ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫ , ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

​অবৈধ বালু উত্তোলনে গ্রামবাসীর ধাওয়া, ড্রেজারে আগুন

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ৩০-০৭-২০২৫ ০৩:৫২:৩২ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ৩০-০৭-২০২৫ ০৩:৫২:৩২ অপরাহ্ন
​অবৈধ বালু উত্তোলনে গ্রামবাসীর ধাওয়া, ড্রেজারে আগুন সংবাদচিত্র: সংগৃহীত
মুন্সীগঞ্জের সদর উপজেলার চরাঞ্চলের কালিরচর গ্রাম সংলগ্ন মেঘনা নদীর পাড় ঘেঁষে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় ফসলি জমি ও বসত ভিটা রক্ষায় গ্রামবাসী ধাওয়া দেয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা দুইটি ড্রেজারে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া একই দিন সদর বালুর মহালে উপজেলা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করে আব্দুর রহমান ও মো. জাকির নামে ড্রেজার শ্রমিককে আটক করেছে। পরে তাদের ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।  বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে জেলা সদরের আধারা ইউনিয়নের কালিরচর গ্রাম সংলগ্ন মেঘনা নদীতে গ্রামবাসী বালুদস্যুদের ধাওয়া দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা দুইটি ড্রেজারে আগুন ধরিয়ে দেয়। তবে এ ঘটনায় কেউ আহত হয়নি। 

কালিরচর গ্রামবাসীর দাবি, বালু মহালের নির্ধারিত স্থান ছেড়ে গ্রাম ঘেঁষে বালু উত্তোলন করায় ক্ষোভে আমরা এ কাজ করেছে। ওরা যেখানে বালু উত্তোলন করছে, তা আমাদের সম্পত্তি। নৌ-পথের ডাকাত কিবরিয়া মিজি, জিএস মনির ও কালিরচর গ্রামের বাচ্চু মেম্বার এখানে অবৈধ বালু উত্তোলন নেতৃত্ব দিয়েছে। একাধিক স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসনের দেওয়া মেঘনা নদীর ভাসানচর বালু মহালের ইজারাদারের লোকজন কয়েকদিন ধরেই গ্রাম ঘেঁষে বালু উত্তোলন করছিল। এতে গ্রামের নদী তীরবর্তী ফসলি জমি ও বসতভিটে ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দেয়। এ পরিস্থিতিতে গ্রামবাসীর মধ্যে ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করে। এতে আজ বুধবার সকালে গ্রামের লোকজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে গ্রাম ঘেঁষে বালু উত্তোলনে বাঁধা দিতে মহালে ছুটে যান। এক পর্যায়ে উত্তেজিত গ্রামবাসী দুইটি থেমে থাকা লোড ড্রেজারে আগুন ধরিয়ে দেয়।

ভাষানচর বালু মহালের ইজারাদার জিএস মনিরুজ্জামান মনির বলেন, আমরা বৈধ মহাল ইজারা নিয়েছি। আমাদের প্রশাসনের বুঝিয়ে দেওয়া স্থানে বালু উত্তোলন করছি। গ্রামবাসী অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা নদীর গভীরে উত্তোলন করলেও, তারা অবৈধ বালু উত্তোলন অপবাদ দিচ্ছে। ভুক্তভোগী কালিরচর গ্রামের বাসিন্দা খলিল মিজি (৬৫) এলাকাবাসী পক্ষ থেকে বলেন, বালুর মহাল ইজারা হয়েছে ভাসানচর মৌজায়। আর ওরা আমাদের কালিরচর মৌজায় বালু কাটছে। এখানে সর্বশেষ জরিপে নদী ঘেঁষা জমি রয়েছে। এখানে তিন ফসিল জমি রয়েছে। আর গ্রামবাসী জমি রক্ষায় প্রতিহত করছেন। যাতে বাপদাদার সম্পদ রক্ষা হয়।

কালিরচর গ্রামের বাসিন্দা রিনা বেগম বলেন, গ্রামের মানুষ অসহায়। বাড়িঘর ভেঙে গেলে কই গিয়া থাকব। যারা বালু কাটে তারা বড়, গ্রামের নিরীহ মানুষের কথা কেউ বলে না। আমরা এর প্রতিকার চাই। সদরের চরআব্দুল্লাহ নৌ-ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহবুব আলম বলেন, আমরা আজ সকালে ওই এলাকায় অভিযান করেছি। তাদের দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনিয়ম হলে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ কে এম হাসানুর রহমান বলেন, আমরা আজ বালুর মহালের স্থানীয়দের অভিযোগের বিষয় অভিযান পরিচালনা করি। এ সময় দুইজনকে আটক করা হয় এবং পরে দুই লাখ জরিমানা করে, তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কেউ আইন অমান্য করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন
 


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ