর্শে অনুপ্রাণিত। বিচারিক আদালতের রায়ে বিচারকের বিচারিক মননের কোনও প্রতিফলন ঘটেনি। বিজ্ঞ বিচারক গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে এই রায় দিয়েছেন। এ যেন বেড়ায় খেত খাওয়ার মতো। মূলত এটি একটি বিদ্বেষপ্রসূত মামলা, যেখানে তিলকে তাল করা হয়েছে।’  

এ মামলার সাক্ষ্য নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে উচ্চ আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘তর্কিত ঘটনাটি ঘটে ঈশ্বরদী রেল স্টেশনে। স্টেশনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষজন থাকেন। প্রকৃতপক্ষে সেদিন কী ঘটেছিল, নিশ্চয়ই তারা তা দেখেছেন। কিন্তু এ মামলায় প্রত্যক্ষদর্শী নিরপেক্ষ কোনও ব্যক্তিকে সাক্ষী করা হয়নি। সাক্ষী করা হয়েছে একটি রাজনৈতিক দলের অনুগত ও পদধারীদের। কোনও চাক্ষুষ সাক্ষী না থাকলেও এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে ৩৭ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। আসামিপক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছেন ২৫ জন। রাষ্ট্রপক্ষের সব সাক্ষীর সাক্ষ্যই মূলত পক্ষপাতদুষ্ট বলে প্রতীয়মান হয়েছে।’ 

আদালত বলেন, ‘সরকারের অনুগত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কী বলা যায়, তা বলার ভাষা জানা নেই। আধুনিক রাষ্ট্র কল্যাণের না ধ্বংসের তা আমাদের বোধগম্য নয়।’ এই মামলায় বিচারিক আদালতের রায় ছিল অমানবিক বলেও মন্তব্য করেন হাইকোর্ট। রায় ঘোষণার আগে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মুহম্মদ মাহবুব-উল ইসলাম বলেন, মামলার বিষয়বস্তু বিস্তৃত। সংক্ষিপ্ত আদেশ ঘোষণা করা হবে। ফেব্রুয়ারি মাস মহান ভাষা আন্দোলনের মাস। ঐতিহাসিক এ ঘটনা ১৯৫২ সালের। ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রায়টা বাংলায় দেওয়া হচ্ছে। এরপর রায় ঘোষণা করেন আদালত। 

আদালত বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সব আসামিকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হলো। আমরা চাই না, তারা আর এক সেকেন্ডও কারাগারে থাকুক। এখনই সবাইকে মুক্তি প্রদানের নির্দেশ প্রদান করছি। আদালতে আসামিদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান খান, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম মুকুল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মজিবুর রহমান। 


বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এনআইএন/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ