জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চার শীর্ষ কর্মকর্তাকে অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। বুধবার (২ জুলাই) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের পৃথক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

অবসরে পাঠানো কর্মকর্তারা হলেন- এনবিআরের তিন সদস্য হোসেন আহমেদ, মো. আলমগীর হোসেন, মো. আবদুর রউফ এবং বরিশাল কর অঞ্চলের কমিশনার শব্বির আহমেদ।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কর) হিসেবে তাদের চাকরিকাল ২৫ (পঁচিশ) বছর পূর্ণ হয়েছে এবং যেহেতু সরকার জনস্বার্থে তাকে সরকারি চাকরি থেকে অবসর দেওয়া প্রয়োজন বলে বিবেচনা করেছে, যেহেতু সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে তাদের সরকারি চাকরি থেকে অবসর দেওয়া হলো। তারা বিধি অনুযায়ী অবসরজনিত সুবিধাদি প্রাপ্য হবেন।

অন্যদিকে, বরিশালে চলতি দায়িত্বে থাকা কর কমিশনার মো. শব্বির আহমদের চাকরিকালও ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। তাকেও একই ধারায় এবং একই বিবেচনায় বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

যদিও প্রজ্ঞাপনে কোনো ধরনের কারণ উল্লেখ করা হয়নি, তাতে শুধু ‘জনস্বার্থে’ সরকারি চাকরি থেকে অবসরের কথা বলা হয়েছে। তবে এনবিআর সংস্কারবিরোধী অবস্থানকেই এর পেছনের বড় কারণ হিসেবে দেখছেন অনেকে

জানা গেছে, অবসরে পাঠানো চার কর্মকর্তা সম্প্রতি এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত আন্দোলনের সমর্থক ছিলেন। 

এর আগে, মঙ্গলবার (১ জুলাই) চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. জাকির হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি সম্প্রতি এনবিআর কর্মকর্তাদের নিয়ে ধর্মঘট করে দাপ্তরিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটান। বরখাস্তের পর তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) সংযুক্ত করা হয়েছে। 

এছাড়া, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ১১ এনবিআর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে।

এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের আহ্বানে গত ২৮ ও ২৯ জুন দেশব্যাপী ধর্মঘট ও কর্মবিরতিতে যান এনবিআর কর্মকর্তারা। এতে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে বড় ধরনের অচলাবস্থা দেখা দেয়।

আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে ছিল এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ, কর সংস্কার সুপারিশ প্যানেলে তাদের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা এবং 'প্রতিশোধমূলক বদলি'র অবসান।

বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এসকে