ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫ , ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টানা বৃষ্টিতে খুলনায় জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগে নগরবাসী

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ২৯-০৭-২০২৫ ০৩:৫৪:৫০ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২৯-০৭-২০২৫ ০৩:৫৪:৫০ অপরাহ্ন
টানা বৃষ্টিতে খুলনায় জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগে নগরবাসী সংবাদচিত্র: সংগৃহীত
টানা বৃষ্টি আর নাজুক ড্রেনেজ ব্যবস্থায় খুলনার বিভিন্ন সড়ক ও মহল্লা পরিণত হয়েছে জলাশয়ে। জলাবদ্ধতার কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে অফিসগামী মানুষ, স্কুলকলেজের শিক্ষার্থী এবং খেটে খাওয়া দিনমজুরদের।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার ওপর দিয়ে একটি নিম্নচাপ অতিক্রম করায় এবং দেশের ওপর দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় খুলনাসহ উপকূলীয় এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার বৃষ্টি হচ্ছে। খুলনা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) ভোর ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ১৩ মিলিমিটার এবং গতকাল সোমবার ভোর ৬টা থেকে আজ ভোর ৬টা পর্যন্ত ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, বর্তমান আবহাওয়ার প্রেক্ষিতে খুলনা অঞ্চলে আরও দুই-একদিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। বৃষ্টির কারণে নগরীর রয়েল মোড়, মর্ডান মোড়, পিটিআই, শান্তিধাম মোড়, নিরালা, খানজাহান আলী রোড, সোনাডাঙ্গা, নিউমার্কেটসহ বহু এলাকার সড়কে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। নগরীর মৌলভীপাড়ার বাসিন্দা শ্রমজীবী মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘ভোরে বের হইছি কাজে যাইতে। কিন্তু পানিতে পা ডুবাইয়া হাঁটা যায় না। কোথায় ড্রেন আর কোথায় কালভার্ট নাই বোঝার উপায় নাই। রাস্তার বের হলে ঝুঁকি।’

শিশু শিক্ষার্থী নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেক অভিভাবকও। শান্তিধাম এলাকার বাসিন্দা রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘সকালে মেয়েকে স্কুলে নিতে গিয়ে দেখি পুরো রাস্তায় হাঁটু সমান পানি। শেষ পর্যন্ত ফেরত আসতে হলো। এই সমস্যা প্রতিবছরই হয়, কিন্তু সমাধান হয় না।’
নগরীর পানি নিষ্কাশনের অন্যতম পথ লবণচরা খাল। কিন্তু সড়ক সংস্কার ও কালভার্ট নির্মাণের কারণে দীর্ঘদিন ধরে খালটির মুখ বন্ধ হয়ে আছে। এতে জমেছে আবর্জনা ও কচুরিপানা। একই অবস্থা মতিয়াখালি, ক্ষেত্রখালীসহ আরও অন্তত ১০টি খাল ও ড্রেনের।

২০১৯ সালে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) ৮২৩ কোটি টাকার একটি বৃহৎ ড্রেনেজ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছিল। যেখানে রয়েছে ৯টি খাল পুনঃখনন, ৮টি স্লুইস গেট, ড্রেন নির্মাণ, আউটলেট খনন, জমি অধিগ্রহণ ও তিনটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা। কিন্তু ২০২৩ সালে মেয়াদ শেষ হলেও প্রকল্পের অগ্রগতি আশানুরূপ হয়নি।

কেসিসির প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবির উল জব্বার বলেন, নগরবাসীর সমস্যা সমাধানে ড্রেনেজ প্রকল্প বাস্তবায়ন চলছে। তবে ২০১৩ সালে নেয়া প্রকল্পগুলোর নির্মাণসামগ্রীর দাম এখন দ্বিগুণ। নতুন বরাদ্দ ছাড়া অনেক কাজই সম্ভব হচ্ছে না। আমরা যত ড্রেন নির্মাণ করি, যদি নিয়মিতভাবে পরিষ্কার না হয়, তাহলে জলাবদ্ধতা কমবে না। নতুন একটি প্রকল্পে স্লুইস গেট ও পাম্প হাউস বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে, যা বাস্তবায়ন হলে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হতে পারে।

বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন
 


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ