মানুষের স্নেহে বড় হচ্ছে ৩ হাতিশাবক
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
২৭-০১-২০২৫ ০৫:১০:১৫ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২৭-০১-২০২৫ ০৫:১০:১৫ অপরাহ্ন
ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বনাঞ্চলে একে একে স্বজনহারা হয় তিনটি হাতিশাবক। এর মধ্যে কক্সবাজারের টেকনাফ বনাঞ্চলে জন্মের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মাকে হারায় সদ্যোজাত একটি পুরুষ শাবক (এখনো নাম রাখা হয়নি)। যার বয়স ২১ দিন পেরিয়েছে। আরেক শাবক (যমুনা) একই বনাঞ্চলে জন্মের কয়েক দিনের মাথায় হারায় মাকে।
এটির বয়স বর্তমানে প্রায় চার বছর। অন্যদিকে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বনাঞ্চলে দলছুট হওয়ার পর দুর্ঘটনার শিকার হয়ে কাদায় আটকে পড়ে গুরুতর আহত হয় পুরুষ শাবক (বীর বাহাদুর)। বর্তমানে এটির বয়স প্রায় এক বছর তিন মাস। স্বজনহারা সেই তিন হাতিশাবকের ঠাঁই হয় কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে। তখন থেকেই পর্যায়ক্রমে এসব হাতিশাবক মানুষের (মাহুত) কাছ থেকে মায়ের মমতা ও সেবা পেয়ে দিন দিন বড় হতে চলেছে।
পার্কের বন্য প্রাণী হাসপাতালের কোয়ারিনটাইন শেড ও তত্সংলগ্ন হাতির ডেরায় গিয়ে দেখা গেছে, খুব অল্প বয়স থেকে এসব হাতিশাবককে নিয়মিত পরিচর্যা, ব্যায়াম করানোসহ নানা কায়দায় প্রশিক্ষিত করে তোলার সময় মাহুতের সঙ্গে শাবকগুলোর খুনসুটি বেশ আনন্দ নিয়ে উপভোগ করছে পার্কে আগতরা।
পার্ক কর্তৃপক্ষ বলছে, পার্কের বন্য প্রাণী হাসপাতালের অভ্যন্তরে পর্যটক-দর্শনার্থীদের গমনাগমের সুযোগ নেই। এর পরও পর্যটক-দর্শনার্থীরা যাতে নিরাপদ দূরত্ব থেকে এসব শাবকের তিড়িংবিড়িং নাচসহ মাহুতের সঙ্গে খুনসুটি উপভোগ করতে পারে সে জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক দম্পতি হাবিবুর রহমান ও নিলুফা আক্তার জানান, পার্কের বন্য প্রাণী হাসপাতালের কোয়ারিনটাই শেড ও পাদদেশে মাহুতের সঙ্গে হাতিশাবকের খুনসুটি দেখে মনটা আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠে। পার্কের মাহুত সুশীল চাকমা ও বীরসেন চাকমা বলেন, ‘নিজের শিশুসন্তানের মতো করে সেবা দিয়েই বড় করে তোলা হচ্ছে শাবকগুলোকে।’
পার্কের বন্য প্রাণী হাসপাতালের চিকিৎসক (ভেটেরিনারি সার্জন) হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকার নাইন বলেন, ‘তিন শাবককে নিয়ম করে খাবার (দুধ, কলাগাছ, কলা, শসা, গাজর, মিষ্টিকুমড়া) ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা প্রদানের মাধ্যমে বড় করে তোলা হচ্ছে।’
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম জানান, শাবকগুলোকে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বয়স অনুপাতে স্বাভাবিক খাবার ও ল্যাকটোজেন-১ দুধ খাওয়ানো হচ্ছে। আবদ্ধ জঙ্গলে রাখার সময় পরিচর্যাকারী মাহুতকে না দেখলে অবিকল মানুষের বাচ্চার মতোই আচরণ করে শাবক যমুনা ও বীর বাহাদুর।
চট্টগ্রাম বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এবং বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক আবু নাছের মো. ইয়াছিন নেওয়াজ বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধারের পর একে একে তিনটি হাতিশাবককে প্রেরণ করা হলে তাদের বড় করে তোলা হচ্ছে মায়ের মমতায় যত্ন-আত্তির মাধ্যমে।’
বাংলা স্কুপ/ প্রতিনিধি/ এনআইএন/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স