অভিযোগের এক ঘণ্টার মধ্যেই ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
০৯-১২-২০২৪ ০৩:৪৬:১৬ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
০৯-১২-২০২৪ ০৩:৫৩:১৯ অপরাহ্ন
সংবাদচিত্র : সংগৃহীত
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, ঢাকাবাসীর জন্য আমরা সেবক হিসাবে কাজ করতে চাই। কোনও ভুক্তভোগী থানায় অভিযোগ বা জিডি করার এক ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। আগে জিডি হওয়ার ৪৮-৭২ ঘণ্টা পর পুলিশ অফিসাররা সাড়া দিতো। এখন এক ঘণ্টার মধ্যে অভিযোগকারীর কাছে হাজির হয়ে অভিযোগ শুনবে। গুরুত্ব অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন পুলিশ অফিসাররা।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার এ কথা বলেন। শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, ‘আমি একজন সেবক। আমি রেভিনিউ, ট্যাক্স কালেক্টর না। আমার কাজ জনগণকে সেবা দেওয়া। তেজগাঁও থানায় ৫০০ মামলা হোক সমস্যা নেই। সে জন্য আমি জবাবদিহি করবো। কেন ৫০০ মামলা হলো। সেটার জবাব আমি দেবো। মামলা হোক, জিডি হোক, সমস্যা নাই। কিন্তু কোনও ঘটনা যেন হাইড না থাকে। যে ঘটনায় মামলা হওয়ার কথা সেটার জন্য মামলাই নিতে হবে, যেটার জন্য জিডি নেওয়ার কথা সেটার জিডিই হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকাবাসীকে দ্রুত সেবার দেওয়া জন্য প্রতিটি থানা এলাকায় আমরা নতুন একটি টিম গঠনে কাজ করছি। আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে এই ব্যবস্থা চালু হবে। সে জন্য নতুন লোক প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে। এক সপ্তাহের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের থানায় থানায় পাঠানো হবে। আমি চাই, সেবা দিতে রেসপন্স টাইম কমে নিয়ে আসা। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে মানুষ পুলিশি সহায়তা পাবে। আগে জিডি হওয়ার ৪৮-৭২ ঘণ্টা পর তদন্তকারী কর্মকর্তা যোগাযোগ করতো বা ঘটনাস্থলে যেতো। কিন্তু এখন সে সময় পর্যন্ত যেন অপেক্ষা করতে না হয়, জিডি নথিভুক্ত হওয়ার এক-দুই ঘণ্টার মধ্যে অফিসার যেভাবেই হোক ঘটনাস্থলে যাবেন বা অভিযোগকারির সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’
চাঁদাবাজির জন্য নিত্য পণ্যের দাম বাড়ছে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ঢাকাবাসীর সহযোগিতা ছাড়া চাঁদাবাজি বন্ধ করা কঠিন। আপনারা আমাদের সহযোগিতা করুন। চাঁদাবাজির কারণে নিত্য পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সমাজ থেকে প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে। আপনারা চাঁদা দেবেন না। যারা চাঁদা নিতে আসে, তারা কীভাবে চাঁদা নেয়, সেটা আমরা দেখবো। এ বিষয়ে আমরা কাজ করছি। দ্রুতই আপনারা দেখতে পারবেন।’
মিথ্যা মামলা ও মামলা দিয়ে চাঁদাবাজি এবং হয়নারি করা পুলিশ সদস্য ও মামলার বাদীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারা দেশে মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরপরাধ মানুষকে হয়রানির ঘটনা বেড়েছে। তথাকথিত ব্যক্তিদের আসামি করে যারা চাঁদাবাজি করছে, তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা হবে। তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো। যেসব লোকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হচ্ছে, তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত তাদের গ্রেফতার করা হবে না।’
জুলাই-আগস্টের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিংহভাগ মামলা আদালতের মাধ্যমে হয়েছে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘মামলায় অনেকে জড়িত ছিল না। গুটিকয়েক লোক জড়িত ছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, মামলার বাদী একশ’ লোকের কাছে গিয়ে টাকা চাচ্ছে। আমরা বলবো, তাদের ভয়ের কিছু নাই, তাদের গ্রেফতার করা হবে না। তদন্তে যাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে, আমরা শুধু তাদের গ্রেফতার করবো।’
মামলার বাদী ছাড়া পুলিশও এমন কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মামলা বাণিজ্যে অনেক পুলিশ সদস্যদের নাম পাওয়া গেছে। আমাদের কাছে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। আমি গতকাল অলরেডি একজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি।’
ঢাকার ট্রফিক ব্যবস্থাপনার ওপরে জোর দেওয়া হয়েছে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থা বিশৃঙ্খল অবস্থায় আছে। তবে ট্রাফিকে শৃঙ্খলা ফেরাতে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর জন্য নগরবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন। বিগত সরকার অটোরিকশার অনুমতি দেওয়ার কারণেই বাড়ছে অটোর সংখ্যা। অচিরেই এটি কমানো না গেলে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে নগরবাসীকে। এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকায় কমবেশি ২ কোটি লোকের বসবাস। পৃথিবীতে এতো ঘনবসির শহর আছে বলে জানা নাই। সীমিত রিসোর্স নিয়ে ২ কোটি লোকের সেবা। পবিত্র দায়িত্ব আমার ওপর ঢাকাবাসীকে নিরাপদ রাখা। আমাদের শহরের রাস্তাঘাট সীমিত। একটি আদর্শ শহরে রাস্তা থাকা উচিৎ ২৫ ভাগ, আমাদের ৭ ভাগ। এমন অবস্থায় অটোরিকশা ও হকাররা ফুটপাত-রাস্তা দখল করে রাখছে। এরূপ অবস্থায় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত জটিল হয়ে পড়েছে।’
বাংলা স্কুপ/ প্রতিবেদক/ এনআইএন/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স