ঢাকা , বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ , ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

​এক মেলায় লাভ ৪ লাখ কোটি রুপি!

বিশ্বের ‘সবচেয়ে বড় জনসমাগম’ মহা কুম্ভ মেলা শুরু

ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় : ১৩-০১-২০২৫ ০৫:৫৪:১২ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১৩-০১-২০২৫ ০৮:৩০:০৪ অপরাহ্ন
বিশ্বের ‘সবচেয়ে বড় জনসমাগম’ মহা কুম্ভ মেলা শুরু ​সংবাদচিত্র : সংগৃহীত
ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের শহর প্রয়াগরাজে (সাবেক এলাহাবাদ) শুরু হয়েছে পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জনসমাগম মহা কুম্ভ মেলা। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) শুরু হওয়া এই মেলায় যোগ দিতে এরই মধ্যে শহরটিতে হাজির হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, কুম্ভমেলা থেকে রাজ্য সরকারের ২ লাখ কোটি রুপি লাভ হতে পারে। প্রশাসনিক সূত্র অনুযায়ী, এ বছর কুম্ভমেলায় আনুমানিক ৪৫ কোটি মানুষের সমাগম হবে। এ বিপুল জমায়েত থেকে উত্তরপ্রদেশ সরকার ২ থেকে ৪ লাখ কোটি রুপি লাভ করতে পারে। 

প্রতি এক যুগ অর্থাৎ ১২ বছর পরপর এই মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার (১৩জানুয়ারি) থেকে শুরু হয়ে এই মেলা চলবে পরবর্তী ছয় সপ্তাহ। ভারতের সবচেয়ে পবিত্র নদী গঙ্গার সঙ্গে যমুনা এবং পৌরাণিক সরস্বতী নদীর সংযোগস্থলে—যা সঙ্গম নামে পরিচিত—গোসল করার এই উৎসব বহু আগে থেকেই প্রচলিত।

হিন্দুরা বিশ্বাস করেন, পবিত্র নদীতে স্নান বা গোসল করলে পাপ মোচন হয়, আত্মা বিশুদ্ধ হয় এবং জন্ম-মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্তি লাভ করা যায়। কারণ, হিন্দু ধর্মের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো মোক্ষ লাভ। প্রায় ৪০ কোটি তীর্থযাত্রী এই ৪৫ দিনের মহাসমাবেশে অংশগ্রহণ করার জন্য আসবেন। এই মেলার আকার এতই বিশাল যে, এটি মহাকাশ থেকেও দেখা যায়।

অনুমান করা হচ্ছে, সোমবার ৫০ থেকে ৮০ লাখ মানুষ ভক্ত স্নান করবেন এবং পরবর্তী দিন এই সংখ্যা ২ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে। মঙ্গলবারের (১৪ জানুয়ারি) মাহাত্ম্য হলো, ছাই মাখা ও ধুলো ধূসরিত নগ্ন গায়ের নাগা সন্ন্যাসীরাও এদিন সকালে স্নান করতে আসবেন।

প্রয়াগরাজ শহর কর্তৃপক্ষ দ্রুততার সঙ্গে সব প্রস্তুতি শেষ করার চেষ্টা করছেন। এরই মধ্যে তীর্থযাত্রী ও পর্যটকদের জন্য এক বিশাল তাঁবুর শহর তৈরি করা হয়েছে। নদীর তীরে প্রায় ৪ হাজার হেক্টর এলাকায় এসব তাঁবু বসানো হয়েছে। তবে এখনো অনেক কাজ শেষ হয়নি বলেই দেখা গেছে সরেজমিনে।

অনেক ধর্মগুরু এবং অন্যান্য ভক্তদের তাঁবুতে এখনো পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। আগত ভক্তদের ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় হাজার হাজার শৌচাগার এখনো বসানো হয়নি এবং অনেক শৌচাগার বসানো হলেও পানির অভাবে সেগুলো ব্যবহারযোগ্য করা সম্ভব হয়নি।

প্রয়াগরাজের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বিবেক চতুর্বেদী এর আগে বিবিসিকে জানিয়েছিলেন, গত বছরের মৌসুমি বৃষ্টির পানি অনেক দেরিতে নেমে যাওয়ার কারণে নির্মাণকাজের জন্য খুব একটা সময় পাওয়া যায়নি। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘প্রস্তুতি প্রায় শেষ এবং ভক্তদের স্বাগত জানাতে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’

চতুর্বেদী বলেন, ‘আমরা ৬৫০ কিলোমিটার অস্থায়ী রাস্তা নির্মাণ করেছি এবং হাজার হাজার তাঁবু ও শৌচাগার স্থাপন করেছি। ৪০ হাজার পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মীসহ ১ লাখের বেশি মানুষ এই মেলা সফল করার জন্য দিনরাত পরিশ্রম করছে।’মেলায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য বড় আকর্ষণ হলো নগ্ন নাগা সন্ন্যাসীদের উপস্থিতি। এসব সন্ন্যাসী দীর্ঘদিন গোসল না করে থাকেন এবং এই মেলার সময় তাঁরা বরফ ঠান্ডা পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাদের শরীর পরিষ্কার করেন। তবে সাধারণ হিন্দুদের কাছে এর গুরুত্ব আসলে ধর্মীয়। কারণ, তারা বিশ্বাস করেন যে—নাগা সন্ন্যাসীরা যে পানিতে গোসল করেন সেই পানি তাদের কারণে পূর্ণ হয়ে ওঠে।

বাংলা স্কুপ/ ডেস্ক/ এনআইএন/ এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ