কুমিল্লাকে বিভাগ ঘোষণা করুন : জামায়াত আমির
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
০৬-১২-২০২৪ ০৫:০৩:১৫ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
০৬-১২-২০২৪ ০৫:০৩:১৫ অপরাহ্ন
সংবাদচিত্র : সংগৃহীত
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান কুমিল্লা বিভাগ হওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে কুমিল্লা মহানগর জামায়াত ইসলামীর কর্মীসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মত দেন তিনি।
জামায়াতের আমির বলেন, আপনারা বিভাগ পাইলেন না, এটা আপনাদের কপালের দোষ, কারণ আপনাদের জেলার নাম কুমিল্লা। কুমিল্লা জেলাটা কি আমাজন জঙ্গল থেকে এখানে এসে পড়েছে? এটা কি বাংলাদেশের অংশ নয়? মহান মুক্তিযুদ্ধে কুমিল্লার কি কোনো ভূমিকা নাই? যদি থাকে তাহলে কুমিল্লা নামে বিভাগ দিতে অসুবিধা কোথায়? কেন সেটা আটকে রেখেছিলেন?
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান সাহেব দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন, তার সুকীর্তি অথবা অন্যকিছু সেটার মূল্যায়ন জনগণ করেছে, জনগণ করবে, করতে থাকুক। কিন্তু আপনি ওই জায়গার জের ধরে কুমিল্লা বিভাগ দেবেন না! একটা জেলাকে তার নাম ধরে অপমানিত করবেন, আপনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন না।
তিনি বলেন, এটা একটা জুলুম। একটা এলাকার লোকদের ওপর নিঃসন্দেহে একটি জুলুম। অনেকগুলো জুলুমের মধ্যে এটাও একটা জুলুম। আমরা বর্তমান সরকারকে অনুরোধ করব তার (কুমিল্লা বিভাগের) তো সবকিছুই রেডি আছে। আপনারা মেহেরবানি করে তাদের এই হকটাকে দিয়ে দেন।
আওয়ামী লীগ ও ভারতকে ইঙ্গিত করে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আপনারা কাদের ভয় দেখাচ্ছেন? যারা এক হাত হারানোর পরও পঙ্গুত্ব বরণ করার পরও যুদ্ধে প্রাণ দিতে প্রস্তুত ছিল তাদের ভয় দেখাবেন না। শাহাদাত যাদের প্রিয়, তাদের চোখ রাঙাবেন না।
এসময় জামায়াত আমির বলেন, বাংলাদেশে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত যতজন শহীদ হয়েছেন, আল্লাহ তাদের কবুল করুক। যারা দেশ ও দেশের বাইরে থেকে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, তাদের লাল গোলাপ শুভেচ্ছা জানাই।
তিনি বলেন, আমরা মেজরিটি-মাইনরিটি মানি না। বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া সবাই এ দেশের গর্বিত নাগরিক। ভারত এটা নিয়ে ট্রামকার্ড খেলছে। অথচ সারা দুনিয়া দেখছে কে সাম্প্রদায়িক, কে সংখ্যালঘু হত্যাকারী। আমাদের জীবন থাকতে এ দেশের একটি ধূলিকণাও কাউকে দখল করতে দেব না।
সরকারকে বলব, কিছু মৌলিক সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিন। তরুণ প্রজন্ম ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে। তারাই আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবে, যোগ করেন জামায়াতের আমি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে দুনিয়ার জন্য অনুসরণীয় করে তুলুন। যেন সারা পৃথিবীর মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে। বিভিন্ন মহলে জামায়াতে ইসলামীকে বলা হয় প্রতিক্রিয়াশীল দল। অথচ আমাদের মতো নির্যাতিত আর কে হয়েছে? কোন দলের ১১ জন প্রধান নেতাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে? তারপরও আমরা দারুণ ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে চলেছি।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. মো. আবদুল্লাহ তাহের বলেন, ১৯ বছর পর প্রকাশ্যে টাউনহল মাঠে প্রোগ্রাম করতে এসেছি। এ কুমিল্লা বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান। ঢাকা-চট্টগ্রামের নাভি কুমিল্লা। ইন্ডিয়া ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করলে প্রথম কুমিল্লায় পড়বে। ভারতের ট্যাংক শহীদের লাশ দিয়ে প্রতিহত করব। আমরা শাল, গজার আর ইমানের কাঠ নিয়ে ট্যাংকের সামনে দাঁড়িয়ে যাব। মমতা আপা বলেছেন, বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠাতে। শান্তিরক্ষী বাহিনী ভারতে পাঠাতে হবে। মমতা আপা, মাথা গরম করবেন না। মাথা গরম করে ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও কুমিল্লা মহানগরের আমির কাজী দীন মোহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাসুম, মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মুহাম্মদ আব্দুর রব, সাবেক চাকসু ভিপি ও কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার, কুমিল্লা মহানগরের নায়েবে আমির মু. মোছলেহ উদ্দিন এবং এ কে এম এমদাদুল হক মামুন।
বাংলা স্কুপ/প্রতিনিধি/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স