ঢাকা , বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫ , ৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিরিয়া-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত : মার্কিন রাষ্ট্রদূত

ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় : ১৯-০৭-২০২৫ ১২:০৮:৫৯ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১৯-০৭-২০২৫ ০১:৩৬:৪৭ অপরাহ্ন
সিরিয়া-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত : মার্কিন রাষ্ট্রদূত ​সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে হামলার পর ধোঁয়া উড়ছে। ছবি: রয়টার্স
সিরিয়া ও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তুরস্কে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত টম ব্যারাক। সিরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সুয়াইদা প্রদেশে কয়েক দিনের বিমান হামলা ও জাতিগত সহিংসতার পর এ চুক্তি হলো। তবে এর মধ্যেই সুয়াইদা প্রদেশে দ্রুজ ও বেদুইন সম্প্রদায়ের মধ্যে ফের সংঘর্ষ শুরু হয়েছে, যা দিন দিন একটি মারাত্মক মানবিক সংকটে পরিণত হচ্ছে।

শনিবার (১৯ জুলাই) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয, শনিবার ভোরে টম ব্যারাক এক্স (সাবেক টুইটার)-এ পোস্ট করে জানান, এ যুদ্ধবিরতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে এবং তুরস্ক, জর্ডানসহ সিরিয়ার অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলোর সহযোগিতায় কার্যকর হয়েছে।

তিনি সকল পক্ষকে—দ্রুজ, বেদুইন, সুন্নি এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের—অস্ত্র ত্যাগ করে একটি ঐক্যবদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ সিরিয়ার পরিচয় গঠনের আহবান জানান।

যদিও এখনো সিরিয়া বা ইসরায়েলের সরকারিভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানান, সুয়াইদার চলমান অস্থিরতার প্রেক্ষিতে তারা ৪৮ ঘণ্টার জন্য সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীকে ওই অঞ্চলে সীমিত প্রবেশাধিকার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এর আগে বুধবার (১৬ জুলাই) ইসরায়েল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে অবস্থিত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সুয়াইদা অঞ্চলে সিরিয়ান সরকারি বাহিনীর ওপর ভারী বিমান হামলা চালায়।

ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা সুয়াইদায় বসবাসরত সংখ্যালঘু দ্রুজ জনগোষ্ঠীকে রক্ষার জন্য এ হামলা চালিয়েছে। সেখানে দ্রুজ ও বেদুইন গোষ্ঠীর মধ্যে জাতিগত সহিংসতা এবং সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে শত শত মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সিরিয়ার প্রায় এক মিলিয়ন দ্রুজ এবং ইসরায়েলে বসবাসকারী ১.৫ লাখ দ্রুজকে ‘ভাই’ বলে উল্লেখ করেছেন।

বুধবারই যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক এবং আরব দেশগুলোর মধ্যস্থতায় সিরিয়ার সরকার ও দ্রুজ নেতাদের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। কিন্তু একই দিন ইসরায়েল সিরিয়ার বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে কমপক্ষে তিনজনকে হত্যা ও ৩৪ জনকে আহত করে।

এর প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) ভোরে সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারাআ এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, ‘দেশের দ্রুজ জনগণ এবং তাদের অধিকার রক্ষা করা আমাদের অগ্রাধিকার। আমরা ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ চাই না, তবে প্রয়োজনে যুদ্ধ করতে ভয় পাই না।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েল আমাদের দেশকে টুকরো করে দেয়ার যে চেষ্টা করছে, তা আমরা ব্যর্থ করে দেব।

এরইমধ্যে শুক্রবার (১৮ জুলাই) ফের সুয়াইদায় দ্রুজ ও বেদুইন গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করেছে।

প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারাআ ঘোষণা দেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে একটি ‘বিশেষায়িত বাহিনী’ সুয়াইদায় পাঠানো হবে। সূত্রের বরাতে এপি জানায়, সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুজ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে ফের বাহিনী প্রবেশের চুক্তি হলেও, তা বাস্তবায়ন বিলম্বিত হয়েছে।

জাতিসংঘ জানায়, সুয়াইদা ও দারা প্রদেশে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ ইতিমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। বিদ্যুৎ, পানি, ইন্টারনেট ও খাদ্য সরবরাহ ভেঙে পড়েছে। সড়ক ও রসদপথ বন্ধ থাকায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানো যাচ্ছে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা শুধু দারায় ট্রমা কেয়ার সরঞ্জাম পাঠাতে পেরেছে, কিন্তু সুয়াইদায় এখনো প্রবেশ করা যায়নি।

বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এআর/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ