ঢাকা , বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

​স্থানীয় সরকার সংস্কারে নাগরিক কমিটির ১৫ প্রস্তাবনা

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ০৪-০২-২০২৫ ০৭:১১:৩৪ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০৪-০২-২০২৫ ০৭:১১:৩৪ অপরাহ্ন
​স্থানীয় সরকার সংস্কারে নাগরিক কমিটির ১৫ প্রস্তাবনা ​ছবি: সংগৃহীত
স্থানীয় সরকার সংস্কারে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের কাছে ১৫ দফা সুপারিশ করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় নাগরিক কমিটির চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে লিখিত সুপারিশ হস্তান্তর করে।

জেলা সরকার, রিকল ব্যবস্থা সংযোজন, মনোনয়ন বাণিজ্য ঠেকানোর লক্ষ্যে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন ব্যবস্থা বাতিলসহ বেশকিছু সুপারিশ করা হয়। এ সময় কমিশনের পক্ষে কমিশন প্রধান ড. তোফায়েল আহমেদ লিখিত প্রস্তাব গ্রহণ করেন।

জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি দলে ছিলেন– দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, নির্বাহী সদস্য এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক আলাউদ্দিন মোহাম্মদ, কেন্দ্রীয় সংগঠক এবং ক্রাইসিস রেস্পন্স সেল সম্পাদক আলী নাসের খান এবং সহ-মুখপাত্র তাহসিন রিয়াজ।

সুপারিশগুলো হলো–

১. বর্তমান সংবিধানে স্থানীয় সরকারকে ‘স্থানীয় শাসন’ হিসেবে অভিহিত করা।
২. স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোতে এককেন্দ্রিক শাসন-ব্যবস্থার অবসান ও কার্যকর জনসেবা নিশ্চিত করতে স্থানীয় সরকারের স্তর হবে তিনটি। যেমন-ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ এবং জেলা পরিষদ। স্থানীয় সরকারের কেন্দ্রস্থল হবে জেলা পরিষদ। যেটি জেলা সরকারের আদলে পরিচালিত হবে। সব পরিষদ সরাসরি নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত হবে। প্রত্যেক পরিষদের সভাপতি ও সহসভাপতি পরিষদের সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত হবেন। পরিষদের জবাবদিহি নিশ্চিতে স্থানীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে একটি মনিটরিং কাউন্সিল করতে হবে, যেখানে মাসিক ভিত্তিতে স্থানীয় জনপ্রনিধিরা মনিটরিং কাউন্সিলের সঙ্গে সমন্বয় করে কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
৩. স্থানীয় সরকারকে স্বশাসিত ও গণপ্রতিনিধিত্বশীল করে গড়ে তুলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু করা।
৪. সংবিধানের ৫৯ ও ৬০ অনুচ্ছেদের সংস্কার করা।
৫. জনমানুষের কাছে জবাবদিহি নিশ্চিতের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রত্যাহার বা রিকলের ক্ষমতা জনমানুষের কাছে দেওয়ার সাংবিধানিক ব্যবস্থা প্রণয়ন করা। তবে সে ক্ষেত্রে গুরুতর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ন্যূনতম ৬৫ শতাংশ ভোটারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই কেবল প্রত্যাহার করা যেতে পারে।
৬. স্থানীয় সরকারের সেবা জনগণের দোরগোরায় পৌঁছে দেওয়া।
৭. স্থানীয় সরকারকে পরিকল্পনা ও বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা দিতে হবে এবং স্থানীয় পর্যায়ে আবাসন চাহিদার সঙ্গে কৃষি ও স্থানীয় শিল্পের বিকাশের সম্ভাবনাকে মাথায় রেখে তাদের টেকসই পরিবেশ ও ব্যবস্থাপনার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
৮. স্থানীয় সরকারের সব সেবা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের নীতির সঙ্গে সমন্বয় করে ডিজিটাইজ কর।
৯. প্রতিটি অঞ্চলে কর্মসংস্থানের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার যাতে কাজ করতে পারে এবং বিদেশি নিয়োগদাতাকে কর্মীর দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে পারে তার ব্যবস্থা করা।
১০. স্থানীয় সরকারের কোনও প্রতিনিধি সরকারি কর্মকর্তা বা অন্য কোনও নির্বাচিত প্রতিনিধির কর্তৃত্বাধীন হবে না।
১১. স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে সরকারের হস্তক্ষেপ রোধে নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত তারিখে সব স্তরে একই সঙ্গে নির্বাচন দেওয়া। নির্বাচনে কোনোভাবেই দলীয় পরিচয় ও দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করা।
১২. স্থানীয় সরকারের ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবেন না। ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে পরিষদ সদস্যরা নির্দিষ্ট মেয়াদে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন।
১৩. স্থানীয় সরকার পরিষদের সভায় নাগরিক প্রতিনিধি উপস্থিত থাকার ও মত প্রকাশের আইনগত বিধান রাখা।
১৪. স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে ওই এলাকার দরিদ্র ও ভুক্তভোগী মানুষের আর্থিক চাহিদা কমানোর কার্যকর ব্যবস্থা করা এবং প্রতিনিধিদের সম্মানজনক ভাতার ব্যবস্থা করা।
১৫. সংসদীয় স্থায়ী কমিটির মতো স্থানীয় সরকারেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্থায়ী কমিটি গঠন করা।

বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এনআইএন/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ