বিবিসি বাংলা প্রতিবেদন
প্রথম আলো-ডেইলি স্টারের সামনে বিক্ষোভের কারণ কী?
ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় :
২৭-১১-২০২৪ ০৮:২৩:৪৮ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২৮-১১-২০২৪ ১২:০০:৪১ পূর্বাহ্ন
ঢাকায় প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেওয়া বিক্ষোভকারীদের একাংশ (সোমবারের ছবি)
বাংলাদেশের প্রথম সারির দু’টি সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের বিরুদ্ধে ‘ভারতপন্থী’সহ বেশকিছু অভিযোগ তুলে সেগুলোর প্রধান কার্যালয়ের সামনে গত কয়েক দিন বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে একদল ব্যক্তিকে।
‘বাংলাদেশের জনগণ’, ‘তৌহিদী জনতা’সহ বিভিন্ন ব্যানারে একত্রিত হওয়া ওইসব বিক্ষোভকারীরা পত্রিকা দু’টির সম্পাদকের পদত্যাগ ও বিচার চাচ্ছেন।
এমনকি, বিক্ষোভ মিছিল থেকে সোমবার প্রথম আলোর দু’টি জেলা কার্যালয়ে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনাও ঘটানো হয়েছে, যা নিয়ে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
‘ভিত্তিহীন’ অভিযোগ তুলে ‘চাপ সৃষ্টি’ করতেই পরিকল্পিতভাবে এসব ঘটনা ঘটানো হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছে পত্রিকাটির কর্তৃপক্ষ। তবে কারা এর পেছনে রয়েছে, সে বিষয়ে অবশ্য তারা নিশ্চিত নন।
“তারা যখন বলছে যে, ডেইলি স্টার এটা করেছে, তখন সেটার পক্ষে তথ্য দেখাক। একটা নিউজ দেখাক, কলাম দেখাক....আমরা সেটা নিয়ে আলোচনা করি,” বিক্ষোভকারীদের দাবির বিষয়ে মন্তব্য করেন দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম।
এদিকে, হামলার ঘটনায় সাংবাদপত্রের মালিক ও সাংবাদিকদের সংগঠনের পক্ষ থেকে নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে যে, এ ধরনের ঘটনা আগামীতে আর সহ্য করা হবে না।
বাংলাদেশে অবশ্য এর আগে ২০০৭ সালেও একবার একটি ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশকে কেন্দ্র করে প্রথম আলোর বিরুদ্ধে এ ধরনের বিক্ষোভ দেখা গিয়েছিল।
কিন্তু এবার প্রথম আলো-ডেইলি স্টারের বিরুদ্ধে হঠাৎ এই বিক্ষোভের কারণ আসলে কী?
এখন পর্যন্ত যা যা ঘটেছে
‘ভারতপন্থী’ আখ্যা দিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের বিরুদ্ধে নানান প্রচারণা চালাতে দেখা যাচ্ছিলো।
সেটারই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার কাওরান বাজার এলাকায় অবস্থিত দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার প্রধান কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করে একদল ব্যক্তি।
‘বাংলাদেশের জনগণ’ ব্যানারে একত্রিত হওয়া ওইসব বিক্ষোভকারীরা অবশ্য সেদিন খুব বেশি সময় পত্রিকাটির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করতে পারেননি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে সরিয়ে দেন।
এর পরদিন, অর্থাৎ শুক্রবার একই ব্যানারে তারা অবস্থান নেয় ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় অবস্থিত দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার প্রধান কার্যালয়ের সামনে।
বিক্ষোভকারীরা জানান, ‘ভারতীয় আগ্রাসন’ প্রতিরোধে তারা প্রথম আলো-ডেইলি স্টার পত্রিকার সামনে ‘জিয়াফত’ ও ‘জোড়া গরু জবেহ’ কর্মসূচি পালন করবেন।
সেদিন পত্রিকাটির কার্যালয়ের সামনের সড়কে জুমার নামাজও পড়েন তারা, যা নিয়ে পরবর্তীতে বেশ আলোচনা-সমালোচনা হতে দেখা যায়।
একই ধারাবাহিকতায় শনিবারেও দুই পত্রিকা অফিসের সামনে কিছু সময়ের জন্য অবস্থান নেয় দলটি।
কিন্তু রোববার দুপুর থেকে প্রধানত প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালন করতে থাকে অর্ধ-শতাধিক বিক্ষোভকারী।
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী সেদিন সত্যি সত্যি গরু এনে সেটি জবাই করে এবং প্রথম আলো কার্যালয়ের পাশের একটি সড়কে হাড়ি বসিয়ে রান্নাও করতে শুরু করেন তারা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিকেলে কার্যালয়টির সামনে বড় সংখ্যক সেনা ও পুলিশের সদস্য মোতায়েন করে প্রশাসন। সেসময় বিক্ষোভকারীদের ওই এলাকা থেকে সরে যেতে বলে পুলিশ।
কিন্তু তারপরও না সরতে চাওয়ায় একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এতে উভয়পক্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়।
বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ পরে কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এমন পরিস্থিতিতে গোটা কারওয়ান বাজার এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
রাতে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসলেও সোমবার ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বগুড়া, বরিশাল, ময়মনসিংহ, চাঁদপুর, মাদারীপুরসহ বিভিন্ন জেলায় প্রতিবাদ মিছিল ও মানববন্ধন করে বিক্ষোভকারী ও তাদের সমর্থকরা।
রাজশাহীতে ‘আলেম ওলামা ও তাওহীদি জনতা’র ব্যানারে বের হওয়া মিছিল থেকে জেলার প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়।
সেদিন রাতে পত্রিকাটির বগুড়া অফিসেও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও সাইনবোর্ড ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছে পুলিশ। হামলার ঘটনায় জড়িতদের কাউকে আটকও করতে পারেনি তারা।
বিক্ষোভকারীরা কী বলছে?
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কারণেই বাংলাদেশের গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পত্রিকা দু'টিকে 'দিল্লির দাসত্বকারী'এবং 'বাংলাদেশ ও ইসলামের শত্রু' আখ্যা দিয়েছেন তারা।
“দিল্লির দাসত্বকারী, বাংলাদেশ ও ইসলামের শত্রু এই প্রথম আলো-ডেইলি স্টার বাংলাদেশে এক-এগারোর কারিগর। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় বসিয়ে স্বৈরাচার হয়ে ওঠার সুযোগ করে দিয়েছে তারা,” বিবিসি বাংলাকে বলেন বিক্ষোভকারী একজন।
কর্মসূচি চলাকালে 'ডেইলি স্টার'কে ব্যঙ্গ করে 'দিল্লি স্টার' বলতেও শোনা গেছে।
এদিকে, অবস্থান কর্মসূচি পালনের শুরুর দিকে বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা বন্ধের দাবিও তুলছিলেন।
মূলত সেই ভাবনা থেকেই ব্যানারে ‘জিয়াফত’ শব্দটি রাখা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
কিন্তু সরকারসহ বিভিন্ন মহল এই দাবির বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার পর সেখান থেকে তাদের সরে আসতে দেখা যাচ্ছে।
“এক-এগারো ঘটানো থেকে শুরু করে এই দুই পত্রিকার সম্পাদক যত অন্যায় কাজ করেছেন, প্রোপাগান্ডা ছড়িয়েছেন, সেগুলো স্বীকার করে নিয়ে এখন তাদেরকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে এবং পদত্যাগ করতে হবে। পত্রিকা চালু থাকুক,” বিবিসি বাংলাকে বলেন বিক্ষোভ কর্মসূচির অন্যতম সংগঠক শের মোহাম্মদ।
একইসঙ্গে, পত্রিকা দু'টির সম্পাদককে আইন আওতায় এনে বিচারেরও দাবি করেছেন বিক্ষোভকারীরা। দ্রুত এসব দাবি মেনে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে শিগগিরই নতুন কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারীও দিয়েছেন তারা।
যদিও মঙ্গলবার অবশ্য পত্রিকাগুলোর অফিসের সামনে নতুন কোনো বিক্ষোভ বা জমায়েত দেখা যায়নি।
কী বলছে প্রথম আলো-ডেইলি স্টার?
বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে, বাস্তবে সেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই বলে দাবি করেছে দৈনিক প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ।
“অভিযোগ গুলোর সবক’টিই ভিত্তিহীন এবং অসত্য। আমরা একটা স্বাধীন সংবাদপত্র হিসেবেই নিজেদের পরিচালনা করি এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রেখে কাজ করি,” বিবিসি বাংলাকে বলেন দৈনিক প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ।
ডেইলি স্টারের পক্ষ থেকেও একই দাবি করা হয়েছে।
“এটা (অভিযোগ) তথ্যভিত্তিক নয়। তারা যখন বলছে যে, ডেইলি স্টার এটা করেছে, তখন সেটার পক্ষে তথ্য দেখাক। একটা নিউজ দেখাক, কলাম দেখাক....আমরা সেটা নিয়ে আলোচনা করি,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম।
পত্রিকা দু’টি এটাও বলেছে যে, সমালোচনাগুলো তথ্যভিত্তিক হলে সেটি গ্রহণ করতে তারা প্রস্তুত রয়েছে।
“গণমাধ্যম বা একটা পত্রিকা সমালোচনার ঊর্ধ্বে না। ডেইলি স্টার যে এ পর্যন্ত এসেছে, তার কারণ আমরা সমালোচনা গ্রহণ করি। কিন্তু সেটা তো তথ্যভিত্তিক হতে হবে,” বলেন মি. আনাম।
কিন্তু তথ্যভিত্তিক সমালোচনা না করে মুখে মুখে যেভাবে ঢালাও সমালোচনা করা হচ্ছে, সেটিকে ‘স্বাধীন সাংবাদিকতার’ উপর আঘাত হিসেবেই দেখছেন তারা।
“এটা তো চাপ তৈরি করার চেষ্টা। আর আজকে একটা আক্রমণ মেনে নেওয়া মানে কাল আরেকটা আক্রমণের পথ তৈরি করে দেয়া। আমাদের কর্মীসহ গোটা সাংবাদিক মহল এখন এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন,” বলেন প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক মি. শরিফ।
বিক্ষোভের ঘটনাটি পরিকল্পিত বলেই মনে করছেন পত্রিকা দু’টির দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা।
“কেউ না কেউ তো নিশ্চয় এর পেছনে রয়েছেন, সংগঠিত করছেন। না হলে বিক্ষোভে প্রতিদিন এত মানুষ আসছে কোথা থেকে?,” বলছিলেন মি. শরিফ।
“আমরা দেখছি যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ কেউ এগুলা নিয়ে কথা বলছেন, তারপর একদল লোক এসে এগুলো করছেন। কাজেই তাদের মধ্যে তো একটা যোগসূত্র আছেই, তবে সেটি রাজনৈতিক কি-না, সে ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত নয়,” বলেন প্রথম আলোর নির্বাহী এই সম্পাদক।
তবে কার্যালয়ের নিরাপত্তা প্রদানসহ সার্বিকভাবে তারা অন্তর্বর্তী সরকারের সহযোগিতা পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ
গত কয়েক দিন ধরে গণমাধ্যম কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে কার্যক্রম বন্ধে চাপ প্রয়োগ ও হামলার যেসব ঘটনা ঘটেছে, তাতে তীব্র নিন্দা প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে গণমাধ্যমের মালিক ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন।
বিষয়টিকে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর ‘চরম আক্রমণ’ বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশের সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন ‘নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ (নোয়াব)।
“নোয়াব উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে, দেশের সংবাদমাধ্যমগুলোর স্বাধীনতার ওপর নানাভাবে আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে,” সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছে নোয়াব।
প্রকাশিত কোনো সংবাদের বিষয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে শান্তিপূর্ণ ও গঠনমূলক উপায়ে সেটি জানানোর পরামর্শ দিয়েছে সংগঠনটি।
“কোনো পত্রিকার পরিবেশিত কোনো সংবাদ বা সম্পাদকীয় নীতিমালা নিয়ে কারো কোনো আপত্তি থাকলে লেখালেখির মাধ্যমে নিজের বুদ্ধিবৃত্তিক অবস্থান ও বক্তব্য তুলে ধরতে পারেন। কিন্তু এভাবে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা সংবাদমাধ্যমে সাংবাদিকতার চর্চা ও পরিবেশকে ব্যাহত করছে,” বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
গণমাধ্যমসহ সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলার ঘটনা কঠোর হস্তে দমন করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে নোয়াব। সেই সঙ্গে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্থ হয় এমন সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সরকার যা বলছে
বিষয়টি নিয়ে বিবিসি বাংলার পক্ষ থেকে তথ্য এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে সোমবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্য উপদেষ্টা জানান যে, গণমাধ্যমের ওপর হামলা বা পত্রিকা বন্ধের জন্য চাপ প্রয়োগ করাকে কোনোভাবেই সমর্থন করে না অর্ন্তবর্তী সরকার।
“কোনো পত্রিকা অফিসে ভাংচুর করা, পত্রিকা বন্ধের জন্য চাপ প্রয়োগ করা, সেটা আমরা সমর্থন করি না। এই ধরনের ঘটনা পরবর্তীতে ঘটলে টলারেট (সহ্য) করা হবে না,” সোমবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
সোমবার রাজশাহী ও বগুড়ায় প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলা ও ভাংচুরের যে ঘটনা ঘটেছে, সেটির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
“আমরা আহ্বান জানাব, কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত বা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে যেন জনগণ অংশ না নেয়। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন কাজ থেকে যেন আমরা বিরত থাকি,” বলেন মি. ইসলাম।
তবে কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তথ্য উপদেষ্টা।
“আমাদের আহ্বান থাকবে, ক্ষোভ থাকলে শান্তিপূর্ণভাবে যাতে প্রকাশ করে। মানুষের সভা সমাবেশ করার অধিকার রয়েছে। যদি কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, তারা আইনগত পদক্ষেপ নিতে পারে,” সাংবাদিকদের বলেন মি. ইসলাম।
নিরাপত্তা জোরদার
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ের নিরাপত্তায় সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র এবং তথ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
ঢাকা, রাজশাহী ও বগুড়া জেলার পুলিশ কর্মকর্তারাও বিবিসিকে নিশ্চিত করেছেন যে, গণমাধ্যম কার্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশনা তারা পেয়েছেন।
“ইতোমধ্যেই আমরা প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ের সামনে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করেছি। সঙ্গে সেনা সদস্যরাও রয়েছে,” বিবিসি বাংলাকে বলেন তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবারক হোসেন।
বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টির একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
“তাদেরকে সঙ্গে কথা বলে আমরা কর্মসূচি তুলে নেওয়ার জন্য অনেক বুঝিয়েছি। এতে যে শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে এবং মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছে, সেটা বলেছি,” বলেন মি. হোসেন।
এতে কাজ হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।
“কাজ হয়েছে বলেই আজকে (মঙ্গলবার) নতুন করে তারা গণমাধ্যম কার্যালয়ের সামনে বসেনি,” বলেন তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মি. হোসেন।
অন্যদিকে, রাজশাহী ও বগুড়া জেলার পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, গণমাধ্যম কার্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি হামলাকারীদের গ্রেফতারে তৎপরতা শুরু করেছেন তারা।
যদিও মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত হামলাকারীদের কাউকে আটকের খবর পাওয়া যায়নি।
বাংলা স্কুপ/ডেস্ক/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স