ঢাকা , শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫ , ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

​ফেনীতে বন্যা, পানিবন্দি লাখো মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ১০-০৭-২০২৫ ১১:১৪:৫৬ পূর্বাহ্ন
আপডেট সময় : ১০-০৭-২০২৫ ০১:১১:২৫ অপরাহ্ন
​ফেনীতে বন্যা, পানিবন্দি লাখো মানুষ সংবাদচিত্র: সংগৃহীত
ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় টানা ভারী বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে সৃষ্টি বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লাখো মানুষ। মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর অন্তত ২০টি স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় প্লাবিত হয়েছে ৩০টির বেশি গ্রাম।

বন্যাকবলিত এলাকাগুলোয় পানিবন্দি মানুষের মাঝে ইতিমধ্যেই খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিয়েছে। সাথে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে মোবাইলে যোগাযোগও ব্যহত হচ্ছে। বহু স্থানে সরকারি সহায়তা পৌঁছেনি। ফুলগাজীর দেড়পাড়া, দৌলতপুর, গাইনবাড়ি, নাপিতকোনা ও উত্তর শ্রীপুর এবং পরশুরামের শালধর, অলকা, জঙ্গলঘোনা ও দানিয়ালপুরসহ অন্তত ৩০টি গ্রাম পানির নিচে। হঠাৎ পানি বাড়ায় ঘরবাড়ি ছেড়ে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু জায়গা বা অন্যের বাড়িতে। গাইনবাড়ির আছমা আক্তার বলেন, “রাতেই পানি ঢুকে যায় ঘরে। খাবার নেই, পানিও বিশুদ্ধ না।” নাপিতকোনার জাহানারা বেগম বলেন, “আমরা নিজেরা বাঁধ বাঁচানোর চেষ্টা করেছি, কাজ হয়নি। এখন প্রতিবেশীর বাড়িতে আছি, খাবার-পানির কষ্টে আছি।”

ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহিয়া আক্তার বলেন, “এই বন্যায় অন্তত ৭৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন ১ হাজার ২০০ জন। বিতরণ করা হয়েছে শুকনো খাবার, স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট। রান্না করা খাবারও দেওয়া হচ্ছে।” পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান বলেন, “১৫টি গ্রাম প্লাবিত। আশ্রয়কেন্দ্রে ৩ হাজার, আর পানিবন্দি অন্তত ৭ হাজার মানুষ। শালধরে ১৫টি পরিবারের ঘরবাড়ি পুরোপুরি বিলীন হয়ে গেছে।”

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, “মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজানে বৃষ্টি বন্ধ হলে ভাঙন বাড়ার আশংকা কমবে।” অন্যদিকে উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম জানান, বুধবার রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। পানি কমলে বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হবে।

জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, “ফুলগাজী ও পরশুরামে দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। রান্না করা খাবারও দেওয়া হচ্ছে।” আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (৮ জুলাই সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৯ জুলাই সন্ধ্যা ৬টা) পর্যন্ত জেলায় ৮২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে বুধবার থেকে বৃষ্টি কিছুটা কমেছে, এতে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে যাচ্ছে।

বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন/


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ