'৪০০ কোটির পিয়নে'র ব্যাংকে ৬২৬ কোটি টাকা!
ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় :
১৭-১২-২০২৪ ০৬:২৬:৫৭ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১৭-১২-২০২৪ ০৮:০১:০১ অপরাহ্ন
ফাইল ফটো
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবনের ব্যক্তিগত কর্মচারী মো. জাহাঙ্গীর আলমের নাম হয়ে গিয়েছিল '৪০০ কোটির পিয়ন'। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) শেখ হাসিনার সেই পিয়নের ব্যাংক হিসাবে ৬২৬ কোটি ৬৫ লাখ ১৮ হাজার ১০৭ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে।
দুদক জানিয়েছে, এই লেনদেনগুলো জাহাঙ্গীর আলম এবং তার মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে আটটি ব্যাংকের ২৩টি হিসাবে সম্পন্ন হয়েছে, যা অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ ভোগ করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।
এছাড়া, জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ১৮ কোটি ২৯ লাখ ১০ হাজার ৮৮২ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দুদক কর্মকর্তারা জানান, জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী কামরুন নাহারের বিরুদ্ধে ৬ কোটি ৮০ লাখ ৪৮ হাজার ৬৪২ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কামরুন নাহার, যিনি একজন গৃহিণী, তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলমের সহায়তায় দুটি ব্যাংকে সাতটি সঞ্চয়ী ও ডিপিএস হিসাব খুলে মোট ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৩০ হাজার ৮৫৫ টাকার লেনদেন করেছেন।
দুদক কর্মকর্তা জানান, এই অস্বাভাবিক লেনদেনের কারণে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করা হয়েছে।
গণমাধ্যমের তথ্যমতে, দেশের আটটি ব্যাংকের মোট ১৩টি শাখায় ২৩টি একাউন্ট ছিলো পিয়ন জাহাঙ্গীর ও তার সংশ্লিষ্টদের। যার একটি তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিলের মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে। ৬৬০২১০০০১৯৮০ এই হিসাব নম্বর দিয়ে জাহাঙ্গীর আলম চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে, পাঁচ মাসেই অন্তত ২শ’ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছিলেন।
এছাড়া, রাজধানীর মিরপুর ৯-এর ঘ ব্লকের ২ নম্বর এভিনিউয়ে একটি বিলাসবহুল বাড়ির (হোল্ডিং নং ৪) মালিকও পিয়ন জাহাঙ্গীর। মিরপুর দুই’য়ের তিন নম্বর রোডের অঙ্গনা এ্যাপার্টমেন্ট, আর অভিজাত ধানমণ্ডির প্রেসিডেন্ট পার্কে রয়েছে ফ্ল্যাট। নোয়খালির মাইজদী এলাকায় বহুতল ভবনও রয়েছে তার। কীভাবে তিনি এতো সম্পদ করেছেন, তা নিয়ে ধাধায় তার এলাকার মানুষ।
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার কিছুদিন আগে শেখ হাসিনা এক সংবাদ সম্মেলনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে জাহাঙ্গীর আলমের অর্থসম্পদের বিষয়টি সামনে আনেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমার বাসায় কাজ করেছে, পিয়ন ছিল সে। এখন ৪০০ কোটি টাকার মালিক। হেলিকপ্টার ছাড়া চলে না। বাস্তব কথা। কী করে বানাল এত টাকা? জানতে পেরেছি, পরে ব্যবস্থা নিয়েছি।’ বিকেলে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনের পর রাতেই জাহাঙ্গীর আলমের দেশ ছাড়ার খবর পাওয়া যায়।
বাংলা স্কুপ/ ডেস্ক/ এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স