ঢাকা , রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫ , ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ির দৌড়

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ০৩-০১-২০২৫ ১২:৩২:৪০ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০৩-০১-২০২৫ ১২:৩৩:৪৬ অপরাহ্ন
ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ির দৌড় সংবাদচিত্র: সংগৃহীত
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বেতাই গ্রামের মাঠে ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতা দেখতে নানা বয়সী মানুষ ভিড় করে। জেলার গান্না ইউনিয়ন বিএনপির পক্ষ থেকে এ আয়োজন করা হয়। ১৩ বছর ধরে নতুন বছরের শুরুতে হয়ে আসছে গরুর গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতাটি।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) দিনব্যাপী এ প্রতিযোগিতা দেখতে মাঠে জড়ো হন অন্তত ৩০ হাজার মানুষ। আমন মৌসুমের ধান কাটার পর ফাঁকা মাঠে পুরো গ্রাম পরিণত হয় আত্মীয়-স্বজনদের মিলনমেলায়। আয়োজনে ছিল হার-জিত, ছিল পুরস্কার বিতরণ। এই প্রতিযোগিতা ঘিরে বসে আনন্দ মেলাও। দেশের বেশ কয়েকটি জেলা থেকে আসা কমপক্ষে ২০টি দল এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।

সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, সকাল থেকে ফাঁকা মাঠের হাড়কাঁপানো শীতে জবুথবু হয়ে হাজার হাজার মানুষ প্রতিযোগিতা দেখার জন্য বিস্তর এ মাঠটিতে ভীড় জমিয়েছে। এ প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে এ এলাকার গ্রামগুলোতে চলছে উৎসবের আমেজ। নারী, পুরুষ, শিশু সব বয়সী মানুষ উৎসাহ নিয়ে মাঠে উপস্থিত হয়েছেন। কমতি ছিল না দূর-দূরান্তের মানুষের উপস্থিতিও।

এদিকে ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতা উপলক্ষে বিভিন্ন অস্থায়ী দোকান বসেছে। শিশুদের জন্য বিভিন্ন খেলনার দোকানসহ নাগরদোলাও চোখে পরেছে। এছাড়াও বিভিন্ন খাবারের দোকানগুলোতে নানা বয়সী মানুষের ভীর দেখা গেছে। এ সময় শরিফুল ইসলাম নামে এক দর্শক জানান, তিনি তার ছোট ছেলেকে নিয়ে প্রতিযোগিতা দেখতে এসেছেন। এর আগেও বিভিন্ন মাঠে এ প্রতিযোগিতা দেখেছেন তিনি। কিন্তু সন্তানকে দেখানোর জন্য তিনি এই প্রথম বারের মত এসেছেন।

রত্না খাতুন নামে এক নারী বলেন, “প্রতিবছরই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গরুর গাড়ির এ দৌড় প্রতিযোগিতা দেখতে আসি। এবারো মা-ভাই-বোনকে সাথে নিয়ে এসেছি। ঈদের মতো আনন্দ হয়।”আয়োজকরা জানান, ঝিনাইদহ, যশোর, মাগুরা ও নড়াইল থকে বাছাই করা মোট ২০টি গরুর গাড়ি এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।

প্রতিযোগিতায় প্রথম হয় ঝিনাইদহের মহেশপুরের কোরবান আলির গরুর গাড়ি, পুরষ্কার হিসেবে তার দলকে দেওয়া হয় একটি গরু।দ্বিতীয় হয় নড়াইলের নরু মিয়ার গাড়ি, তাকে পুরষ্কার দেওয়া হয় একটি ছাগল, যৌথভাবে তৃতীয় হয় যশোরের বাঘারপাড়া ওলিদ হোসেনের গাড়ি। তাকে একটি বাইসাইকেল ও চুয়াডাঙ্গার জীবন নগরের শহিদুল ইসলামকে একটি ছাগল পুরষ্কার হিসেবে দেওয়া হয়।

আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য গোলাম সরোয়ার বলেন, “এখন অধিকাংশ জমি ত্রি-ফসলিতে পরিণত হওয়ায় মাঠ ফাঁকা পাওয়া যায় না। সেই কারনে এ প্রতিযোগিতা এখন তেমন একটা দেখা যায় না। গ্রামের মানুষের বিনোদন দিতে এই আয়োজন করা হয়েছে। গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতে আগামীতে ২ দিন ধরে এ প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হবে।”আয়োজকদের আরেকজন বলেন, “গ্রামের মানুষকে আনন্দ দেওয়া, আর ঐতিহ্য ধরে রাখতেই এমন আয়োজন।”

বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এনআইএন


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ