পটুয়াখালীতে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী ক্ষুদ্র পণ্য বাণিজ্য মেলা। প্রতিদিনই এই মেলার মাঠে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি উপচে পড়ে মানুষের ঢল। তবে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বার্ষিক পরীক্ষা চলাকালে ক্ষুদ্র পণ্য বাণিজ্য মেলা আয়োজনের ফলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা প্রস্তুতি নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। 
এদিকে ক্ষুদ্র পণ্য বাণিজ্য মেলা মাসব্যাপী অয়োজনের ফলো বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। মেলার আয়োজনের ফলে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন তারা। ফলে ব্যবসায়ীরা মেলার সময় না বাড়িয়ে বন্ধের দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত আবেদন করেছেন। 
জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে সামিয়া এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান পটুয়াখালী শহরের পিডিএসএ মাঠে মাসব্যাপী ক্ষুদ্র পণ্য বাণিজ্য মেলার আয়োজন করে। গত ১৪ নভেম্বর  বিকেল ৫ টায় জেলা প্রশাসক আবুল হাসনাত মো. আরিফিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ফিতা কেটে এ মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। 
আয়োজকরা জানান, এই বাণিজ্য মেলায় ১০০টি স্টলের মধ্যে ক্রোকারিজ সামগ্রী, খাদ্য সামগ্রী, তাত বস্ত্র, গার্মেন্টস, ভ্যারাইটি সামগ্রী, গিফট কর্ণার, খেলনা সামগ্রী ছাড়াও ছোট সোনামনিদের বিনোদনে নাগরদোলাসহ বেশ কয়েকটি রাইডস, সার্কাস ও মৃত্যুকূপে প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের প্রদর্শনী রয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণ প্রতিদিন বিকেল ৩টা হতে রাত ১১টা পর্যন্ত সকলের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। 
এদিকে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মেলা প্রাঙ্গন বিকেল ৩ টায় খোলার কথা থাকলেও সকাল থেকেই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা মেলার মাঠে ভিড় করছে। অনেকে পরীক্ষা দিয়েই দুপুরে সহপাঠিদের নিয়ে ছুটছে মেলা প্রঙ্গনে। এতে করে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের লেখাপড়া নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। 
ক্ষুদ্র পণ্য বাণিজ্য মেলা নিয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। সকল শ্রেণির মানুষ মেলা মুখী হওয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্রেতা শূন্য হয়ে পড়েছে। মেলার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। এদিকে মেলার সময়সীমা বাড়ানোর জন্য আয়োজকরা প্রচারনা চালাচ্ছেন। এই অবস্থায়  স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মেলার সময় না বাড়িয়ে মেলা বন্ধ করার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে  লিখিত অভিযোগ করেছেন। 
১৮২ জন ব্যবসায়ীর স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগে বলা হয়, পটুয়াখালী পিডিএসএ মাঠে চলমান গ্রামীণ শিল্প মেলার কারণে সকল ব্যবসায়ীগন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। বর্তমান শীত মৌসুম থাকা সত্ত্বেও মেলা থাকার কারণে ক্রেতাগন তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আসছেনা। যার পরিপ্রেক্ষিতে বেচা-কেনার অবস্থা খুবই খারাপ। পৌর ট্রেড লাইসেন্স, ইনকাম ট্যাক্স, ভ্যাট দিয়ে এবং ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋন নিয়ে ব্যবসা করে দোকান ভাড়া, কর্মচারী বেতন, বিদ্যুৎ বিলসহ বিভিন্ন ব্যায় নির্বাহ করতে পাছেন না তারা। 
লিখিত আবেদনে আরো বলা হয়, ১৫ ডিসেম্বর মেলা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা জানতে পেরেছি যে, মেলার সময় বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। মেলার সময় বৃদ্ধি করা হলে ব্যবসায়ীদের পথে বসা ছাড়া উপায় থাকবে না। এই অবস্থায় মেলার সময় বৃদ্ধি না করে বন্ধ করার জন্য দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।  
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক আবুল হাসনাত মো. আরিফিন বলেন, ব্যবসায়ীদের অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হবে। আয়োজক মোঃ মনির হোসেন জানান, জেলা প্রশসনের সার্বিক সহযোগীতায় এবং মেসার্স সামিউল এন্টারপ্রাইজ, বরিশালের ব্যবস্থপনায় এ মেলা শুরু হয়। আগামী ১৩ ডিসেম্বর শেষ হবে।
 
বাংলা স্কুপ/ প্রতিনিধি/ এনআইএন/এসকে