ছাত্রদল নেতা জনি হত্যা
সাবের হোসেন চৌধুরীসহ ৬২ জনের নামে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
২৯-০৬-২০২৫ ১২:৫০:২৪ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২৯-০৬-২০২৫ ০২:২০:১৫ অপরাহ্ন
ছাত্রদল নেতা নুরুজ্জামান জনি, সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী ও ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিঞা। ফাইল ছবি
ছাত্রদল নেতা নুরুজ্জামান জনিকে অপহরণ, গুম করে ক্রসফায়ারে হত্যার অভিযোগে আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিঞাসহ ৬২ জনকে আসামি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ জমা দিয়েছে বিএনপি। রোববার (২৯ জুন) সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ অভিযোগ জানান বিএনপির মামলা ও সমন্বয় প্রধান সালাহউদ্দিন খান। গণমামাধ্যমকে সালাহউদ্দিন খান বলেন, ২০১৫ সালে জনি জেলখানায় যায় এক বন্ধুকে দেখতে। সেখান থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। পরে গুম করে রেখে ২দিন পর ১৬ টি গুলি করে ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হত্যা করে। বাদী এখন পর্যন্ত এ মামলার সুরাহা করতে পারেনি। ফলে তারা ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দিয়েছে। দ্রুত ন্যায় বিচার পাবে আশা তাদের।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের ১৯ জানুযারি সকাল আনুমানিক ৮টা ১৫ মিনিটের দিকে নুরুজ্জামান জনি ও তার সহপাঠী মইনসহ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ছোট ভাই মনিরুজ্জামান হীরাকে দেখতে যান। কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফেরার পথে আসামিরা জনি ও মইনকে ডিবি পরিচয় দিয়ে অবৈধভাবে আটক করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে নির্যাতন চালায়। পরে তাদের ডিবি ঢাকা মেট্রোপলিটন দক্ষিণ কার্যালয়ে নিয়েও নির্যাতন চালানো হয়। তখন নুরুজ্জামান জনির সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মুনিয়া পারভিনসহ আত্মীয়স্বজনরা খিলগাঁও থানা, ডিবি দক্ষিণ অফিস, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অফিসসহ বিভিন্ন থানায় হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়ান। আসামিরা জনিকে আটক করেননি বলে জানান। দুদিন ধরে খোঁজাখুঁজি করার পরও জনির কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
২০ জানুয়ারি রাত আনুমানিক ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার দিকে খিলগাঁও থানার জোড়াপুকুর খেলার মাঠের আশপাশের মানুষজন চিৎকার শুনতে পান। নির্যাতিত ব্যক্তিটি ‘পানি পানি’ বলে চিৎকার ও ‘মা মা’ বলে আর্তনাদ করতে থাকেন।ঘটনাস্থলের এলাকার পাশে সি-ব্লকের বাসিন্দা লাভলী বেগম ওই রাতের কান্নার শব্দ শুনেছেন বলে জানান। এ-ব্লকের বাসিন্দা সাইফুদ্দিনের স্ত্রী সানজিদা আক্তার সেতু জানান, রাত ৩টার দিকে ‘ও মাগো, মা, মা.. বাঁচাও’ বলে কয়েকবার চিৎকার শুনেছেন।ভোর রাতে বাদীসহ সাক্ষী ও প্রতিবেশীরা খিলগাঁও থানার জোড়াপুকুর মাঠের দিকে গিয়ে পুলিশের উপস্থিতি দেখতে পান। আসামিরা বলেন যে, নুরুজ্জামান জনি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। তার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।
বাদী ও সাক্ষীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে যান এবং সেখানে গিয়ে দেখতে পান নুরুজ্জামানের বুকের বামে, ডান দিকে, দুই হাতের তালুতে ১৬টি গুলির চিহ্ন। তার পুরো শরীর গুলিতে ঝাঁঝরা করে ফেলেছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। উপস্থিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জিজ্ঞাসা করলে তারা কর্কশ ভাষায় গালিগালাজ করেন। মরদেহ গ্রহণ না করলে মামলা দেওয়ার হুমকি দেন।
বাংলাস্কুপ/ প্রতিবেদক/এনআইএন
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স