ঢাকা , শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

​শিম ও বিচি রপ্তানি হচ্ছে পৃথিবীর নানা দেশে

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ২৯-০১-২০২৫ ০১:৩২:১৪ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২৯-০১-২০২৫ ০১:৩২:১৪ অপরাহ্ন
​শিম ও বিচি রপ্তানি হচ্ছে পৃথিবীর নানা দেশে ​ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে শিমের ফলন অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। অন্য বছর এখানে গড়ে ১৫০ কোটি টাকার শিম উৎপাদন হলেও এবার ২১০ কোটি টাকার শিম উৎপাদন হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। অন্যদিকে শিমের বাম্পার ফলনের সঙ্গে ন্যায্যমূল্য পেয়ে খুশি কৃষক। এখানে উৎপাদিত শিম দেশের চাহিদা পূরণ করে ইউরোপ-আমেরিকাসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে বলে জানিয়েছে কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সীতাকুণ্ডকে বলা হয় সবজি ভান্ডার। এখানে সারাবছর নানা রকম সবজি উৎপাদন হয়। তবে সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হয় শিম। কার্তিকোটা, কার্ত্তিকবাটা, বাটা, পুটি, ছুরি, লইট্টা ও রূপবান প্রজাতির শিম চাষ হয়। রূপবান হলো গ্রীষ্মকালীন শিম। যা বিগত কয়েক বছর ধরে চাষ হচ্ছে। অন্য শিম শীত মৌসুমেই হয়ে থাকে।

উপজেলার অন্যতম শিম চাষ এলাকা সৈয়দপুর, বারৈয়াঢালা, পৌরসদর, মুরাদপুর, বাড়বকুণ্ড, বাঁশবাড়িয়া পরিদর্শনকালে কথা হয় চাষিদের সঙ্গে। বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের টেরিয়াইল গ্রামের কৃষক মো. জামাল উল্লাহ, মুকসেদ আহমদ, আনোয়ার হোসেন ও মানিকরা শিম চাষ করেন।

কৃষক জামাল উল্লাহ কার্ত্তিকোটা শিম চাষ করেছেন ১০০ শতাংশ জমিতে। এতে বীজ, সার, কীটনাশক, কঞ্চি, শ্রমিক মজুরি বাবদ খরচ হয় আনুমানিক ৮০ হাজার টাকা। গত ১ মাসে তিনি প্রায় ২ লাখ টাকার শিম বিক্রি করেছেন। আরও লক্ষাধিক টাকার শিম বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘এবার তেমন কোনো রোগবালাই হয়নি। সমস্যা দেখা গেলে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি অফিসার পিপাস কান্তি চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি বলে দেন, কী ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। তার কথামতো এসব ব্যবহার করে উপকৃত এবং লাভবান হয়েছি।’

৪২ শতক জমিতে কার্ত্তিকবাটা শিম চাষ করেছেন আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমার খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকার মতো। দেরিতে চাষ করেছি। তাই বিক্রি শুরু হয়েছে অল্প দিন আগে। এখন পর্যন্ত ২০ হাজার টাকার শিম বিক্রি করেছি। আরও ৬০-৭০ হাজার টাকার বিক্রি হবে।’

পৌরসভার নুনাছড়া এলাকার কৃষক মো. নুর নবী বলেন, ‘প্রায় ১৫০ শতক জমিতে শিম চাষ করেছি। খরচ হয়েছিল ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। শুরুতে চাষ করায় নভেম্বর থেকে শিম বিক্রি শুরু করি। প্রথমদিকে প্রতি কেজি শিম ১২০ টাকা বিক্রি করেছি। এখনো কেজি ৪০ টাকা বিক্রি করছি। এ পর্যন্ত শিম বিক্রি করেছি প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা। আরও লক্ষাধিক টাকা বিক্রি হবে।’

কৃষকেরা জানান, সীতাকুণ্ডের শিম স্বাদে অতুলনীয়। এখান থেকে পাইকাররা কিনে শিম ও বিচি পৃথক ভাবে ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি করেন। এতে তারা যেমন ভালো দাম পাচ্ছেন; তেমনই দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয় হচ্ছে।

টেরিয়াইল এলাকার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার পিপাস কান্তি চৌধুরী বলেন, ‘এ মৌসুমে যেদিকে তাকাবেন শুধু শিম দেখবেন। অনেক এলাকায় কৃষককে বাজারেও যেতে হয় না। পাইকাররা এসে নিয়ে যান। তাতে পরিবহন খরচ কমে। অন্যদিকে দামও বেশ ভালো। তাই তারা খুশি।’

সীতাকুণ্ড উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হাবীবুল্লা বলেন, ‘এবার ২৫০০ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হয়েছে। সব মিলিয়ে ৭০ হাজার মেট্রিক টন শিম উৎপাদন হয়েছে। যা রেকর্ড। এসব শিম যাচ্ছে ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে। এ শিম থেকে অন্তত ২১০ কোটি টাকা আয় হবে। অতীতে গড়ে ১৫০ কোটি টাকার শিম বিক্রি হতো। কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের সার, বীজ, পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে।’

বাংলা স্কুপ/ প্রতিনিধি/ এনআইএন/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ