ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫ , ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

​মদ খেয়ে নারী নিয়ে অশ্লীল নৃত্য

মাদারীপুরে দুই এএসআই ক্লোজড

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ১৫-০১-২০২৫ ০৮:৩০:৩২ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১৫-০১-২০২৫ ০৮:৩০:৩২ অপরাহ্ন
মাদারীপুরে দুই এএসআই ক্লোজড
মাদারীপুরের রাজৈর থানার দুই সহকারী উপপরিদর্শকের (এএসআই) নারী নিয়ে অশ্লীল নৃত্যের কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তাদের সঙ্গে ছিলেন রাজৈর উপজেলা যুবলীগের কয়েক নেতাও। এতে সমালোচনার ঝড় বইছে পুরো জেলাজুড়ে। বিষয়টি জানাজানির পর সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুই এএসআইকে ক্লোজড করা হয়েছে।

রাজৈর থানার দুই এএসআই মো. হাদিবুর রহমান ও স্বপন অধিকারীর চারটি ভিডিও ক্লিপ এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, তারা একটি টিনশেড ঘরে মদ্যপ অবস্থায় একাধিক নারীকে নিয়ে নাচানাচি করছেন। এ সময় সিগারেটের ধোয়া উঁচিয়ে গানের তালে তালে উল্লাস করছেন। আবার কখনো যুবলীগের কয়েকজন নেতাও নাচে তাল দিচ্ছেন। সেই কক্ষের খাটে বসে তাদের সঙ্গে নারীদের নৃত্য উপভোগ করছেন রাজৈর উপজেলা যুবলীগ নেতা রাহাত হোসেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়নের নটাখোলা জগদীসের বাড়ি ও আনন্দপুরের ভবত শের বাড়ির গ্যারেজে মাঝেমধ্যেই আসর বসান বিভিন্ন শ্রেণির বখাটেরা। যেখানে মদ, গাঁজাসহ অবৈধ কর্মকাণ্ড চলে। অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন সময় পুলিশ সদস্যদের নিয়ে বেশ কয়েকজন পলাতক যুবলীগ নেতা সেখানে অশ্লীল কর্মকাণ্ড করে থাকেন। এমন কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার মুখে পড়ে বাংলাদেশ পুলিশ।

এ ব্যাপারে রাজৈর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ মাসুদ খান বলেন, পুলিশ বাহিনী শৃঙ্খলা মেনে কাজ করে। কোনো অবস্থায়ই আইনের বাইরে কিছু করতে পারে না। যদি অন্যায় বা শৃঙ্খলা ভঙ্গের কাজ করে, তার সেই কাজের দায়ভার পুলিশ বাহিনী নেবে না। বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক পুলিশ সুপারকে অবহিত করা হয়। তিনি তাদের ক্লোজড করেছেন।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ভিন্ন ভিন্ন কথা বললেন অভিযুক্ত দুই এএসআই। এ বিষয়ে অভিযুক্ত স্বপন অধিকারী বলেন, আমি বিন্দাস মানুষ, মাঝেমধ্যে একটু আমোদ-ফুর্তি করি। অনেক সময় আসামি ধরতে নানা কৌশল নিতে হয়। এতে যদি অন্যায় হয়, তাহলে আমি দোষী। আর অন্যায় না হলে কিছু করার নেই।

অন্যজন মো. হাদিবুর রহমান বলেন, আমার জন্মদিন উপলক্ষ্যে কিছুদিন আগে বন্ধুবান্ধব মিলে একটু আনন্দ-ফুর্তি করেছি। কিন্তু সেটা ভিডিও করে কে ভাইরাল করলো বিষয়টি বুঝে আসছে না। আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রও হতে পারে। তবে আমি ভুল স্বীকার করছি, এরকম কাজ আর কখনো করবো না।

যুবলীগ নেতা রাহাত হোসেনের সঙ্গে ওই আসরে মাতলামি করেছেন কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে হাদিবুর রহমান বলেন, কে বা কারা ছিল সেটা জানি না। আমার বন্ধুরা মিলে এমন আয়োজন করেছিল, তাই সেখানে গিয়েছি। তাছাড়া আমাদের শরীরে কোনো ইউনিফর্ম ছিল না। সবারই কম বেশি আনন্দ-ফুর্তি করার অধিকার আছে। যুবলীগ নেতা রাহাত হোসেন পলাতক থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার পরিবার এসব বিষয়ে কথা বলতে রাজি নয়।

এ বিষয়ে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. সাইফুজ্জামান বলেন, পুলিশ বাহিনী শৃঙ্খলা মেনে কাজ করে। ইতোমধ্যে যে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে, সেটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। কোনোভাবেই এটা কোনো পুলিশ সদস্য করতে পারে না। তাৎক্ষণিক অভিযুক্তদের পুলিশ লাইনসে ক্লোজড করা হয়েছে। শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় অচিরেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হবে।

বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ