ঢাকা , শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এক মাসও বাকি নেই, এখনো তৈরি নয় লাহোর স্টেডিয়াম

ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় : ২৪-০১-২০২৫ ০৫:১৫:০৩ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২৪-০১-২০২৫ ০৫:১৫:০৩ অপরাহ্ন
এক মাসও বাকি নেই, এখনো তৈরি নয় লাহোর স্টেডিয়াম ​সংবাদচিত্র : সংগৃহীত
আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। ১ মাসও বাকি নেই, কিন্তু এখনো তৈরি নয় লাহোরের আইকনিক গাদ্দাফি স্টেডিয়াম। তিন বছর আগে পাকিস্তানকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজনের দায়িত্ব দিয়েছিল আইসিসি। অথচ যে মাঠে একটি সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল ম্যাচও হওয়ার কথা রয়েছে, সেই লাহোর স্টেডিয়ামের কাজই শুরু হয়েছে কেবল গত বছরের আগস্টে!

সে সময় পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নকভি ঘোষণা করেছিলেন, একটি বৃহৎ অবকাঠামোগত প্রকল্পের আওতায় পুরো গাদ্দাফি স্টেডিয়াম ভেঙে প্রায় নতুন করে নির্মাণ করা হবে। তিনি স্বীকার করেছিলেন, পাকিস্তানের কোনো স্টেডিয়ামই আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পৌঁছায়নি এবং এই অবস্থা বদলানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই আলোকে কাজ হচ্ছিল গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের। কিন্তু এখন পর্যন্ত স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ বেশ বাকি রয়ে গেছে।

লাহোরে ২২ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড ম্যাচ। পিসিবিও কাজ শুরু করার আগে সংশয়ে ছিল—নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এত বড় প্রকল্প শেষ হবে কি না। তারপরও তারা ঢালাওভাবে সংস্কার কাজে হাত নেয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য পরিকল্পনা করে, কাজ শেষ করার জন্য ২৫০ জন কর্মী দিনরাত পরিশ্রম করছেন সেখানে।

একাধিকবার গুঞ্জন উঠেছিল স্টেডিয়ামগুলোর নির্মাণকাজে বিলম্বের কারণে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরিয়ে নেওয়া হবে। পিসিবি এটিকে গুজবই বলেছিল। তারা আত্মবিশ্বাসী ছিল প্রতিটি ভেন্যুর কাজ ঠিকমতো চলছে এবং সময়মতো হয়ে যাবে। এদিকে এই টুর্নামেন্টের আগে করাচি ও লাহোরে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলবে পাকিস্তান, যেটি প্রথমে মুলতানে শুরু হওয়ার কথা ছিল। এই সিরিজ শুরু হতে কেবল দুই সপ্তাহ বাকি। এখন স্টেডিয়াম এলাকা কর্মযজ্ঞে পূর্ণ। সব কাজ একসঙ্গে চলায়, পুরো এলাকাই যেন অশান্ত।

মাটির স্তূপগুলো সমান করতে খননযন্ত্রগুলো কাজ করছে, যা দিয়ে আবার গ্যালারির সামনের সারি এবং বাউন্ডারি মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গা পূরণ করছে। পাওয়ার টুল এবং ওয়েল্ডিং মেশিন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। ম্যানেজাররা আশ্বস্ত করছেন, তারা যে কঠিন সময়ের মধ্যে কাজ করছেন তা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।

ক্রিকইনফোর প্রতিবেদন বলা হয়েছে, এখনো অনেক কাজ বাকি, তবে তা অতি দ্রুত গতিতে সম্পন্ন হচ্ছে। খেলোয়াড়দের প্যাভিলিয়নের সামনের বারান্দা-যা খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের জন্য নতুন অভ্যর্থনার জন্য তৈরি হচ্ছে। পিচের সোজাসুজি দারুণ দৃশ্য উপহার দেবে এটি, যদিও পুরোপুরি প্রস্তুত হতে কিছুটা সময় লাগবে। ৪ বাই ২ মিটার আকারের একটি আয়তাকার পরিখা রয়েছে, যা আলাদা করে ঘেরাও করা হয়েছে। এদিকে যে সিঁড়ি দিয়ে খেলোয়াড়রা মাঠে নামবেন, তা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।

খেলোয়াড়দের আইস বাথ নির্মাণ করা হচ্ছে। মাঠের নিচতলায় সিঁড়ি বেয়ে নামার সময় কিছুটা সতর্ক থাকতে হয়, কারণ দুই পাশে এখনো কোনো নিরাপত্তা রেলিং বসানো হয়নি। তবে এখানেই সবচেয়ে বেশি কাজ হচ্ছে; হাতুড়ি পেটানো, পেরেক মারা, ওয়েল্ডিং করা, খনন করা, কাঠামো তৈরি—সবকিছু এত দ্রুততার সঙ্গে চলছে।

স্থায়ী কাঠামোর বেশির ভাগই দাঁড়িয়ে গেছে। দর্শকদের জন্য অর্ধেকের বেশি আসন বসানো হয়েছে। আসন বসানোর কাজ এখনো চলছে, গাঢ় সবুজ এবং সাদা রঙের একটি বিশাল সমুদ্রের মতো বিস্তৃত দেখাবে আসনগুলো। মাঠে দুটি নতুন বড় রিপ্লে স্ক্রিন যোগ করা হচ্ছে। এর মধ্যে একটি বসানো সম্পন্ন হয়েছে, আরেকটি বসানোর প্রায় অর্ধেক কাজ শেষ।

এর আগে এনক্লোজারগুলোর পাদদেশ থেকে কোনো দৃশ্য দেখার সুযোগ ছিল না, লোহার বেড়ার কারণে। দর্শকদের মাঠ থেকে দূরে রেখেছিল এটি। একই সঙ্গে খেলা দেখার ব্যাঘাতও ঘটিয়েছিল। এবার কাছ থেকে খেলা দেখার একটা অনুভূতি পাবেন দর্শকেরা। স্টিলের বেড়াগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে এবং সেগুলো আর বসানো হবে না। এর পরিবর্তে একটি শুকনো পরিখা রাখা হয়েছে, মাঠে অনাকাঙ্ক্ষিত দর্শক অনুপ্রবেশ থেকে রক্ষা করবে এটি।

গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের ভেন্যুর ধারণক্ষমতা বাড়িয়ে ৩৫ হাজার করা হয়েছে। আসন বৃদ্ধি পাচ্ছে অনেকটা মাঠের দিকেই। লোহার বেড়া সরানোয় জায়গা বেড়েছে অনেক। সময়সীমা নিয়ে চিন্তা তো থাকছেই। পিসিবি আত্মবিশ্বাসী, চাপ থাকা সত্ত্বেও, সবকিছু ঠিক পথেই রয়েছে। আইসিসিও বলছে, অগ্রগতি যথাযথভাবেই চলছে।
১৯৯৬ সালে সবশেষ সংস্কার কাজ হয়েছিল গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে। সেটিও পাকিস্তান শেষবার কোনো আইসিসি ইভেন্ট আয়োজন করেছিল। সেবার ওয়ানডে বিশ্বকাপে লাহোরেই ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল শ্রীলঙ্কা। 

বাংলা স্কুপ/ ডেস্ক/ এনআইএন/এসকে 


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ